• বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১২ ১৪৩১

  • || ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

আজকের টাঙ্গাইল

যার যার অবস্থান থেকে আন্তরিকতার সাথে সরকারকে সহযোগিতা করুন

আজকের টাঙ্গাইল

প্রকাশিত: ১ জুন ২০২০  

জনগণের অর্থ নয়ছয়  করা যাবে না,সকলকে যার যার দায়িত্ব যথাযথভাবে ন্যায় নিষ্ঠার সাথে পালন করতে হবে। সবাই আন্তরিকতার সাথে কাজ করলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এই সংকট কাটিয়ে উঠবো।

 

উন্নয়ন কার্যক্রমের কাজ থেমে গেলে জীবনের কাজও থেমে যাবে,- কাজ করতে হবে নব উদ্যমে,নতুন বাস্তবতায়,পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে। জনগণের কষ্টার্জিত অর্থ সবাইকে সৎব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।

 

মালিক শ্রমিক সংগঠনগুলো দেশ ও জাতির এই সংকটকালে মন্ত্রণালয়ের এই সিদ্ধান্ত মেনে নিবেন। সরকারকে যেমনি যাত্রীদের স্বার্থ দেখতে হবে তেমনি পরিবহন খাতকেও সহযোগিতা করতে হবে।

 

যে সকল প্রকল্প অগ্রাধিকার তালিকায় আছে সেসকল প্রকল্পের কাজ দ্রুত করতে হবে,দেশি বিদেশি শ্রমিকদের স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করে কাজ করতে হবে। শ্রমিকদের বেতন যেন যথাসময়ে দেওয়া হয় তাও নিশ্চিত করতে হবে

 

-বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের একটি ভিডিও বার্তায় উপরের কথাগুলো বলেন।

 

তিনি আরও বলেন,  মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীগন মোটামোটি সূস্থ্যই আছেন। সামনের দিনগুলি আরও কঠিন হবে। একদিকে নিজেদের সচেতনতা, সূস্থ্যতা অন্যদিকে অফিসের কাজ। এ মন্ত্রণালয় একটি উন্নয়নধর্মী মন্ত্রণালয়। উন্নয়ন কার্যক্রম থেমে গেলে জীবনও থেমে যাবে। তাই আমাদের কাজ করতে এখন নব উদ্যোমে, নতুন বাস্তবতায়, পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে। প্রথমে বলতে চাই, আমাদের বিগত প্রায় আড়াই মাসের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে হবে। বিএনপি’র কাজের প্রায়োরিটি নির্ধারন করতে হবে। এখন অপপ্রচার করার অর্থ আমাদের নেই। জনগনের কষ্টার্জিত অর্থের সর্বোচ্চ স্বদব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে আমাদের সকলকে। যে সকল প্রকল্প অগ্রাধিকার তালিকায় রয়েছে, সেগুলো দ্রুত শেষ করতে হবে। চলমান কাজ থামিয়ে রাখা যাবেনা। যে সকল প্রকল্প দুমাস ধরে বন্ধ ছিল, কাজ হয়নি, সে সবের কাজ নতুন করে শুরু করতে, আর যেসব কাজ সিমিত পর্যায়ে কাজ হয়েছে, যেমন মেট্রোরেল, সেগুলোকে এখন থেকে আরও গতি আনতে হবে। বসে থাকার সময় আমাদের নেই। মাঠ পর্যায়ের কাজ মনিটরিং করতে হবে নিবিরভাবে। বিভিন্ন প্রকল্পে দেশি-বিদেশী শ্রমিকরা কাজ করে, সেখানে স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতে হবে। শ্রমিকদের বেতন-ভাতাদি তথা পারিশ্রমিক যথা সময়ে যেন ঠিকাদাররা দিয়ে দেয়, সেই বিষয়টা প্রকল্প প্রধানদের দেখতে হবে। এটা অত্যন্ত আশাব্যঞ্জক যে, এডিবি বাস্তবায়ন হার জাতীয় গড়ের চেয়ে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগে বেশি, আমি এ ধারা বজায় রাখার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি। অনেক কর্মকর্তা দির্ঘদিন হয় এ মন্ত্রণালয়ে আছেন, তাদের পারফরম্যান্স কি দেখুন। আমরা ভালো কাজের জন্য পুরস্কিৃত করি। তেমনি খারাপ কাজের জন্য তিরস্কার করি। আমি সব সময় টিম ওয়ার্কের কথা বলি, স্ট্রং টিমওয়ার্ক গড়ে তুলতে হবে। সামনে বর্ষা, সড়ক ও জনপথকে এ বিষয়ে সজাগ থাকতে হবে। বিআরটিসি’র গাড়ি না চলায় আয়ের পথ বন্ধ ছিল, শ্রমিক কর্মচারীদের বেতনের সমস্যা দেখা দেয়, সরকারের সহায়তায় প্রাথমিক সমাধন হলেও সামনে কি করা যায়, সেটা গভিরভাবে ভাবতে হবে। আমি পর্যায়ক্রমে সকল দপ্তরের সাথে ভিডিও কন্ফারেন্স করবো। আমাদের সকলকে দেশ ও জনগনের প্রতি কমিটমেন্ট নিয়ে কাজ করতে হবে। কোন অনিয়ম সহ্য করা হবে না। কারও আর্থিক সমস্যা থাকলে গোপনে আমাকে জানাবেন, কিন্তু জনগনের অর্থ নয়-ছয় করা যাবে না। মনে রাখবেন আমরা এখন এক ধরনের যুদ্ধকালিন পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি, প্রজাতন্ত্রের প্রশিক্ষিত কর্মচারী হিসাবে এসময়ে আপনাদের নিজ নিজ দায়িত্ব নিষ্ঠা, সততা ও দেশ প্রেমের সাথে পালনের আহ্বান জানাচ্ছি।

