• বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১০ ১৪৩১

  • || ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

আজকের টাঙ্গাইল
সর্বশেষ:
আমাদের সকল প্রাপ্তির দ্বার উন্মোচন করে গেছে মুজিব নগর সরকার অস্ট্রেড কমিশনার মনিকা কেনেডিকে ইউসিবি বাংলাদেশের অভ্যর্থনা ইসলামপুরে হিট স্ট্রোকে ব্যবসায়ীর মৃত্যু হিটস্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে যে নির্দেশনাগুলো দিলো স্বাস্থ্য অধিদফতর বাংলাদেশ জলবায়ু উন্নয়ন অংশীদারিত্ব গঠন: প্রধানমন্ত্রী এক্সারসাইজ টাইগার লাইটনিং (টিএল)-২০২৪ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠিত প্রধানমন্ত্রীর থাইল্যান্ড সফরে সই হবে ৫ চুক্তি ও সমঝোতা বাংলাদেশ-অস্ট্রেলিয়ার মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্ক জোরদারের তাগিদ আমরা নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার বৃদ্ধি করেছি: শেখ হাসিনা যুদ্ধের অর্থ জলবায়ু পরিবর্তনে ব্যয় হলে বিশ্ব বাঁচত

দ্য ইস্টার্ন লিংক: যেভাবে নষ্ট করতে চাইছে ভারত-বাংলাদেশের সম্পর্ক

আজকের টাঙ্গাইল

প্রকাশিত: ১ আগস্ট ২০২০  

‘দ্য ইস্টার্ন লিংক’ একটি ভুঁইফোড় নিউজ পোর্টাল, কয়েক মাস আগেও যার নাম কেউ শোনেনি বললেই চলে। এখনও যার নাম অনেকেই জানেনা। কিন্তু এই নিউজ পোর্টালটি বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ককে ক্ষতিগ্রস্ত করার মরিয়া চেষ্টায় যেভাবে ইদানীং আদাজল খেয়ে নেমেছে, তাতে আচমকাই এটি বাংলাদেশ বা ভারতে এক ধরনের নেতিবাচক প্রচার পেয়ে গেছে বলা চলে। এই পোর্টালটির নেপথ্যে আছেন কলকাতাভিত্তিক সুবীর ভৌমিক, যাকে অনেকে ‘ভাড়াটে সাংবাদিক’ বলেও মনে করে থাকেন।

 

সাড়ে চার মাস বয়সী এই পোর্টালটি তাদের ওয়েবসাইটে নিজেদের পরিচিতি দিয়েছে এভাবে- ‘আমাদের ফোকাস হলো এশিয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ লিংক অঞ্চল, পূর্ব ও উত্তর-পূর্ব ভারত, বাংলাদেশ ও মিয়ানমার।’ আর বাংলাদেশ ও ভারতের যে সাংবাদিকরা এই পোর্টালে লেখেন তাদেরও কেউ প্রায় চেনেন না বললেই চলে। অনেকের সন্দেহ এই পোর্টালের বেশিরভাগ নিবন্ধ আসলে সুবীর ভৌমিক বকলমে নিজেই লেখেন।

 

সুবীর ভৌমিক তার সাংবাদিকতার প্রথম জীবনে কলকাতার আনন্দবাজার পত্রিকার আগরতলা প্রতিনিধি ছিলেন। উত্তর-পূর্ব ভারতের নানা বিষয় তখন থেকেই কাভার করে আসছেন তিনি। সেই সময়েই উত্তর-পূর্ব ভারতের বিভিন্ন বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীর মধ্যে তার ‘কনট্যাক্ট’ গড়ে ওঠে। আসামের উলফা প্রধান পরেশ বড়ুয়া বা ‘পিবি’ তাকে কীভাবে বিদেশ থেকে রাত-বিরাতে ফোন করে ঘুম ভাঙাতেন, সে বর্ণনাও তিনি নিজে অনেক লেখাতেই দিয়েছেন।

 

পরে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম বিবিসিতে উত্তর-পূর্ব ভারতের সংবাদদাতা হিসেবে যোগ দেন সুবীর ভৌমিক। বিবিসি থেকে অবসর নেওয়ার পর তিনি বাংলাদেশের বিডিনিউজ২৪-সহ অনেক সংবাদমাধ্যমেই কাজ করেছেন, যার মধ্যে মিয়ানমারের সামরিক জান্তার ঘনিষ্ঠ ‘মিজিমা’ও রয়েছে। ভারতের একটি চিট ফান্ড কেলেঙ্কারিতে তার নাম জড়িয়েছিল। ওই গোষ্ঠীর সংবাদপত্রে তার কী ভূমিকা ছিল সেটা নিয়ে তিনি তদন্তকারীদের জেরার মুখেও পড়েছিলেন। সুবীর ভৌমিকের এই ‘বর্ণময়’ ক্যারিয়ারের সবশেষ উদ্যোগ হলো ‘দ্য ইস্টার্ন লিংক’।

 

এই দীর্ঘ ক্যারিয়ারে একটা অপবাদ অবশ্য সুবীর ভৌমিককে সবসময়েই বয়ে বেড়াতে হয়েছে- তিনি নিরাপত্তা বাহিনীর ‘প্ল্যান্ট’ করা বা ‘ফরমায়েশি’ স্টোরি লেখেন। তাকে বহু বছর ধরে চেনেন, এমন সাংবাদিকরা অনেকেই বাংলা ট্রিবিউনকে বলেছেন, ‘এই দুর্নামটা তার নামের সঙ্গে এমনভাবে সেঁটে গেছে যে, সে জন্যই সুবীর ভৌমিকের স্টোরিকে আজকাল আর কেউ সিরিয়াসলি নেন না!’

