• মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ৫ ১৪৩০

  • || ০৮ রমজান ১৪৪৫

আজকের টাঙ্গাইল

দেশের কর্মসংস্থানে ৭৫০ কোটি টাকা

আজকের টাঙ্গাইল

প্রকাশিত: ১৪ আগস্ট ২০২০  

বৈশ্বিক মহামারি করোনা ভাইরাসের (কভিড-১৯) প্রাদুর্ভাবে বিপর্যস্ত বিশ্ব অর্থনীতি। বিশ্বব্যাপী কর্মসংস্থানে বড় ধরনের প্রভাব পড়েছে। বিপুলসংখ্যক মানুষ চাকরি হারিয়ে কর্মহীন হয়ে পড়েছেন। নতুন করে সৃষ্টি হচ্ছে না কর্মসংস্থান। বাড়ছে বেকারত্ব। নতুন করে চাকরিচ্যুতির ঘটনাও অব্যাহত রয়েছে। অনেকেরই চাকরি আছে, বেতন নেই। বিশ্বের অনেক দেশের মতো বাংলাদেশেও এ চিত্র। করোনার কারণে বাংলাদেশের সার্বিক অর্থনীতি নাজুক। ফলে অসংখ্য মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়েছেন। বিদেশ ফেরত প্রবাসীরাও এর শিকার। ফলে বেকারত্বের ঝুঁকি প্রতিনিয়ত বাড়ছে। এ প্রেক্ষাপটে অর্থনীতির চাকা গতিশীল, দারিদ্র্য বিমোচন এবং নতুন করে কর্মসংস্থানের জন্য ৭৫০ কোটি টাকার বিশেষ বরাদ্দ দিয়েছে সরকার। কর্মসৃজনের জন্য রাষ্ট্রায়ত্ত পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক, প্রবাসীকল্যাণ ব্যাংক এবং কর্মসংস্থান ব্যাংকের প্রত্যেককে ২৫০ কোটি টাকা করে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

 

গত ৬ আগস্ট এ সংক্রান্ত বরাদ্দের বিষয়ে পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক, প্রবাসীকল্যাণ ব্যাংক এবং কর্মসংস্থান ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের কাছে চিঠি পাঠিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ। খবর আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ সূত্রের।

 

করোনার প্রাদুর্ভাব মোকাবিলায় এবং অর্থনীতিতে গতি ফেরাতে বিভিন্ন সেক্টরে কর্মসংস্থান তৈরির পাশাপাশি উৎপাদন ও সরবরাহ অব্যাহত রাখতে চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরের অপ্রত্যাশিত ব্যয় খাত থেকে ২৫০ কোটি টাকা করে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এ অর্থ ছাড় করতে ইতোমধ্যে আদেশ জারি করা হয়েছে। এ বিষয়ে অর্থ বিভাগের এক কর্মকর্তা বলেন, করোনার কারণে বিদেশ থেকে চলে আসা শ্রমজীবী মানুষকে সহায়তার জন্য রাষ্ট্রীয় উচ্চপর্যায় থেকে দুই হাজার কোটি টাকার একটি ফান্ড গঠনের কথা বলা হয়েছিল। এরই অংশ হিসেবে বাজেট থেকে ব্যাংকগুলোকে সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। এই প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রত্যেককে আড়াইশ কোটি টাকা করে দেওয়া হচ্ছে। তারা এই টাকা কর্মসৃজনমূলক কাজে ব্যয় করবে। এই অর্থ ফেরত দেওয়ার প্রয়োজন পড়বে না। অন্য ব্যাংকগুলোকে এ সহায়তা দেওয়া হবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, মূলধন ঘাটতির জন্য আর কোনো ব্যাংককে অর্থ দেওয়া হবে না।

 

আইএলওর তথ্যমতে, এশিয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের ৭০ শতাংশ কর্মীই কর্মহীন হওয়ার ঝুঁকিতে

রয়েছে। বাংলাদেশের পরিস্থিতিও মোটেই সুখকর নয়। নতুন করে কতসংখ্যক মানুষ বেকার হবেন, তার সুনির্দিষ্ট পরিসংখ্যান এখনই বলা যাবে না। তবে এশিয়ার অন্য দেশের মতো বাংলাদেশও উচ্চঝুঁকিতে রয়েছে। দেশের অন্তত কোটি মানুষ নতুন করে দরিদ্র হবেন। এ পরিস্থিতি দীর্ঘায়িত হলে বেকারত্বের সঙ্গে বাড়বে সামাজিক সংকটও। এরই মধ্যে কয়েক লাখ মানুষ বেকার হয়ে পড়েছেন। আর জীবন-জীবিকার যুদ্ধে পরাজিত হয়ে লক্ষাধিক পরিবার ঢাকা ছেড়েছে বলে ইতোমধ্যে গণমাধ্যমে খবর এসেছে।

 

জানতে চাইলে পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আকবর হোসেন আমাদের সময়কে বলেন, কীভাবে এ অর্থ বরাদ্দ করা হবে তার একটি নীতিমালা প্রণয়ন করা হচ্ছে। আমাদের পরিচালনা পরিষদ ইতোমধ্যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যারা আমাদের প্রকল্প থেকে ঋণ নিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, তাদের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পুনঃঅর্থায়ন করা হবে। এ ছাড়া নতুন উদ্যোক্তা তৈরি করতে ৪০-৫০ হাজার টাকা ঋণ দেওয়া হবে।

 

সরকারি তথ্যমতে, কোভিড ১৯ কেন্দ্র করে চলতি বছরেই অন্তত ১০ লাখ প্রবাসী দেশে ফিরে এসেছেন। তাদের বেশিরভাগই ফিরে যাওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ। এ অর্থ বিদেশ থেকে ফিরে আসা যুবক ও অন্য বেকার যুবকদের কর্মসংস্থানে ঋণ হিসেবে দেওয়া হবে। এর সুদের হার হবে খুব অল্প। এর মাধ্যমে দেশের বেকারত্ব সমস্যা অনেকটাই কাটবে বলে মনে করছে সরকার। চলতি অর্থবছরের বাজেটে কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য ২ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে।

 

অর্থবিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, ফিরে আসা প্রবাসীদের যারা ক্ষুদ্র ব্যবসা করতে আগ্রহী তাদের মাঝে বিতরণের জন্য আমরা ইতোমধ্যে তিনটি বিশেষায়িত ব্যাংক এবং পিকেএসএফের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করেছি। এ ক্ষেত্রে শূন্য সুদের (সুদমুক্ত) হারে তাদের ঋণ দেওয়ার ব্যাপারেও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আশা করা হচ্ছে, সরকারের এই উদ্যোগ বেকারত্ব ঘোচাতে বেশ কার্যকর ভূমিকা রাখবে।

আজকের টাঙ্গাইল
আজকের টাঙ্গাইল