• বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১২ ১৪৩১

  • || ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

আজকের টাঙ্গাইল

শেখ হাসিনার জন্মই সোনার বাংলা বিনির্মাণের সফলতা

আজকের টাঙ্গাইল

প্রকাশিত: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২০  

আজ ২৮ সেপ্টেম্বর, বাংলাদেশের সফল রাষ্ট্রনায়ক দেশরত্ন শেখ হাসিনার ৭৪ তম শুভ জন্মদিন। ১৯৪৭ সালের এই দিনে বাংলাদেশ সরকারের সফল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছার জ্যেষ্ঠ কন্যা এবং বর্তমান বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি।
 
দাদা শেখ লুৎফর রহমান ও দাদি সাহেরা খাতুনের অতি আদরের নাতনি শেখ হাসিনার শৈশব-কৈশোর কেটেছে মধুমতি নদীর তীরবর্তী গ্রাম টুঙ্গিপাড়ায়। 
 
বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে উজ্জ্বল এক নক্ষত্রের নাম শেখ হাসিনা। তিনি অত্যন্ত ধার্মিক, গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক, আপসহীন, দৃঢ়চেতা, মমতাময়ী ও  দূরদৃষ্টিসম্পন্ন প্রধানমন্ত্রী। সব ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে আজ চৌকস এক রাষ্ট্রনায়কে পরিণত হয়েছেন তিনি। দেশ পরিচালনা করছেন দৃঢ়তা ও সাহসের সঙ্গে। তিনি তিন বার সফলতা ও দক্ষতার সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে রাষ্ট্র পরিচালনা করে বর্তমানে চতুর্থবারের মতো গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রীর গুরুদায়িত্ব পালন করছেন। ইতোমধ্যেই নানা বাধা-বিপত্তি মোকাবেলা করে যুদ্ধাপরাধী, জঙ্গি ও সন্ত্রাসীদের আইনের আওতায় এনে তাদের বিচার করতে সক্ষম হয়েছেন। তিনি এখন পরিণত হয়েছেন বিশ্বনেতায়।
 
শেখ হাসিনার শিক্ষাজীবন শুরু হয়েছিল টুঙ্গিপাড়ার এক পাঠশালায়। ১৯৫৪ সালের নির্বাচনে বঙ্গবন্ধু প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হয়ে সপরিবারে ঢাকায় চলে আসেন। পুরনো ঢাকার রজনী বোস লেনে ভাড়া বাসায় ওঠেন তাঁরা । বঙ্গবন্ধু যুক্তফ্রন্ট মন্ত্রিসভার সদস্য হলে সপরিবারে ৩ নম্বর মিন্টু রোডের বাসায় তারা বসবাস শুরু করেন। শেখ হাসিনাকে ঢাকা শহরে টিকাটুলির নারী শিক্ষা মন্দিরে ভর্তি করা হয়। শুরু হয় তাঁর শহরজীবন। তিনি ১৯৬৫ সালে আজিমপুর বালিকা বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক, ১৯৬৭ সালে ইন্টারমিডিয়েট গার্লস কলেজ (বর্তমান বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা মহাবিদ্যালয়) থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় পাস করেন। ওই বছরেই তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে অনার্সে ভর্তি হন।
 
রাজনৈতিক পরিবারে জন্মগ্রহণ করায় কিশোর বয়স থেকেই তাঁর রাজনীতিতে পদচারণা। স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের নেত্রী হিসাবে তিনি আইয়ুব-বিরোধী আন্দোলন এবং ৬ দফা আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন। ১৯৬৬ সালে বঙ্গবন্ধু উত্থাপিত ৬-দফা দাবিতে তদানীন্তন পূর্ব পাকিস্তানে এক অভূতপূর্ব জাতীয় জাগরণ সৃষ্টি হয়। শাসকগোষ্ঠী ভীত-সন্তস্ত্র হয়ে বঙ্গবন্ধুকে গ্রেফতার করে। শুরু হয় প্রচ- দমন-নির্যাতন। আটক থাকা অবস্থাতেই বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী দায়ের করে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা। তাঁর জীবন ও পরিবারের ওপর নেমে আসে গভীর শঙ্কা ও দুঃসহ দুঃখ-কষ্ট। এই ঝড়ো দিনগুলিতেই, কারাবন্দি পিতা বঙ্গবন্ধুর আগ্রহে পরমাণু বিজ্ঞানী ড. এম. এ ওয়াজেদ মিয়ার সাথে শেখ হাসিনার বিয়ে হয় ১৯৬৮ সালে। বিয়ের কিছুদিন পর শুরু হয় ১১-দফা আন্দোলন, ৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান। শেখ হাসিনা ছাত্রলীগ নেত্রী হিসেবে তাতে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন।
 
