• শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৭ ১৪৩১

  • || ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

আজকের টাঙ্গাইল

বাঁশখালীতে অনুমোদনহীন লটারি বাণিজ্য, হাতিয়ে নিচ্ছে লক্ষ টাকা!

আজকের টাঙ্গাইল

প্রকাশিত: ১৩ এপ্রিল ২০১৯  

চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলায় অনুমোদনবিহীন লটারি বাণিজ্যের বিরোদ্ধে অভিযোগ উঠেছে সচেতন জনমহলে। উপজেলার চাম্বল ইউনিয়ন পরিষদ মাঠে প্রতিদিন রাত ১০টা ৩১ মিনিটে র্যাফল ড্র অনুষ্ঠানের নামে চলছে লটারি বাণিজ্য। 

 

দি সোনালী লাকী কূপনের শাখার নাম দিয়ে দি সোনালী লাকী কূপন, দি সোনালী র্যাফল ড্র, দি নিঝুম লাকী কূপন, দি নিঝুম র্যাফল ড্র, দি সুমন লাকী কূপন, দি সুমন র্যাফল ড্র পুরুস্কারের লোভনীয় অফারে এদিকে দিনের প্রথমভাগ শুরু হতে না হতেই লটারি! লটারি!! লটারি বলেই মাইকিং করে অনুমোদনবিহীন লটারি বিক্রির ধুম পড়েছে বাঁশখালীর প্রধানসড়কে ও অভ্যন্তরিণ সড়কে। স্কুল মাদরাসার ক্লাস চালাকালী সময় খেয়াল না রেখে চলছে মাইকিং। প্রচারের জন্য নিয়োজিত রয়েছে বেশ কয়েকটি সিএনজি ও রিকশা। দিনব্যাপী তাদের মাইকিংয়ের কারণে পরিবেশে পড়ছে শব্দ দূষণের ব্যাপক প্রভাব। 

দি নিঝুম র্যাফল ড্র, প্রতিদিনের ড্র প্রতিদিন শিরোনামে সিএনজি অটোটেক্সির পিছনে ব্যানার লাগিয়ে এম.এ রাজু খানের পরিচালনায় এ র্যাফল ড্র নামে চলছে অনুমোদনবিহীন লটারী ব্যবসা। বাঁশখালীতে অনুমোদনবিহীন লটারির টিকিট বিক্রি করে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে ওই প্রতিষ্ঠানটি। মোটা অংকের অর্থ পুরস্কারের লোভে এ লটারির টিকিট কিনে প্রতারিত হচ্ছে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী ও নিম্নআয়ের মানুষ গুলো। এ র‌্যাফেল ড্রর টিকেট কেটে সর্বস্বান্ত হচ্ছে এলাকার সাধারণ মানুষজনও। বিশেষ ঘোষণা বলে মাইকিংয়ে প্রচার করা হচ্ছে প্রাকৃতিক দূর্যোগের কারণে লটারির পুরুস্কারের তারিখও পেঁছানো হতে পারে! কোথাও কোথাও বৈশাখী মেলার নামে বসেছে জুয়ার আসর।

স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, এই অবৈধ লটারি বাণিজ্য করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে যাচ্ছে সাধারাণ মানুষ থেকে। এ লটারিতে সর্বপ্রথম পুরুস্কার ৮০ সিসি রানার মোটর সাইকেল, সর্বশেষ পুরুস্কার সোফা সেট, মাঝারিতে রয়েছে ৫টি মোবাইল ফোন, ১টি চুলাসহ গ্যাস সিলিন্ডার, ৫টি ষ্টিলের আলনা, ৫ লিটারের সয়াবিন তেলের গ্যালেন সহ সর্বমোট ৩৫টি পুরুষ্কার ঘোষনা করছে। এ পুরস্কারের আশায় লটারি কেটে সর্বস্বান্ত হচ্ছে এলাকার সাধারণ ও নিন্ম আয়ের মানুষ। প্রতিদিন রাত দশটা ৩১ মিনিটে এ লটারীর ড্র মেলা প্রাঙ্গণে হাজার হাজার মানুষের উপস্থিতে অনুষ্টিত হচ্ছে। এ ড্র মানুষকে বিশ্বাস করার জন্য স্থানীয় ডিস লাইনেও সরাসরি প্রচার করা হয়।

এদিকে প্রতিদিন সকাল থেকে শুরু হয় ২০ টাকা মূল্যের এ লটারির টিকেট বিক্রি। এ এলাকার সড়ক জুড়ে ও পাড়া গায়ের অলিতে গলিতে ভ্যান দিয়ে লোভনীয় মাইকিং এর মাধ্যমে প্রশাসনকে ফাঁকি দিয়ে বিক্রি করছে সারাদিন ভর এ সর্বনাশা লটারির টিকেট। স্থানীয় ব্যবসায়ীদের বেশ কয়েকজন জানান, এ লটারীকে কেন্দ্র করে আশপাশের এলাকায় ব্যবসা বাণিজ্য অচল প্রায়। সবাই লটারি পাওয়ার আশায় টিকেট কেনায় ব্যাস্ত, রাত হলে যাচ্ছে মেলার মাঠে। তাই বর্তমানে আমাদের ব্যবসার অবস্থা খুব খারাপ চলছে।

এবিষয়ে মেলা ফেরত মো. জমির, আলমগীর হোসাইন, গিয়াস উদ্দিন জানান, প্রতিদিন এ লটারি কিনছি এখনো পইনি যতদিন চলবে কিনতে থাকবো যদি পাই। এভাবে যদি পাওয়ার আশায় এলাকার সবাই সহজ সরল মানুষ, মহিলা, শিশু, কিশোর, এমনকি বৃদ্ধরাও খেয়ে-না খেয়ে লটারীর টিকেট কিনে সর্বস্বান্ত হচ্ছে।

কাজল নামের একজন লটারির টিকেট বিক্রেতাকে অনুমোদনের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, হয়তো প্রশাসনের অনুমোদন নাই। তবে এম.এ রাজু খান নামের একজন ব্যক্তি এ লটারি প্রতিযোগীতা পরিচালনা করছে, তাছাড়া চাম্বল ইউপির চেয়ারম্যান মুজিবুল হক চৌধুরীর নেতৃত্বে পরিষদ সংলগ্ন মাঠেই এ ড্র অনুষ্ঠিত হচ্ছে বলেও তিনি জানান।

লটারি বাণিজ্যের আজ তৃতীয়দিন। এ অনুমোদনবিহীন লটারি কতদিন চলবে কেউ জানেনা। স্থানীয়দের দাবী অবিলম্বে এ অবৈধ সর্বনাশা লটারি বন্ধ করা হোক। এতে তারা প্রশাসনের কঠোর হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

আজকের টাঙ্গাইল
আজকের টাঙ্গাইল