• শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৫ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

আজকের টাঙ্গাইল

মির্জাপুরে ৪ বছর আগে নিখোঁজ হওয়া গৃহবধূ সন্তানসহ বাড়ি ফিরলেন

আজকের টাঙ্গাইল

প্রকাশিত: ১০ অক্টোবর ২০২০  

চার বছর আগে নিখোঁজ গৃহবধূ পাঁচ মাসের এক শিশু পুত্রসহ ৪ অক্টোবর বাবার বাড়ি ফিরেছেন। ওই গৃহবধূ নিখোঁজ হওয়ার এক বছর পর তার অভিভাবক পাচারের অভিযোগে টাঙ্গাইল মানবপাচার ও প্রতিরোধ দমন অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মামলা করেন।

এই ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার উয়ার্শী ইউনিয়নের নগর ভাতগ্রাম গ্রামে। নিখোঁজ গৃহবধূর নাম মদিনা আক্তার (২৩)। তিনি ওই গ্রামের জলিল মোল্লার মেয়ে।


 
ঘটনার অভিযোগে নির্যাতন ও হয়রানির শিকার হয়েছেন একই গ্রামের ভ্যানচালক আকবর আলী। তার বিরুদ্ধে তিন বছর আগে মদিনার মা ছাহেরা বেগম মেয়েকে পাচারের অভিযোগে ট্রাইব্যুনালে মামলা করেন।

সরেজমিনে জানা গেছে, ২০১৩ সালে খৈলসিন্দুর গ্রামের মিনহাজ মোল্লার সঙ্গে মদিনা আক্তারের বিয়ে হয়। বিয়ের পর মিনহাজ সৌদি চলে যান। এর কয়েকদিন পর মদিনা ও মিনহাজের সঙ্গে ঝগড়া হয়। এরপর মদিনা বাবার বাড়ি গিয়ে বন্ধু চুলা নামক একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি নেন। কিছুদিন পর মদিনা নিখোঁজ হন।

পরে মদিনার বাবা জলিল মোল্লা ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরে মির্জাপুর থানায় মিনহাজ মোল্লাসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে মদিনাকে হত্যার পর মরদেহ গুমের অভিযোগ এনে মামলা করেন। এছাড়া ২২ সেপ্টেম্বর মিনহাজ তার স্ত্রীর চার ভরি স্বর্ণ, দেড় লাখ টাকা নিয়ে বাড়ি থেকে চলে যায় বলে থানায় জিডি করেন। এরপর মদিনার ছোট বোনকে মিনহাজের কাছে বিয়ে দেয়ার প্রস্তাবেরভিত্তিতে দুই পরিবারই মামলার কার্যক্রম থেকে বিরত থাকেন।


 
এদিকে মদিনার মা ছাহেরা বেগম পূর্বশত্রুতার জের ধরে ২০১৭ সালের ৭ সেপ্টেম্বর টাঙ্গাইলের মানবপাচার ও প্রতিরোধ দমন অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আকবর আলী ও তার পরিবারের সদস্যদের আসামি করে মামলা করেন।

পিবিআইয়ের উপপরিদর্শক খান মনিরুজ্জামান আদালতে দেয়া প্রতিবেদনে উল্লেখ করেন, মদিনাকে বন্ধু চুলায় চাকরি দেয়ার কথা বলে তুলে নিয়ে পাচারের কথা মামলায় উল্লেখ থাকলেও তার সত্যতা মেলেনি।

শুক্রবার আকবর আলী এই প্রতিবেদককে জানান, শ্বশুরবাড়ির জমি বিক্রি ও টাকা ধার করে মামলার পেছনে প্রায় সাড়ে তিন লাখ টাকা ব্যয় করেছি। জিজ্ঞাসাবাদের কথা বলে আমাকে শারীরিক নির্যাতনও করেছে।

আকবর আলীর বৃদ্ধ মা জাকিয়া বেগম বলেন, পুলিশের ভয়ে আমরা অনেকদিন বাড়িতে থাকতে পারিনি। আমি এই অন্যায়ের বিচার চাই।


 
মদিনা আক্তারের বাবার বাড়িতে গিয়ে তার সাথে কথা হলে তিনি জানান, যেদিন আমি নিখোঁজ হই- সেদিন আমার মুঠোফোনে আকবর আলীর কল আসে। এরপর আকবর আলীর কথামত অপরিচিত এক ব্যক্তির সঙ্গে মানিকগঞ্জের সাটুরিয়ার বালিয়া বাসস্ট্যান্ডে যাই। সেখান থেকে আমাকে বাসে উঠায়। এরপর আমাকে কোথায় নিয়ে যাওয়া হয়- তা বলতে পারব না।

পরে সেখান থেকে গোপালগঞ্জের নিজরা গ্রামের মামুন ইসলাম নামে এক ব্যক্তি উদ্ধার করেন। পরে তার সঙ্গে আমার বিয়ে হয়। তিনি কিভাবে উদ্ধার হলেন এ প্রশ্নের জবাবে তিনি নিরুত্তর থাকেন।

এ বিষয়ে মির্জাপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) গিয়াস উদ্দিন বলেন, পুলিশের প্রতিবেদনের কারণে আকবর আলী মামলা থেকে রেহাই পেয়েছেন। তিনি হেয় হওয়ার বিষয়ে পুলিশের কিছুই করার নেই।

আজকের টাঙ্গাইল
আজকের টাঙ্গাইল