 

সম্প্রতি ফটোশপের মাধ্যমে জালিয়াতি করে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের ছবি প্রকাশের পর, তাদের অসৎ উদ্দেশ্য সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা পাওয়া যায়।

 

দ্য ইস্টার্ন লিংকে গত কয়েক মাসে এমন কতগুলো ‘স্টোরি’ তিনি প্রকাশ করেছেন যেগুলো এর জ্বলন্ত উদাহরণ। এই পোর্টালে এমন বহু স্টোরি বেরিয়েছে, যেগুলো পড়লেই বোঝা যায় কোনও একটি বিশেষ গোষ্ঠীর স্বার্থ হাসিল করতেই সেগুলো লেখা হয়েছে।

 

গত ২৯ জুন দ্য ইস্টার্ন লিংকে ‘প্রতিবেদক’ শামসুর নাহার খান একটি নিবন্ধ লিখেছেন, যার শিরোনাম ছিল- ‘রেজিম চেঞ্জ অ্যালার্ট ইন বাংলাদেশ’। অর্থাৎ বাংলাদেশে নাকি ক্ষমতার পালাবদলের প্রতিধ্বনি শোনা যাচ্ছে। কারণ হিসেবে ওই নিবন্ধে বলা হয়েছে, চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান ঘনিষ্ঠতায় দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের একটি বৃহৎ শক্তি নাকি অত্যন্ত ক্ষুব্ধ, আর তারাই এই পালাবদল ঘটাতে চায়। মন্তব্য নিষ্প্রয়োজন।

 

গত ২৫ এপ্রিল সুবীর ভৌমিক নিজে ওই পোর্টালে লিখেছেন- ফ্রান্স টোয়েন্টি ফোরের স্ট্রিঙ্গার জনৈক নির্মলা সাহার একটি প্রতিবেদনের পর নাকি বাংলাদেশের সামরিক ও নিরাপত্তা মহলে হুলুস্থুল পড়ে গেছে। ঝিনাইদহ ক্যাডেট কলেজের সাবেক, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর জনাকয়েক ঊর্ধ্বতন জেনারেল কীভাবে বর্তমান সেনাপ্রধান আবদুল আজিজকে মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই সরাতে চাইছেন, ওই প্রতিবেদনের ঘাড়ে বন্দুক রেখে তিনি তা বিস্তারিত বর্ণনা করেছেন।

 

এর দেড় মাস বাদে অবিকল একই লেখা তিনি লেখেন কলকাতার সুপরিচিত ইংরেজি দৈনিক ‘দ্য টেলিগ্রাফের’ হয়ে। সেখানেও সুবীর ভৌমিক বর্ণনা করেন- সেনাপ্রধান আজিজ আহমেদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিরাপত্তা উপদেষ্টা তারেক সিদ্দিকীর ‘টেনশন’ কীভাবে বাংলাদেশের সামরিক ও নিরাপত্তা বাহিনীর মাঝে অস্থিরতা তৈরি করেছে।

 

সেনাপ্রধান আজিজকে মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই ইউরোপের কোনও দেশে রাষ্ট্রদূত করে পাঠিয়ে দেওয়া হতে পারে, এমনও ইঙ্গিত ছিল ওই লেখায়। সম্প্রতি খুব বিতর্কিত হয়ে ওঠা বাংলাদেশের সাবেক সেনা কর্মকর্তা চৌধুরী হাসান সোহরাওয়ার্দীর খবরও নিয়মিত বেরোচ্ছে দ্য ইস্টার্ন লিংকে।

 

বছর তিনেক আগে মিয়ানমারের সংবাদমাধ্যম ‘মিজিমা’র হয়েও সুবীর ভৌমিক লিখেছিলেন- সেনাবাহিনীর একদল ক্ষুব্ধ কর্মকর্তা নাকি পাকিস্তানের মদতে প্রধানমন্ত্রী হাসিনার প্রাণনাশের চেষ্টায় লিপ্ত। রোহিঙ্গা সংকটে নাজেহাল বাংলাদেশ তখন মিয়ানমারের সঙ্গে কূটনৈতিক বিরোধে জড়িয়ে পড়েছে, আর মিয়ানমারের ফরমায়েশে স্পষ্টতই তখন সুবীর ভৌমিকের উদ্দেশ্য ছিল ঢাকার ফোকাসটা পাকিস্তানের দিকে ঘুরিয়ে দিয়ে মিয়ানমারকে রেহাই দেওয়া।

 

‘ভাড়াটে সাংবাদিক’ সুবীর ভৌমিক তখন মিয়ানমারের হয়ে কাজ করছিলেন। আর এখন ইস্টার্ন লিংকের হয়ে তিনি এমন একটি গোষ্ঠীর স্বার্থে সক্রিয়- যারা চায় না বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক দৃঢ় ও অটুট থাকুক।

 

 এক নজরে সুবীর ভৌমিকের দ্য ইস্টার্ন লিংকের বানোয়াট সব খবরের চিত্র:

The Eastern Link: The way India-Bangladesh relations are being ruined

 

The Eastern Link: The way India-Bangladesh relations are being ruined

 

The Eastern Link: The way India-Bangladesh relations are being ruined

 

The Eastern Link: The way India-Bangladesh relations are being ruined

 

The Eastern Link: The way India-Bangladesh relations are being ruined

 

 

 

আজকের টাঙ্গাইল
আজকের টাঙ্গাইল