 

গণপরিবহনের সম্বন্ধে যে ভাড়া সমন্বয়ের প্রস্তাব বিআরটিএ আলোচনা করে ঠিক করেছে, তার জনপ্রতিক্রিয়া কিন্তু নেতিবাচক। মালিকদের দাবির প্রেক্ষিতে মন্ত্রণালয় কিংবা বিআরটিএ হোমওয়ার্ক করতে পারিনি, বিকল্প প্রস্তাবও দেয়নি, পরে আমি মালিক সমিতির সাথে এবং শ্রমিক নেতাদের সাথে কথা বলে সমন্বয় করার চেষ্টা করি। এ সকল বিষয়ে পলিসি সাপোর্ট আপনাদের কাছ থেকেই প্রত্যাশা করি। সবাই আন্তরিকতার সাথে কাজ করুন, দেশরত্ন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা নিশ্চয় এ সংকট কাটিয়ে উঠবো ইনশাল্লাহ।

 

গণপরিবহন বিষয়ে আমি বলতে চাই, আপনারা জানেন সরকার গণপরিবহন চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সিমিত পরিসরে এবং স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে প্রতিপালন করে গাড়ি চালনায় বাস মালিকগন সর্বোচ্ছ সহযোগীতার করার আশ্বাস দিয়েছে সরকারকে। শর্তানুযায়ী বাসে অর্ধেক আসনে যাত্রী পরিবহন করা হবে। অর্ধেক আসন খালি থাকবে। এটা সত্য যে পরিবহনসমূহ দুই মাসের অধিক বন্ধ ছিল, দেশের অন্যন্য সকল খাতের সাথে এই খাতও ক্ষতিগ্রস্থ। সর্বশেষ ২০১৬ সালের মে মাসে দুর পাল্লার বাসের ভাড়া বাড়ানো হয়েছিল। আর ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরীতে চলমান বাস ও মিনিবাসের সর্বশেষ ভাড়া সমন্বয় করা হয়েছিল ২০১৫ সালে। সরকার জনস্বার্থ বিবেচনায় নিয়ে মালিকদের দাবির স্বত্বেও ভাড়া বাড়ানোর প্রস্তাবে অনুমোদন দেয়নি। যদিও ২০১৯ সালে এ বিষয়ে তৈরী হয়ে অপেক্ষামান রয়েছে। সেটা আমরা দেখবো, পরিস্থিতি স্বাভাবিক এ বিষয়ে আলাপ-আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেব। তবে এখন যে ভাড়া সমন্বয় করা হচ্ছে, এটা নিয়ে জনগনের বিরুপ প্রতিক্রিয়া আছে এবং আমি মনে করি এ বিষয়ে পরবর্তিতে যখন পরিস্থিতি বদলাবে, তখন এই ইস্যুটা পূনরায় স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে হবে। যা নিয়ে মানুষের সমালোচনা আছে, যা আগের অবস্থা আবারও স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসবে কিনা, সেটা নিয়ে যে সন্দেহ আছে তা অবশ্যই দুর করতে হবে। এখন দেশ জাতি এক সংকটকাল অতিক্রম করছে। আপনারা জানেন পরিবহনে ভাড়া বৃদ্ধি বা সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠন করছি। গতকাল বিআরটিএ তে যে কমিটি বাস ভাড়া সমন্বয়ের একটা সুপারিশ করেছে, যেহেতু অর্ধেক যাত্রী নিয়ে পরিবহন চলবে, জনস্বার্থ-জনস্বাস্থ্য বিবেচনায় তার উপর স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। যানবাহন ও টার্মিনাল জিবানুমুক্ত করার বিষয়ও জড়িত। নানান দিক পর্যালোচনা করে কমিটি ৮০ শতাংশ ভাড়া বৃদ্ধিপূর্বক সমন্বয়ের সুপারিশ করেছে। আমরা মনে করি দেশের জনগনের জন্য এটি বাড়তি চাপ তৈরী করবে। সরকারকে যেমন যাত্রীদের স্বার্থ দেখতে হবে, তেমনি পরিবহন খাতকেও সহযোগীতা করতে হবে। তাই জনগনের তথা যাত্রীদের এই মুহুর্তে আর্থিক সক্ষমতা বিবেচনা করে ভাড়া বৃদ্ধির প্রস্তাব যেটা ৮০ ভাগ করা হয়েছে, সেটা কমিয়ে যুক্তিসংগত একটি হার নির্ধারন করা হয়েছে। আমি মন্ত্রণালয় হতে কিছুক্ষন পর এ প্রজ্ঞাপন জারি করার নির্দেশনা দিচ্ছি। আশা করছি মালিক শ্রমিক সংগঠনগুলো দেশ ও জাতির এ সংকটে মন্ত্রণালয়ের এ সিদ্ধান্ত করোনাকালের জন্য মেনে নেবে। 

আজকের টাঙ্গাইল
আজকের টাঙ্গাইল