• বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১১ ১৪৩১

  • || ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

আজকের টাঙ্গাইল

নাগরপুরে করোনার বন্ধেও নিজের স্কুল সাজিয়েছেন দপ্তরী হারুন

আজকের টাঙ্গাইল

প্রকাশিত: ৫ জানুয়ারি ২০২১  

টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলার বারাপুষা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দপ্তরি কাম নৈশ প্রহরী হারুন অর রশিদ। তাঁর পেশাগত কাজ বিদ্যালয়ের টুকিটাকি কাজ ও রাতে বিদ্যালয় পাহারা দেওয়া। কিন্তু ছোট এ পেশায় থেকে পেশাগত কাজের বাইরে নিজের ভালোবাসা থেকে বিদ্যালয়কে সাজিয়ে তুলেছেন আপন মহিমায়। করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে যেখানে সার দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ, মানুষ ঘর থেকে বের হতে সাহস পাচ্ছে না সেখানে হারুন বসে না থেকে নিজের কর্মস্থলের বিদ্যালয়টিকে দিয়েছেন ভিন্নরুপ। তার নেই কোন হাতে কলমে শিল্পকর্মের প্রশিক্ষিত শিক্ষা নেই কোন চিত্রকর্ম কারুকাজের বিষয়ভিত্তিক প্রশিক্ষণ। তারপরেও তার তুলিতে অপূর্ব সব অঙ্কন একেঁ বিদ্যালয়ের চেহারা পাল্টে দিয়েছেন। বিদ্যালয়ের বাহিরের দেয়ালে যেমন শোভা পাচ্ছে শহিদ মিনার, স্মৃতিসৌধের ছবি ভেতরের পরিবেশ টি আরো চমৎকার। নিজ হাতে তিনি তৈরি করেছেন বিদ্যালয়ে একটি চমৎকার বাগান। বিদ্যালয়ের প্লে কর্ণারের সাজসজ্জাটিও তিনি নিজ হাতে করেছেন।

বাংলাদেশের অপূর্ব একটি মানচিত্র, বিদ্যালয়ের অফিস কক্ষ সজ্জিতকরণ, জাতীয় সংসদ ভবন, শহিদ মিনার স্মৃতি সৌধের আকৃতি তৈরি করেছে তার নিজের হাতের সুনিপন ছোঁয়া। বিদ্যালয়টির ছাঁদে রয়েছে একটি ছাঁদ বাগান। এই অপরুপ কাজ গুলো যিনি করেছেন তিনি কোন বিশেষ ব্যক্তি নন। বিদ্যালয়ের প্রতি অপরিসীম ভালোবাসা থেকে হারুন তার কাজের ক্ষেত্রের বাহিরে গিয়ে এই কাজগুলো করেছেন।
 
হারুন বলেন, তিনি স্বপ্ন দেখেন তার বিদ্যালয়টি একদিন পড়ালেখা, সাংস্কৃতিক কার্যক্রম ও দৃষ্টিনন্দন বিদ্যালয় হিসেবে দেশের অন্যতম বিদ্যাপীঠে পরিনত হবে।

হারুনের এধরনের সৃজনশীল কাজ সম্পর্কে বলতে গিয়ে নাগরপুর উপজেলার সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার জি এম ফুয়াদ মিয়া বলেন, বিদ্যালয়ের প্রতি ভালোবাসা না থাকলে কেউ মনের মাধুরী মিশিয়ে এমন কাজ করতে পারে না। তার হাতের স্পর্শে যে কাজগুলো দৃশ্যমান হয়েছে তার প্রতিটি পরতে পরতে রয়েছে বিদ্যালয়ের প্রতি হারুনের সুগভীর প্রেম মমত্ববোধ। সে সবার জন্য এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।


 
উপজেলার অন্যান্য বিদ্যালয়ের শিক্ষক শিক্ষার্থী ও দপ্তরি কাম নৈশ প্রহরীরা বিদ্যালয়টি ঘুরে হারুনের কাজ দেখে উচ্ছস্বিত। তারা হারুনকে বাহবা দেওয়ার পাশাপাশি এখান থেকে শিক্ষা নিয়ে তাদের নিজেদের বিদ্যালয়গুলো সাজানোর পরিকল্পনা নিয়ে যাচ্ছে।

এলাকার শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়মূখী করতেই হারুনের এমন প্রচেষ্টা বলে জানান তিনি। তিনি বলেন, গ্রামাঞ্চলের কোমলমতি শিক্ষার্থীদের পার্কে গিয়ে খেলাধুলা করার সুযোগ হয়ে ওঠে না। আমার এ ক্ষুদ্র প্রচেষ্টার মাধ্যমে আমি তাদের সে ব্যবস্থা করে দিয়েছি। স্যারদের কাছ থেকেই জেনেছি পড়ালেখার পাশাপাশি বিনোদনের ব্যবস্থা থাকলে সেখানে শিক্ষার্থীরা আরো বেশি উৎসাহী হয়।

আজকের টাঙ্গাইল
আজকের টাঙ্গাইল