১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে বঙ্গবন্ধুকে গ্রেফতার করে পাকিস্তানের করাচিতে নিয়ে যাওয়ার পর গোটা পরিবারকে ঢাকায় ভিন্ন এক বাড়িতে গৃহবন্দী করে রাখা হয়। অবরুদ্ধ বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ১৯৭১ সালের ২৭ জুলাই শেখ হাসিনা গৃহবন্দী অবস্থায় তাঁর প্রথম সন্তান ‘জয়’-এর মা হন। ১৯৭২ সালের ৯ ডিসেম্বর কন্যা সন্তান পুতুলের জন্ম হয়। 
 
দেশ স্বাধীন হবার পর ১৯৭৩ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে অনার্সে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন।
 
১৯৭৫ সালে সপরিবারে বঙ্গবন্ধু নিহত হবার আগে ছোট বোন শেখ রেহানাসহ শেখ হাসিনা ইউরোপ যান। সেখানে অবস্থানকালে তিনি সপরিবারে বঙ্গবন্ধুর নিহত হবার খবর পান। তাৎক্ষণিকভাবে দেশে ফেরার কোনো পরিবেশ না থাকায় তিনি ইউরোপ ছেড়ে স্বামী-সন্তানসহ ভারতে রাজনৈতিক আশ্রয় নেন।
 
১৯৮১ সালের ১৩ থেকে ১৫ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে তাঁকে দলের সভাপতি নির্বাচিত করা হয়। আর ঐ বছরেরই ১৭ মে দীর্ঘ ৬ বছরের প্রবাস জীবনের অবসান ঘটিয়ে প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশে ফিরে আসেন এবং ১৯৮৬ সালের সংসদ নির্বাচনে তিনি তিনটি আসন থেকে নির্বাচিত হন। 
 
এরপর ১৯৯০ সালের ঐতিহাসিক গণআন্দোলনে তিনি নেতৃত্ব দেন। ১৯৯১ সালের সংসদ নির্বাচনের পরে তিনি পঞ্চম জাতীয় সংসদের বিরোধী দলের নেতা নির্বাচিত হন। 
 
১৯৯৬ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন পেয়ে সরকার গঠন করে এবং সে বছরের ২৩ জুন প্রথমবারের মত দেশের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
 
১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সাথে পার্বত্য চুক্তি সম্পাদনের মাধ্যমে ২৫ বছরের দীর্ঘ বিদ্রোহের অবসান ঘটান। 
 
২০০১ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়লাভ করে তিনি সপ্তম জাতীয় সংসদে দ্বিতীয় দফায় বিরোধীদলের নেতা নির্বাচিত হন। এরপর আসে সেই ভয়াল ২১ আগস্ট। ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে আওয়ামী লীগের জনসভায় গ্রেনেড নিক্ষেপ করে তাঁকে হত্যার চেষ্টা চালানো হয়। তিনি অলৌকিকভাবে বেঁচে গেলেও ওই হামলায় ২৪ জন নিহত এবং পাঁচশ’ নেতা-কর্মী আহত হন।
 
বিএনপি-জামাতের দুঃশাসনের পর ২০০৮ সালে ক্ষমতায় আসে তত্ত্বাবধায়ক সরকার। এই তত্ত্বাবধায়ক সরকার শেখ হাসিনাকে আওয়ামীলীগের নেতৃত্ব থেকে সরাতে তৎপর হয়। তাকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফিরতে বাঁধা দিতে শুরু করে। তারপরও সমর্থকদের বিপুল বিক্ষোভের মুখে তাদের উদ্দেশ্য হাসিলে ব্যর্থ হয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার। ঐ সরকার তার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে আওয়ামী লীগের প্রতি মানুষের বিতৃষ্ণা জাগিয়ে তোলারও চেষ্টা চালায়। ২০০৭ সালের ১৬ জুলাই মিথ্যা চাঁদাবাজির অভিযোগে তাঁকে গ্রেফতার করে।
 
কিন্তু, মিথ্যা মামলায় তার মত রাষ্ট্র নেতাকে আটকে রাখা যায় না। তাইতো, তারই নেতৃত্বে ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দুই-তৃতীয়াংশের বেশি আসন নিয়ে বিশাল বিজয় অর্জন করে এবং এই বিজয়ের মধ্যদিয়ে শেখ হাসিনা দ্বিতীয় বারের মতো বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন। পরবর্তীতে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারী সংসদ নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে তৃতীয়বারের মত সফলতার সাথে দেশ পরিচালনা করেন এবং গত ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও বিজয়ী হয়ে চতুর্থবারের মত বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন বর্তমানে।
 
