• শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১২ ১৪৩১

  • || ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

আজকের টাঙ্গাইল

বাংলাদেশের এই নারীরা ইউটিউব থেকে মাসিক আয় করেন আট লাখ টাকা

আজকের টাঙ্গাইল

প্রকাশিত: ৩০ নভেম্বর ২০২০  

পুরুষদের পাশাপাশি আমাদের চারপাশে এখন নারী উদ্যোক্তার ছড়াছড়ি। এদের বেশিরভাগই ব্যবসা করছেন অনলাইনে। কেউ জামাকাপড় বিক্রি করছেন, কেউ ড্রাই ফুড। আবার কেউ আছেন হাতে তৈরি মিষ্টি নিয়ে। সব মিলিয়ে এখন অনলাইনে নারীদের জয় জয় কার।  

 

এটা একটা মাধ্যম বানিয়ে নিয়েছেন আমাদের দেশের নারীরা। ইউটিউবেও তাদের সরব বিচরণ। দারুণ দারুণ সব ভিডিও বানিয়ে মাসে আট থেকে দশ লাখ টাকা আয়ের রেকর্ডও করেছেন এই দেশের নারী ইউটিউবাররা। আজ জানাবো এমন ১০ জন নারী ইউটিউবার সম্পর্কে যাদের মাসিক আয় প্রায় আট লাখ টাকা।

 

ফারজানা ড্রইং একাডেমি

ড্রইং একাডেমি পেনসিল স্কেচ নিয়ে কাজ করেন ফারজানা ড্রইং একাডেমি চ্যানেলটি। ফারজানা খুবই চমৎকার আঁকেন। মুহূর্তের মধ্যে পেনসিল আর রং দিয়ে সাদা কাগজের রূপ বদলে দেন তিনি। সপ্তাহে অন্তত দুইটি ভিডিও আপলোড দেয়া হয় এই চ্যানেলে। এই চ্যানেলের সাবস্ক্রাইবারের সংখ্যা প্রায় ৫২ লাখেরও বেশি। তার মাসিক আয় প্রায় ৮ হাজার ৫০০ ডলার। বাংলাদেশি টাকায় তা প্রায় ৭ লাখ টাকারও বেশি। জানলে অবাক হবেন, বাংলাদেশ ইউটিউব ফিল্ডে ফারজানা ড্রইং একাডেমি চ্যানেল ২য় র‍্যাংক ইউটিউব চ্যানেল। 

 

কুকিং স্টুডিও বাই উম্মে

দেশি বিদেশি প্রায় নানা রকমের খাবার নিয়ে তাদের আয়োজন। এই চ্যানেলের বিশেষত্ব হচ্ছে তারা যেসব রেসিপি নিয়ে কাজ করেন, এর উপকরণগুলো হাতের নাগালেই পাওয়া যায়। আর তাই তাদের দর্শকও বেশি। প্রতি সপ্তাহে প্রায় ৩ থেকে ৪টি ভিডিও আপলোড দেয়া হয় এই চ্যানেলে। প্রায় ১৯ লাখ সাবস্ক্রাইবার আছে চ্যানেলটিতে। এই চ্যানেলের মাসিক আয় প্রায় ২ লাখ ডলার। যা বাংলাদেশি মুদ্রায় এক লাখ ৭০ হাজার টাকা। এ বছর বই মেলায় তার একটি রান্নার বইও বেরিয়েছে। 

 

নো ওভেন কেক এন্ড কুকিজ

নো ওভেন কেক এন্ড কুকিজ মূলত ফাস্ট ফুড নিয়ে কাজ করেন। বিভিন্ন রকমের কেক, কুকিজ এবং স্ন্যাকস নিয়ে ভিডিও বানানো হয় এই চ্যানেলে। নো ওভেন কেক এন্ড কুকিজের সাবক্রাইবার প্রায় ১৭ লাখেরও উপরে। এই চ্যানেল থেকে প্রতিদিনই ভিডিও আপলোড দেয়া হয়। তরুণীদের কাছে এই চ্যানেল খুবই জনপ্রিয়। এর মাসিক আয় প্রায় ২২০০ ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় যা ১ লাখ ৮৫ হাজার টাকারও বেশি।

 

