• মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ৫ ১৪৩০

  • || ০৮ রমজান ১৪৪৫

আজকের টাঙ্গাইল

মরুভূমির জাহাজ ভূঞাপুরে, এক নজর দেখতে মানুষের ঢল!

আজকের টাঙ্গাইল

প্রকাশিত: ৩১ জুলাই ২০২০  

সৌদি আরবের মরুভূমিতে থাকা উট এবার টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে। এই উট একনজর দেখতে ভিড় জমাচ্ছেন শত শত মানুষ। শুধু এ গ্রামের মানুষ নয়। আশে-পাশের বিভিন্ন এলাকা থেকে পরিবার পরিজন নিয়ে দেখতে ছুটে আসছেন অনেকে। মরুভূমির এই উট স্ব-চোখে দেখতে পেরে আনন্দিত উৎসুক জনতা। উটকে যারা দেখতে আসছেন তাদের জন্য নিরাপত্তার ব্যবস্থাও করা হয়েছে। ঈদের দিন কোরবানি হবে এ উট।

 

আলোচিত এই উটটি কোরবানি দেয়ার জন্য কিনছেন টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলার গোবিন্দাসী ইউনিয়নের বিলচাপড়া গ্রামের মৃত আইয়ুব আলী সরকারের ছেলে আব্দুল রশিদ সরকার (তুলা)। সে পেশায় একজন ঠিকাদার ও কা’বার পথে ট্যুরস ট্রাভেলস নামে একটি প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান ও ধর্মানুরাগী সমাজসেবক। গরীবের বন্ধু নামেও সকলের কাছে পরিচিত তিনি।

 

রশিদ সরকার বলেন, আমার বাবার স্বপ্ন ছিল উট কোরবানি করার। যেতে চেয়ে ছিলেন মদিনায় হজ পালনে। কিন্তু যেতে পারেনি। এদিকে, প্রতিবারের ন্যায় এ বছর আমিও হজ করতে যেতে চেয়েছিলাম। কিন্তু মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে তা সম্ভব হয়নি। তাই সেই অর্থ দিয়ে অনেক কষ্টে উটটি কিনেছি। দামের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ইচ্ছে ছিল সৌদি থেকেই আনার। কিন্তু করোনার কারণে আনা যায়নি। এরপর দেশের সব বড় বড় হাট খোঁজাখুঁজি করে অবশেষে ঢাকার গাবতলি পশুর হাট থেকে এক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ১১ লাখ ৫০ হাজার দিয়ে কেনা হয়।

 

গোপালপুর থেকে উট দেখতে আসা মো. রুবেল মিয়া বলেন, ফেসবুক, টিভি ও পাঠ্য বইয়ে অনেক দেখেছি, পড়েছি উটের গল্প। কিন্তু বাস্তবে দেখার সৌভাগ্য হয়নি। গত বুধবার দুপুরে ফেসবুকে একটি পোস্ট দেখে ভূঞাপুরের বিলচাপড়া গ্রামে ছুটে এসেছি উটকে এক নজর দেখার জন্য। আসলে মরুভূমির এই উট বাস্তবে দেখতে পাব কোনদিন স্বপ্নেও ভাবেনি। সত্যিই অনেক ভাল লাগছে।

 

কালিহাতির উপজেলার মো. মিজানুর রহমান বলেন, উট বাস্তবে দেখলাম আজ। ঈদের আনন্দ আরও দ্বিগুণ বেড়ে গেল। এছাড়াও সৌদির মরভূমির উট দেখেও মনে বড় প্রশান্তি অনুভব করছি। স্থানীয় বাসিন্দা মো. আসলাম ও লিটন মিয়া বলেন- আমাদের এলাকায় এবারই এই প্রথম উট কোরবানি হচ্ছে। এরআগে কেউ উট কোরবানি দিতে পারেনি। কোরবানি এই উট দেখতে আসছে শতশত মানুষ। আমাদেরও খুব ভাল লাগছে উট দেখতে পেরে।

 

সরেজমিনে বৃহস্পতিবার (৩০ জুলাই) সন্ধ্যায় গিয়ে দেখা গেছে, মরুভূমি উটকে দেখতে শত শত মানুষ ভিড় জমাচ্ছেন। সব বয়সি মানুষ উটের সাথে সেলফি ও ছবি উঠছে। কেউ ভিডিও নিচ্ছে। আবার কেউ কেউ ফেসবুক লাইভও করছে। মানুষ যেন কোন ধরণের বিশৃঙ্খলা না করতে পারে সেজন্যও করেছেন কড়া ব্যবস্থা।

 

রশিদ সরকারের সাথে কথা বলে আরও জানা গেছে, তিনি মনে করেন, তার এ উট কোরবানি গোশত স্থানীয় প্রতিবেশীদের মাঝে বন্টন করবেন। উট দেখাশোনা ও খাবার ব্যবস্থার বিষয়ে তিনি বলেন, উটটিকে যে ব্যবসায়ী থেকে কেনা হয়েছে সে পাকিস্তান থেকে গত ২ বছর আগে ৩টি উট কিনে আনেন। পরে ২টি উট বিক্রি করেন। রয়ে যায় আরও একটি। করোনার কারণে এ বছর ওই ১টি উট বিক্রি করতে না পেরে ক্রেতা সংকটে পড়ে দিশে হারা পড়ে ছিলেন। আর আমিও উট কেনার জন্য অধির ছিলাম। গত কয়েকদিন আগে কেনা হয়। এই উটটিকে মূলত প্রায় ৩ বছর লালন-পালন করেন তারা। গরুকে যে খাবার খাওয়ানো হয় সেগুলোই স্বাভাবিকভাবে উটকে খাওয়ানো হচ্ছে। এছাড়াও কোনবানির আগ পর্যন্ত লালন-পালন করার জন্যও ওই ব্যবসায়ীর এক লোক নিয়মিত তার যত্ন করছেন।

 

তিনি আরও বলেন, উট কোরবানির পাশাপাশি গরুও কোরবানি করা হবে। এ উটকে আমি প্রথমে প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ), আমার বাবা-মা, আমি ও স্ত্রী সন্তানদের নামে কোরবানি করব। চেষ্টা করব প্রতি বছর একটি করে উট কোরবানি করার জন্য। এজন্য সকলের কাছে দোয়া চাই।

আজকের টাঙ্গাইল
আজকের টাঙ্গাইল