অতি সম্প্রতি তিনি মায়ানমার সরকারের ভয়াবহ নির্যাতনে আশ্রয়হীন ৮ লক্ষাধিক রোহিঙ্গা শরণার্থীকে বাংলাদেশে আশ্রয় দিয়ে নাড়িয়ে দিয়েছেন গোটা বিশ্বকেই। পুনরুজ্জীবিত করেছেন সারা বিশ্বের মৃতপ্রায় মানবতাকে।
 
শেখ হাসিনা ঐ সময় বলিষ্ঠকন্ঠে বলেছিলেন, ‘আমরা যদি ১৬ কোটি যদি খাওয়াতে পারি তাহলে ৭ লক্ষ রোহিঙ্গা শরনার্থীকেও খাওয়াতে পারব’। তিনি এমন একটা সময় এই বাক্যটি উচ্চারণ করেছিলেন যখন সারা বিশ্বেই শরণার্থী ইস্যুতে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছিল উন্নত দেশগুলো, যখন রোহিঙ্গা শরনার্থীদের খাবার ও সাহায্যের তীব্র অভাব প্রকট হয়ে উঠেছিল।    
 
এর পরপরই জনগণ তার উদারতা এবং একবিংশ শতাব্দীর সবচেয়ে বড় শরনার্থী সংকটে তার বলিষ্ঠ এবং সাহসী পদক্ষেপের জন্য তাঁকে ‘মাদার অফ হিউম্যানিটি’ উপাধিতে ভূষিত করে।  
 
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে আজ এক অন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছেন। তিনি একমাত্র বাঙালি বধূ যিনি সরকার পরিচালনায় দক্ষতার সাক্ষর রেখেছেন। বিশ্বকে তাক লাগিয়ে সীমিত সম্পদের সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন দুর্বার গতিতে। 
 
ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ, যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন, বিদ্যুৎ সমস্যার সমাধান, বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ বৃদ্ধি, জিডিপির লক্ষ মাত্রা উন্নয়ন, সমুদ্র বিজয়, ৬৮ বছরের ছিটমহল সমস্যার সফল সমাধান, আইনের শাসন নিশ্চিত করণ, দুর্নীতি দমনের মাধ্যমে সুশাসন নিশ্চিত করা, জঙ্গি ও সন্ত্রাসীদের আইনের আওতায় আনা, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করা, বাল্য বিবাহ ও মাতৃমৃত্যুর হার কমানো, ব্যবসা বান্ধব পরিবেশ সৃষ্টি, জলবায়ুর প্রভাব মোকাবেলা, ডিজিটাল বাংলাদেশ নির্মাণ, অবাধ তথ্য-প্রবাহের দুয়ার উন্মোচন, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা, খাদ্য নিরাপত্তা, শিক্ষা ও চিকিৎসা সেবায় অভাবনীয় সাফল্যের ফলে বাংলাদেশ আজ বিশ্বের রোল মডেল। 
 
তাঁর নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ গৌরবের আসনে অধিষ্ঠিত। তাঁর শাসনামলে ১৯৯৭ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বোস্টন ইউনিভার্সিটি থেকে ডক্টর অফ ল ডিগ্রি; ৪ জুলাই জাপানের ওয়াসেদা ইউনিভার্সিটি থেকে অনারারি ডক্টর অফ ল ডিগ্রি এবং ২৫ অক্টোবর স্কটল্যান্ডের ডান্ডির ইউনিভার্সিটি অফ এবারটে থেকে তিনি লিবারেল আর্টসে অনারারি পিএইচডি অর্জন করেন। একই সালে ভারতের নেতাজী সুভাষ চন্দ্র পদক এবং রোটারি ফাউন্ডেশন কর্তৃক পল হ্যারিস ফেলো মর্যাদা লাভ করেন। 
 
