বুয়েট ছাত্র আবরার হত্যা: লজ্জিত অনিকের বাবা, ছেলের বিচার দাবি

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র আবরার ফাহাদের হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের অন্যতম ছাত্রলীগ নেতা অনিক সরকারের কর্মকাণ্ডে লজ্জিত তার বাবা আনোয়ার হোসেন। তিনি বলেছেন, ছেলে যদি অপরাধী হয় তবে তার বিচার হোক। 
তিনি বলেন, ছেলের অপরাধে বাবা বা তার পরিবারের বিচার করবেন না। এক ফুলে ১০টা কুঁড়ি হলে ১০টাই ফল হয় না। অনিকও কুঁড়ি ছিল ফল হতে পারেনি। একজনকে দিয়ে পরিবারের বিচার করা উচিত নয়। আমি চাই প্রচলিত আইনে অনিকের বিচার হোক।
 
গত বৃহস্পতিবার এভাবেই বলেন হত্যাকাণ্ডে অংশ নেয়া অনিকের বাবা আনোয়ার হোসেন। তিনি একজন ব্যবসায়ী। রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলার বরইকুড়ি গ্রামে বসবাস করেন। তার দুই ছেলের মধ্যে অনিক ছোট।

আনোয়ার হোসেন বলেন, ছেলেকে পাঠিয়েছি পড়ালেখা করতে। অনেক কষ্ট করে তাকে টাকা পাঠিয়েছি মাসের পর মাস। কিন্তু কে জানতো সে এ ধরনের অমানবিক কাজে জড়িয়ে যাবে। সব বাবা-মা চায় তার সন্তান ভালোভাবে পড়ালেখা করে পাস করে আসুক, বাবা-মার মুখ উজ্জ্বল করুক। কিন্তু অনিক এমন হত্যার সঙ্গে জড়িয়ে যাবে ভাবতে পারছি না।

তিনি বলেন, আমি চাই কারো সন্তান যেন এমন না হয়। আইন সবার জন্য সমান। আমি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। আমার ছেলে অপরাধী হলে প্রচলিত আইনে তার যে সাজা হবে আমি মেনে নেবো। আমি চাই আমার ছেলের বিচার হোক। আশা করবো অনিকের মতো আর কেউ যেন ভুল পথে না যায়।

তিনি আরো বলেন, অনিক রাজশাহীতে থাকা অবস্থায় কোনো রাজনীতি করত না। কারো সঙ্গে তেমন মিশতও না। কী করে সে রাজনীতিতে প্রবেশ করল তা জানি না। আমরা জানি অনিক সেখানে পড়ালেখা করছে। যখন জানতে পারলাম অনিক এক ছাত্রকে হত্যা করেছে। সেই দায়ে তাকে আটক করেছে পুলিশ। তখন অবাক হয়ে গেছিলাম। ভাবতে পারিনি আমার ছেলে কাউকে খুন করতে পারে।
 
আনোয়ার আরো জানান, সবাই বলছে আমার পরিবার নাকি বিএনপি-জামায়াতের পরিবার। আমি সবাইকে বলতে চাই, ছেলের অপরাধে বাবা বা তার পরিবারের বিচার করবেন না। আমরা আওয়ামী লীগের পরিবারের মানুষ, আজীবন আওয়ামী লীগেই থাকতে চাই।

মোহনপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও ভাইস চেয়ারম্যান মেহবুব হাসান রাসেল বলেন, অনিক অপরাধী হতে পারে। প্রচলিত আইনে তার বিচার হবে। কিন্তু অনিকের বাবা আওয়ামী লীগের একনিষ্ঠ একজন কর্মী। এমনকি তার পরিবারের প্রবীণ সদস্যরাও স্বাধীনতার আগ থেকে আওয়ামী লীগ করে আসছেন।