ফাল্গুনী, পিনিকপাই

দুনিয়ায় ঘটে যাওয়া নানা ঘটনা ও কনটেন্ট নিয়ে বানানো হয় এই চ্যানেলের ভিডিও। তাদের ভিডিও, থাম্বনেইল পিনিকপাইকে দিয়েছে আলাদা মান। তাদের সাবস্ক্রাইবারের সংখ্যা ১৮ লাখের বেশি। প্রতিদিনই ভিডিও আপলোড করা হয় এই চ্যানেলে। পিনিকপাইয়ের এই মুহূর্তে মাসিক আয় প্রায় এক হাজার ডলার থেকে ১৫০০ ডলারের মধ্যে। 

 

খুদা লাগছে

খুদা লাগছে নাম শুনলে বোঝা যায়, এই চ্যানেলে খাবারের কাজ করা হয়। হ্যাঁ এটি মূলত ফুড রিভিউ চ্যানেল। বার্গার থেকে শুরু করে স্ট্রিট ফুড যা কিছু আছে সব খাবারেরই রিভিউ দেয়া হয় এই চ্যানেলে। চ্যানেলটির সত্ত্বাধিকারী একজন তরুণী। খুদা লাগছে চ্যানেলটির সাবস্ক্রাইবারের সংখ্যা ২ লাখেরও বেশি। প্রতি সপ্তাহে অন্তত একটি ফুড রিভিউয়ের ভিডিও আপলোড করা হয় এই চ্যানেল থেকে। প্রতিটি ভিডিওতে কয়েক লাখ ভিউ থাকে। এই চ্যানেলের মাসিক আয় প্রায় ৫০০ ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় যা ৪০ হাজার টাকার বেশি।

 

স্পাইস বাংলা

মূলত স্পাইসি ও রিচ ফুড নিয়ে কাজ করেন এই চ্যানেল। আমরা রেস্টুরেন্টে যেসব বাহারি খাবারের সন্ধানে হাজিরা দেই, সেগুলোই বাসায় বসে কীভাবে বানানো যায় সেই উপায় বাঁধতে দেয় এই চ্যানেল। মুখরোচক এসব খাবারের রেসিপি জানার জন্য অনেকেই ঢুঁ দেন এই চ্যানেলে। এই চ্যানেলের সাবস্ক্রাইবারের সংখ্যা প্রায় ২০ লাখ। ভিডিওগুলো উপস্থাপন করা হয় বেশ উন্নতভাবে। ইউটিউব থেকে তার মাসিক আয় প্রায় ১৮০০ ডলার। বাংলাদেশি টাকায় অংকটা দেড় লাখ টাকারও বেশি।

 

রুমানার রান্নাবান্না

রুমানা খাবার নিয়ে বিভিন্ন ভিডিও করে থাকেন। তার চ্যানেলের নাম রুমানার রান্নাবান্না। এই চ্যানেলের সাবস্ক্রাইবারের সংখ্যা ১১ লাখেরও বেশি। খাবারের অনেক লোভনীয় আইটেম তৈরি করা হয় এই চ্যানেলে। এই চ্যানেলে এমন এমন খাবারের রেসিপি দেখানো হয় যেগুলোর নামও হয়তো বা দর্শকেরা কখনো শোনেনি। এসব নাম শোনার পর স্বাভাবিকভাবে একটি আকর্ষণ জন্ম নেয় দর্শকদের মনে। ইউটিউব থেকে রুমানার মাসিক আয় প্রায় ১৬০০ ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় দেড় লাখ টাকার কাছাকাছি।

 

আয়েশা সিদ্দিকা

আয়েশা সিদ্দিকা দারুণ সব বাহারি রান্না করে নিজের ইউটিউব চ্যানেলের মাধ্যমে সেগুলোর প্রস্তুত প্রণালী ভাগ করে নেন দর্শকদের সঙ্গে। তার ভিডিওর বিশেষত্ব হলো এগুলো দর্শকের সামনে উপস্থাপন করা হয় খুবই আকর্ষণীয়ভাবে। এডিটর এজন্য বাহুভাব হবে। ভিডিওর থাম্বনেইল দেখেই যে কেউ লোভাতুর হয়ে ভিডিওটা দেখতে চাইবে। আর ভোজন রসিক হলে তো কথাই নেই। ইউটিউবে আয়েশার সাবস্ক্রাইবার আছে প্রায় সাড়ে ১১ লাখ। প্রতিমাসে তিনি ১০ থেকে ১২টি করে তিনি ভিডিও আপলোড করেন ইউটিউব থেকে তার মাসিক আয় প্রায় ১৬০০ ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় যেটি প্রায় এক লাখ ৩৫ হাজার টাকা। 