পার্বত্য চট্টগ্রামে সুদীর্ঘ ২৫ বছরের গৃহযুদ্ধ অবসানের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখায় ১৯৯৮ সালে ইউনেস্কোর ফেলিক্স হোফে-বোইনি শান্তি পদকে ভূষিত হন। ১৯৯৮ সালে সর্বভারতীয় শান্তি পরিষদের মাদার তেরেসা পদক এবং বাংলাদেশে তৃণমূল পর্যায়ে ধর্মীয় সম্প্রীতি ও গণতন্ত্র প্রসারে অবদানের জন্য নরওয়ের অসলোর মহাত্মা মোহনদাস  করমচাঁদ গান্ধী ফাউন্ডেশন কর্তৃক এম কে গান্ধী পদক প্রাপ্ত হন। লায়ন্স ক্লাব ইন্টারন্যাশনালের মডেল অফ ডিস্টিংশন ১৯৯৬-৯৭ এবং ১৯৯৮-৯৯, হেড অফ স্টেট মডেল ১৯৯৬-৯৭’র গৌরব অর্জন করেন। 
 
২৮ জানুয়ারি ১৯৯৯ তারিখে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনারারি ডিগ্রি ‘দেশিকোত্তম’ (ডক্টর অফ লিটারেচার) অর্জন করেন। ক্ষুধার বিরুদ্ধে আন্দোলনের অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (ফাও)-এর সেরেস মেডেল ১৯৯৯, অস্ট্রেলিয়ান ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ডক্টর অফ ’ল এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনারারি ডক্টর অফ ’ল অর্জন করেন। ২০০০ সালে আাফ্রো-এশিয়ান লইয়ার্স ফেডারেশনের পার্সন অব দ্য ইয়ার মনোনীত হন। 
 
২০০০ সালের ৫ সেপ্টেম্বর তারিখে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কানেক্টিকাট অঙ্গরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অব ব্রিজপোর্ট থেকে অনারারি ডক্টর অফ হিউম্যান লেটার্স নির্বাচিত হন। ওই বছরের ৯ এপ্রিল  রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও মানবাধিকারের ক্ষেত্রে সাহসিকতা ও দূরদর্শিতার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়ার র‌্যানডষ্ফ-ম্যাকন ওম্যান’স কলেজ থেকে পার্স এস বাক পদক অর্জন করেন। 
 
২০০৫ সালে ইন্টারন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন অব লায়ন্স ক্লাবের মেডাল অব মেরিট পদক প্রাপ্ত হন। ২০০৯ সালে ভারত সরকার ইন্দিরা গান্ধী পদক প্রদান করেন। 
 
২০১০ সালে শিশুমৃত্যুর হার কমানোর ক্ষেত্রে সাফল্যের স্বীকৃতি স্বরূপ জাতিসংঘের এমডিজি পদক অর্জন করেন। এ বছরের ৮ মার্চ বিশ্ব নারী দিবসের শতবর্ষে পদার্পণ উপলক্ষে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বিশ্বখ্যাত সংবাদ সংস্থা সিএনএন ক্ষমতাধর ৮ এশীয় নারীর তালিকা প্রকাশ করেছিল। উক্ত তালিকায় ষষ্ঠ অবস্থানে ছিলেন শেখ হাসিনা।
 
২০১১ সালে গণতন্ত্র সুসংহতকরণে প্রচেষ্টা ও নারীর ক্ষমতায়নে অবদান রাখার জন্য ফ্রান্সের দোফি বিশ্ববিদ্যালয় তাঁকে স্বর্ণপদক প্রদান করেন। ওই বছরই বিশ্ব মহিলা ও শিশু স্বাস্থ্য উন্নয়নে অবদানের জন্য জাতিসংঘ ইকনোমিক কমিশন ফর আফ্রিকা; জাতিসংঘে এন্টিগুয়া-বারমুডার স্থায়ী মিশন, আন্তর্জাতিক টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়ন ও সাউথ-সাউথ নিউজের সাউথ-সাউথ পদক এবং বাংলা একাডেমি ফেলোশিপ অর্জন করেন।  শেখ হাসিনা ২০১১ সালে বিশ্বের সেরা প্রভাবশালী নারী নেতাদের তালিকায় ৭ম স্থানে ছিলেন। তার পূর্বে এবং পশ্চাতে ছিলেন যথাক্রমে লাইবেরিয়ার প্রেসিডেন্ট অ্যালেন জনসন সার্লেফ এবং আইসল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জোহানা সিগার্ডারডটির । যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক নিউ ইয়র্ক টাইমস সাময়িকীর জরিপে বিশ্বের সেরা প্রভাবশালী ও ক্ষমতাধর নারী নেতৃত্বের ১২জনের নাম নির্বাচিত করে।
 
