• মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৩ ১৪৩১

  • || ০৬ শাওয়াল ১৪৪৫

আজকের টাঙ্গাইল

বন্যার পানি কমে যাওয়ায় বাদাম চাষে ব্যস্ত ভূঞাপুরের কৃষকরা

আজকের টাঙ্গাইল

প্রকাশিত: ১ নভেম্বর ২০২০  

বাদাম চাষে ব্যস্ত সময় পার করছে টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর যমুনার চরাঞ্চলের কৃষকরা। সম্প্রতি বন্যার পানি নেমে যাওযায় চরাঞ্চলে চার দিকে জেগে উঠেছে বালু চর আর এ অঞ্চলে বাদাম চাষ শুরু করছেন কৃষকরা। তাদের সাথে পরিবারের লোকজন বাদাম বীজ বপন করতে সাহায্য করেছেন।

উপজেলার চিতুলিয়াপাড়া, কালিপুর, বলরামপুর, গাবসারা, রেহাইগাবসারা, বেলটিয়াপাড়া, রুলীপাড়া, জুঙ্গীপুর, সরইপাড়া, কুঠিবয়ড়া, বাসুদেবকোল, ভদ্রশিমুল, শুশুয়া, গোবিন্দপুর, নলছিয়া, রামপুরসহ আরো অনেক গ্রামের কৃষকরা এলাকায় বাদাম চাষ করছেন।
 
যমুনা নদীর ভাঙন এবং বন্যাকবলিত এলাকার মানুষ তাদের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে বন্যার পানি নেমে যাওয়ার সাথে সাথে বাদাম বীজ বপন করা শুরু করছেন তারা।

সরেজমিনে চরাঞ্চলের কয়েকটি এলাকা ঘুরে দেখা যায়, বাদাম চাষের জন্য কৃষকরা জমি প্রস্তুত করছেন, কেউ বাদামের বীজ বপন করছেন, কেউ লাঙল টানছেন আবার অনেক চাষিরা বীজ বপন করা জমি পরিচর্যা করছেন। গ্রামীণ নারীরাও বাদাম চাষে বিশেষ ভূমিকা রাখছেন। বাড়ির কাজের পাশাপাশি ছেলেদের সাথে মেয়েরাও সহযোগিতা করছেন।

করোনা ভাইরাসের কারণে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় কাজ করছে স্কুল পড়ূয়া ছোট ছোট ছেলে মেয়েরাও।

কাক ডাকা ভোরে সূর্য উঠতে না উঠতেই সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চাষিরা মাঠে বাদাম বীজ বপনে দিনভোর কাজ করছেন।
 
রামপুর গ্রামের বাদাম চাষি মোঃ নওশের আলী সেখ বলেন, “বিগত বন্যায় আমাদের অনেক ক্ষতি হয়েছে এবং এই ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পুরোদমে বাদাম বীজ বপন ও ক্ষেতের পরিচর্যা করতে হচ্ছে”।

কৃষকদের সাথে আলাপ চাড়িতায় জানাযায়,অল্প খরচ, কম পরিশ্রমে এবং কম সময়ে বাদাম চাষে অধিক লাভবান হওয়া যায়। বাদাম চাষে বিঘাপ্রতি খরচ হয় প্রায় ৪ হাজার থেকে ৫ হাজার টাকা। আর বাদাম বিঘাপ্রতি ফলন পাওয়া যায় প্রায় ৮ থেকে ১০ মণ। হাট বাজারে বাদামের ভালো দাম থাকায় খরচ বাদে বিঘাপ্রতি লাভ হয় প্রায় ১০ হাজার থেকে ১২ হাজার টাকা।

সরইপাড়া গ্রামের বাদাম চাষি হযরত আলী বলেন, গত বছর আমি ৪ বিঘা জমিতে বাদাম চাষ করে ভালো ফলন এবং বাজারে ভালো দাম পেয়েছিলাম। তাই এ বছর ৬ বিঘা জমিতে বাদাম চাষ করেছি। আবহাওয়া ভালো থাকলে এবারো ভালো ফলন হবে বলে আশা করছি।
 
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আল মামুন রাসেল বলেন, “যমুনা চরাঞ্চলে বাদাম চাষের জন্য খুবই উপযোগী। এরই মধ্যে যমুনার চরাঞ্চলে বাদাম চাষ শুরু করছেন কৃষকেরা। মাত্র আড়াই থেকে ৩ মাসের মধ্যে কৃষকের ঘরে উঠবে বাদাম। সুস্বাদু ও ভিটামিন সমৃদ্ধ এই ফসল একদিকে যেমন খাদ্যে যোগান দিয়ে থাকে তেমনি তেলের চাহিদা পূরণ করে। বাদামের কচি পাতা কেটে কৃষকরা তাদের গরু-ছাগলকে খাওয়ান। এতে গরু-ছাগল তাড়াতাড়ি স্বাস্থ্যবান হয়।

তাছাড়া অন্য ফসলের মতো বাদামের জমিতে সার ও কীটনাশক প্রয়োগ করতে হয় না বলে তিনি জানান।

তিনি বলেন, এ বছর ১হাজার ৮৫০ হেক্টর জমিতে বাদাম চাষ করা হচ্ছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে বিগত বছরগুলোর চেয়ে এ বছর বাদাম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে।

তিনি আরো বলেন, এ বছর কৃষকদের সহযোগিতা করার জন্য ১হাজার ৬’শ কৃষক পরিবারের তালিকা তৈরি করা হয়েছে কিছু দিনের মধ্যে সরকারের বরাদ্দকৃত প্রণোদনা কৃষকদের মাঝে বিতরণ করা হবে।যখন যা প্রয়োজন আমরা কৃষকদের পরামর্শ ও সহযোগিতা দিয়ে আসছি।

আজকের টাঙ্গাইল
আজকের টাঙ্গাইল