• শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৫ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

আজকের টাঙ্গাইল

ধলেশ্বরী নদীর বুক জুড়ে সবুজের সমারোহ

আজকের টাঙ্গাইল

প্রকাশিত: ১২ এপ্রিল ২০২১  

টাঙ্গাইল সদর উপজেলার খর¯্রােতা ধলেশ্বরী নদীর তলদেশ এখন সবুজের সমারোহ। চাষ হচ্ছে নানা জাতের ফসল। ধলেশ্বরী নদীর বুক চিরে যাওয়া খর¯্রােতের স্থলে শুকনো মৌসুমে আবাদ করা হয়েছে ইরি-২৮ ও ২৯, বোরো ধান, মাসকলাই, বাদামসহ নানা ধরণের সবজি। গত এক দশক যাবত এ নদীর বেশিরভাগ অংশে স্থানীয় কৃষকরা বোরো ধানসহ বিভিন্ন ফসল চাষ করে থাকে। বর্ষা মৌসুম ছাড়া বাকি সময় বিভিন্ন ফসল চাষ হয় এ নদীতে।

সরেজমিনে দেখা যায়, ধলেশ্বরী নদীর বিভিন্ন অংশে নানা ধরণের ফসল চাষ করা হয়েছে। নদীর বুক জুড়ে সবুজ আর সবুজের সমারোহ। নদীটির প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য পরিবর্তন করে বর্তমানে কৃষকের চাষযোগ্য ভূমিতে পরিণত হয়েছে। নদীর উপরে সেতু ছাড়া বোঝার উপায় নেই এটা নদী নাকি ফসলের মাঠ। টাঙ্গাইল সদর উপজেলার হুগড়া, কাকুয়া, কাতুলী, বাঘিল, পোড়াবাড়ি ও ছিলিমপুর ইউনিয়নের প্রায় ২৫ কিলোমিটার অংশে ধলেশ^রী নদীর বুকে ধানসহ বিভিন্ন ফসল ফলানো হচ্ছে।

 
পরিবেশ বাদী সংগঠন বেলার উর্ধ্বতন গবেষণা কর্মকর্তা গৌতম চন্দ্র জানান, টাঙ্গাইলের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে যমুনা নদী থেকে ধলেশ্বরী নদীর সৃষ্টি হয়েছে। নদীটির দুটি শাখা রয়েছে। একটি শাখা পাশের জেলা মাকিগঞ্জের উত্তর দিক দিয়ে প্রবাহিত হয়ে মানিকগঞ্জের দক্ষিণে গিয়ে শেষ হয়েছে। অপরটি গাজীপুরের কালীগঞ্জের সাথে মিলিত হয়েছে। বুড়িগঙ্গা এক সময় ধলেশ্বরীর শাখা ছিল। ধলেশ^রী নদী নানাভাবে প্রবাহিত হয়ে পুনরায় ধলেশ্বরীতেই পতিত হওয়ায় এটাকে ব্যতিক্রম নদী হিসেবে আখ্যা দেওয়া হয়েছে।

কাকুয়া ইউনিয়নের কৃষক বারেক সিকদার বলেন, এ নদী দিয়ে এক সময় নৌকা, স্টিমার ও ইঞ্জিন চালিত নৌকা চলাচল করত। এখন আর আগের মত দীর্ঘ সময় পানি থাকে না। বন্যার সময় ৩-৪ মাস নদীতে পানি থাকে। বছরের বাকি সময়টা শুকনো থাকে। প্রতি বছর বন্যার সময় পলি মাটি জমে থাকায় ফসল ভাল হয়। চর পাকুল্লা গ্রামের রাজা মিয়া, মাহমুদ নগর গ্রামের শহীদ মিয়া বলেন, এক সময় নদী অনেক গভীর ছিল। ফাল্গুন-চৈত্র মাসেও নদীতে নৌকা চলাচল করত। এখন নদী মরে গেছে। অন্য অঞ্চলের মানুষ এখানে এলে বুঝতেই পারবে না এটা খর¯্রােতা ধলেশ^রী। এখন নদী দেখে খালও মনে হয় না। কারণ নদীর তীর নাই, গভীরতা নাই, নদীর বিস্তীর্ণ এলাকায় বালু নাই। যে কারণে স্থানীয় কৃষকরা নদীতে ধানসহ সবজি চাষ করে থাকেন।

ছিলিমপুর ইউপি সদস্য মো. আমিন মিয়া বলেন, ধলেশ্বরী নদী বর্তমানে ফসলের মাঠে পরিণত হয়েছে। পুরো নদীতে বালুর পরিবর্তে উর্বর মাটিতে ভরে গেছে। এ নদীতে ধানসহ যেকোন ফসল চাষ করলে ফলনও ভাল হয়।

কাকুয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শেখ মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ বলেন, কাকুয়া ইউনিয়নের ওমরপুর, দেলদা, রাঙাচিড়া ও চরপৌলী গ্রামের পাশ দিয়ে ধলেশ্বরী নদী বয়ে গেছে। এ ইউনিয়নের পাঁচ কিলোমিটার নদীতে ধান-পাটসহ বিভিন্ন ফসল চাষাবাদ করা হচ্ছে।

পোড়াবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আজমত আলী জানান, তার ইউনিয়নের খারজানা, বাউশা, নন্দিপাড়া, ঝিনাই গ্রামের পাশ দিয়ে প্রায় চার কিলোমিটার নদীর সীমানা। এখন নদী নাই বললেই চলে। নদীর পতিত ভূমিতে বন্যার সময় ব্যতিত বাকি সময় ফসল চাষ হচ্ছে।

এ বিষয়ে টাঙ্গাইল-৫ (সদর) আসনের সংসদ সদস্য মো. ছানোয়ার হোসেন জানান, নদীর নাব্যতা ফিরিয়ে আনার জন্য পানি সম্পদ মন্ত্রাণালয়ে কথা হয়েছে। ধলেরশ^রী, লৌহজং, ঝিনাই নদীসহ কয়েকটি নদীকে এ, বি এবং সি ক্যাটাগরিতে ভাগ করা হয়েছে। ধলেশ^রীকে এ ক্যাটাগরিতে আনা হয়েছে। অচিরেই নদী খনন ও তীররক্ষা বাঁধের কাজ শুরু করা হবে।

আজকের টাঙ্গাইল
আজকের টাঙ্গাইল