 

শাহনাজ শিমুল রহমান

শাহনাজ শিমুল রহমানের ছেলেবেলা সিরাজগঞ্জেই কেটেছে। ছোটবেলা থেকেই তার মেকআপ নিয়ে পড়াশোনার ইচ্ছা ছিল। তবে তা বাংলাদেশে সম্ভব হয়নি। তাই বিয়ের পর নর্থ ব্লক কলেজ থেকে ডিপ্লোমা করেন মেকআপের ওপর। মেকআপের প্রতি আকর্ষণ থাকার কারণে তিনি মেকআপ নিয়ে একটি ইউটিউব চ্যানেলে ব্লগিং শুরু করেন। তিনি সর্বপ্রথম ইউটিউবে ভিডিও আপলোড করেন ২০১৪ সালে। তিনি সর্বপ্রথম বাংলাদেশি নারী মেকআপের ওপর ভিডিও শুরু করেন। শিমুল যখন ভিডিও করা শুরু করেন, তখন বাংলাদেশে ইউটিউবারের সংখ্যা একেবারেই কম ছিল। অনেকেই এই ইউটিউবের গুরুত্ব বুঝতেন না। শিমুলের তৈরি পার্টি হেয়ারস্টাইল প্রতিটি ভিডিও প্রায় এক মিলিয়ন দর্শককে মুগ্ধ করে। সব মিলিয়ে তার ইউটিউব চ্যানেলের মোট সাবস্ক্রাইবার প্রায় ৯ লাখ। ইউটিউব থেকে তার মাসিক আয় প্রায় ৯৫০ ডলার। যা বাংলাদেশি মুদ্রায় ৮০ হাজার টাকার কাছাকাছি।  

 

হৃদি শেখ

ঢাকার মেয়ে হৃদি শেখ। মনেপ্রাণে একজন বাঙালি হলেও জন্ম এবং বেড়ে ওঠা রাশিয়াতে। সেখানেই কেটেছে তার শৈশব ও কৈশোর। বিদেশে বড় হলেও দেশীয় সংস্কৃতির প্রতি ছিল অগাধ ভালোবাসা ও টান। ছোটবেলা থেকেই তার নাচের প্রতি অধির আগ্রহ ছিল। তার আগ্রহ দেখে তাকে তার মা ভর্তি করে দেন নাচের স্কুলে। মায়ের হাত ধরে প্রতিদিন নাচের স্কুলে গিয়ে রপ্ত করতে থাকেন নাচ। 

 

রাশিয়াতে নিজের স্কুলের পাশাপাশি বিভিন্ন অনুষ্ঠানে নাচ করে প্রশংসা কুড়িয়েছেন তিনি। হৃদি নাচের সেই শিক্ষা আর অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়েই বাংলাদেশের ৪৫ হাজার প্রতিযোগীকে পেছনে ফেলে চ্যানেল আই সেরা নেচে সিজন থ্রির বিজয়ীর মুকুট অর্জন করেন। সম্প্রতি রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের হল অব ফেমে অনুষ্ঠিত হওয়া নৃত্য অনুষ্ঠানের বিজয়ী তিনি। 

 

আর সেখান থেকে তার হাতে পুরস্কার হিসেবে তুলে দেয়া হয় ব্র্যান্ড নিউ গাড়ির চাবি এবং মাথায় পরিয়ে দেয়া হয় সুদৃশ্য বিজয় মুকুট। তিনি আরও অংশ নিয়েছেন ভারতীয় নৃত্য শো ড্যান্স প্লাসেও। তারও ইউটিউবে একটি চ্যানেল রয়েছে। তার চ্যানেলে সাবস্ক্রাইবারের সংখ্যা ৮ লাখেরও বেশি। শুধু ইউটিউব থেকে হৃদির মাসিক আয় প্রায় আনুমানিক ৮০০ ডলার। যা বাংলাদেশি টাকায় ৬৫ হাজারেরও বেশি।

আজকের টাঙ্গাইল
আজকের টাঙ্গাইল