মির্জাপুরে পানির নিচে বোরো ধান, কৃষকরা পাচ্ছেন সরকারী প্রণোদনা

প্রবল বৃষ্টি ও অসময়ের জোয়ারের পানিতে টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলায় তলিয়ে গেছে শত শত হেক্টর কাঁচা, আধা পাকা বোরো ধান। একদিকে প্রাণঘাতি ভাইরাস করোনার থাবা অন্যদিকে ধান গোলায় তুলতে না পারায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের আরেক চিন্তা এনজিও ও মহাজনের ঋণ। টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, বৃষ্টি ও জোয়ারের পানিতে তলিয়ে যাওয়া বোরো ধান কেটে নেওয়ার চেষ্টা করছেন অসহায় কৃষকরা।

এর মধ্যে আশা জাগিয়েছে বাংলাদেম সরকারের কৃষি অধিদপ্তর, ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তালিকা করে বিভিন্নভাবে প্রণোদনা দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে উপজেলা কৃষি অফিস এবং জেলা প্রশাসন।

শনিবার উপজেলা কৃষি অফিস সূত্র জানায়, মির্জাপুর পৌরসভা ও ১৪টি ইউনিয়নের চলতি মৌসুমে বোরো ধানের লক্ষমাত্রা ছিল ২০ হাজার পাঁচশ হেক্টর। উৎপাদন হয়েছে ২০ হাজার ৮১৫ হেক্টর।

আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবং বীজ, সার, কীটনাশকের দাম কম হওয়ায় চলতি বছর মির্জাপুর পৌরসভা, উপজেলার মহেড়া, জামুর্কি, ফতেপুর, বানাইল, আনাইতারা, ওয়ার্শি, ভাদগ্রাম, ভাওড়া, বহুরিয়া, লতিফপুর, গোড়াই, আজগানা, তরফপুর এবং বাঁশতৈল এই ১৪ ইউনিয়নে বোরো ধান আবাদের বাম্পার ফলন হয়েছে।

গত কয়েক দিন ধরে টানা বৃষ্টি এবং নদীতে অসময়ে জোয়ারের পানি বেড়ে যাওয়ায় নিচু অঞ্চলের কাঁচা ও আধা পাকা বোরো ধান ক্ষেত তলিয়ে গেছে।

উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের বহনতলী, সুতানরী, থলপাড়া, গোবিন্দপুর, বন্যাতলী, পারদিঘী, চাকলেশ^র ও গোড়াইল, গাড়াইল, বানাইল, মশাজান, পাথরঘাটা, তরফপুর, বারকাটি বিলের শত শত হেক্টর বোরো ধান ক্ষেত এখন পানির নিচে।

একই অবস্থা মহেড়া ইউনিয়নের বিল মহেড়া, দেওভোগ, বলটিয়া, তেতুলিয়া, জামুর্কি ইউনিয়নের উফুলকী, ধল্যা, ভাদগ্রাম, বর্ধনপাড়া, রোয়াইল, ভাওড়া, কামারপাড়া, বহুরিয়া, লতিফপুর, টাকিয়া কদমা, গোড়াই, আজগানাসহ বিভিন্ন গ্রামের নিচু এলাকার পাঁচশ হেক্টর বোরো ধান ক্ষেত তলিয়ে যাওয়ায় চরম বিপাকে পরেছেন কৃষকরা।

এক দিকে বৃষ্টি ও জোয়ারের পানিতে জমির ধান নষ্ট অপর দিকে ধানকাটা শ্রমিকের মজুরি জনপ্রতি এগারশ থেকে বারোশ টাকা হওয়ায় অনেকেই শ্রমিকের অভাবে ধান কাটতে পারছেন না বলে জানিয়েছেন।

এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি অফিসার মোহাম্মদ মশিউর রহমান বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেছেন টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক মো. শহীদুল ইসলাম, উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আবদুল মালেক মোস্তাকিম, সহকারী কমিশানার (ভূমি) মীর্জা মো. জুবায়ের হোসেন ও উপজেলা কৃষকলীগের সভাপতি ও সাবেক চেয়ারম্যান মো. হুমায়ুন তালুকদার। মির্জাপুরে এ বছর বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার কৃষকদের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে তাদের সার্বিক ভাবে সহযোগিতা করা হবে। কৃষি অফিসের কর্মকর্তারা কৃষকদের ধান কাটতে শ্রমিক দিয়ে সহযোগিতা করছেন।