২০১২ সালের জানুয়ারিতে ভারতের ত্রিপুরা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডক্টর অফ লিটারেচার এবং ওই বছর বাংলাদেশে সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য রক্ষা ও সাংস্কৃতিক কার্যক্রম এগিয়ে নিতে বিশেষ অবদানের জন্য ইউনেসকোর কালচারাল ডাইভারসিটি পদক অর্জন করেন। নারীর ক্ষমতায়ন এবং নারীশিক্ষার প্রতি তাঁর অঙ্গীকারের জন্য ২০১৪ সালে ইউনেস্কোর পিস ট্রি পুরস্কার এবং ২০১৫ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর জলবায়ু পরিবর্তনের ওপর নেতৃত্বের জন্য জাতিসংঘের চ্যাম্পিয়ন্স অফ দি আর্থ পুরস্কার প্রাপ্ত হন।
 
২০১৫ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর ইন্টারন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়ন (আইটিইউ) আইসিটি সাসটেইনএবল ডেভেলপমেন্ট অ্যাওয়ার্ড অর্জন করেন। বাংলাদেশে কমিউনিটি রেডিও প্রবর্তনে তাঁর চিরোজ্জ্বল অবদানের অন্যন্য আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি স্বরূপ জাতিসংঘের তথ্যসমাজ বিষয়ক বিশ্বসম্মেলন পুরস্কার ২০১৬ অর্জন করেছে বাংলাদেশ। লিঙ্গ সমতা ও নারীর ক্ষমতায়নে বিশেষ অবদানের জন্য ‘প্লানেট ৫০-৫০ চ্যাম্পিয়ন’  ও ‘এজেন্ট অব চেঞ্জ অ্যাওয়ার্ড’ পুরস্কার অর্জন করেন।
 
বিশ্বের স্বনামধন্য অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে তাঁর পরিবেশ বিষয়ক নীতি নির্ধারণ, শন্তি প্রতিষ্ঠা, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার এবং আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখায় সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি প্রদান করেছেন। এ পর্যন্ত কমপক্ষে ১৩টি সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি লাভ করেছেন তিনি। 
 
শেখ হাসিনার জন্ম হয়েছিল বলে তিনি দুঃখিনী বাঙলার কৃষক, শ্রমিক, আপামর মেহনতি মানুষের নেতৃত্ব গ্রহণ করেছিলেন। ‘অন্ধকারের সিন্ধুতীরে একলাটি ওই মেয়ে/আলোর নৌকা ভাসিয়ে দিল আকাশ-পানে চেয়ে’ রবীন্দ্রকাব্যের এ চরণ দুটি প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার জন্য অনেকটা প্রযোজ্য। কারণ, তিনি যখন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব গ্রহণ করেন তখন ভগ্নহৃদয় নিয়ে আশাহীন, ভরসাহীন বাঙালির অর্থনৈতিক মুক্তির সংগ্রামের কথা মাথায় রেখেই বিপদসঙ্কুল - বন্ধুর পথটি বেছে নিয়েছিলেন। আজ বাংলাদেশসহ সমগ্র দক্ষিণ এশিয়ায় শান্তি প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছেন। 
 
আওয়ামী  লীগের ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব প্রসঙ্গে বঙ্গবন্ধুর কিছু কথা পাঠকদের জ্ঞাতার্থে তুলে ধরছি।  বিশিষ্ট সাংবাদিক আবদুল গাফফার চৌধুরী  আলাপচারিতার এক পর্যায়ে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কাছে আওয়ামী লীগের ভবিষ্যৎ নেতৃত্বের বিষয়ে জানার আগ্রহ প্রকাশ করলে বঙ্গবন্ধু বলেন, “আমার পরে কে তা নিয়ে আমি চিন্তাভাবনা করি না। এই দায়িত্ব পালন করবে ইতিহাস। আমার প্রবীণ ও নবীন সহকর্মীদের মধ্যে কে নিজের যোগ্যতা ও দক্ষতা দেখিয়ে দেশ এবং দলের হাল ধরবে তা আমি নিজেও জানি না। এমন হতে পারে, আমার প্রবীণ ও নবীন সহকর্মীরা যোগ্যতা এবং সাহসের পরীক্ষায় অনেকেই হেরে গেল; সেখানে ইতিহাস এমন একজনকে নেতার পদে তুলে এনেছে, যার কথা আমি কোনোদিন ভাবিনি; তোমরাও ভাবছ না। বাংলাদেশে ইতিহাস এই চমক সৃষ্টি করতে পারে।” শান্তির অগ্রদূত শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগের দায়িত্বভার গ্রহণের মধ্য দিয়ে বঙ্গবন্ধুর একথা প্রমাণ করলেন।
 
তথ্য সূত্র: উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন অনলাইন মিডিয়া।
আজকের টাঙ্গাইল
আজকের টাঙ্গাইল