• শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৫ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

আজকের টাঙ্গাইল

দেশে প্রথম করোনা চিকিৎসার রেমিভির-১০০ উৎপাদন করল এসকেএফ

আজকের টাঙ্গাইল

প্রকাশিত: ৯ মে ২০২০  

প্রাণঘাতি করোনা ভাইরাস প্রতিরো’ধে কার্যকর ওষুধ রেমিভির-১০০ (Remivir-100) নামে রেমডেসিভির (Remidesivir INN Lyophillized Powder for IV Injection) উৎপাদন সম্পন্ন করেছে দেশের খ্যাত’নামা ওষুধ প্রস্তুত’কারী প্রতিষ্ঠান এসকেএফ ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড।

উৎপাদনের সব প্রক্রিয়া শেষ করার পর আজ শুক্রবার সকালে শুরু হয়েছে বাজারজাত করার প্রস্তুতি।

এসকেএফের ব্যবস্থাপনা পরিচাল’ক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সিমিন হোসেন বলেন, ‘করোনা–পরিস্থি’তি নিয়ে দেশের এই ক্রান্তি’লগ্নে আমরা দেশ’বাসীকে এই সুখবর দিতে চাই যে বিশ্বে করোনার একমাত্র কার্যকর ওষুধ বলে স্বীকৃত জেনেরি’ক রেমডেসিভির (Remidesivir INN Lyophillized Powder for IV Injection) উৎপাদনের সব ধাপ আমরা সম্পন্ন করেছি।’

করোনার রোগী’দের চিকিৎসায় মার্কিন প্রতিষ্ঠান গিলিয়েড সায়েন্সেস কোম্পানি’র তৈরি এই ওষুধ সারা বিশ্বে সাড়া ফেলেছে। যুক্তরাষ্ট্রে’র ওষুধ প্রশাসন (এফডিএ) গত সপ্তাহে করোনা’র ওষুধ হিসেবে রেমডেসিভির’কে (Remidesivir INN Lyophillized Powder for IV Injection) ব্যবহারের অনুমোদ’ন দেয়। জাপানের ওষুধ প্রশাসন ৭ মে থেকে ওষুধটি করোনার রোগীদের ওপর প্রয়োগে’র অনুমতি দিয়েছে। তবে কবে নাগাদ জাপান এর উৎপাদনে যাবে, তা এখনো ঠিক হয়নি বলে সে দেশের একজন স্বাস্থ্য কর্মকর্তা রয়টার্সকে জানিয়েছেন। মার্কিন প্রতিষ্ঠান গিলিয়েড সায়েন্সে’স ওষুধটি উৎপাদনের জন্য ভারত ও পাকিস্তানের বড় প্রতিষ্ঠান’গুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করছে বলেও খবরে জানা গেছে।

এ অবস্থায় এসকেএফই বিশ্বে প্রথম ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান, যারা জেনে’রিক (মূল/গোত্র) রেমডেসিভির (Remidesivir INN Lyophillized Powder for IV Injection) উৎপাদ’ন করতে সক্ষম হলো। এসকেএফের উৎপাদন করা রেমডেসিভিরে’র বাণিজ্যিক নাম ‘রেমিভির’ (Remivir-100)

সিমিন হোসেন বলেন, ‘ওষুধ প্রশাসন গত মার্চ মাসে ওষুধটি ব্যবহারের অনুমতি দেয়। ওষুধ প্রশাসনের অনুমোদনের পরপরই আমাদের ফর্মুলেশন বিজ্ঞানী’রা মার্চ মাসের মাঝামাঝি সময়ে রেমডেসিভি’র (Remidesivir INN Lyophillized Powder for IV Injection) নিয়ে কাজ শুরু করেন। যেহেতু এটি একটি শিরায় দেওয়া ইনজেকশন, সে কারণে এর উৎপাদনে সূক্ষ্ম প্রক্রিয়া অনুসর’ণ করতে হয়। দুই মাস ধরে এসকেএফের কর্মীদের নিরলস পরিশ্রমের ফলেই এত কম সময়ে এটা উৎপাদন করা সম্ভব হয়েছে। ওষুধের মূল উপাদান সরবরাহকারীদে’র সঙ্গে চুক্তি করে পর্যাপ্ত কাঁচামালের প্রাপ্য’তা নিশ্চিত করেছি আমরা।’

করোনা’ভাইরাস বা কোভিড-১৯ রোগের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি কার্যকারিতা দেখিয়েছে রেমডেসিভির (Remidesivir INN Lyophillized Powder for IV Injection)। গিলিয়েডে’র নিজস্ব পরীক্ষায় দেখা গেছে, এই ওষুধ ব্যবহারে রোগীদের অবস্থার উন্নতি হয়েছে। মানুষের শিরায় ইনজেকশন হিসেবে এই ওষুধ প্রয়োগ করতে হয়। রোগের তীব্রতার ওপর এর ডোজ নির্ভর করে। গুরুতর অসুস্থ রোগীদের জন্য ৫ অথবা ১০ দিনের ডোজ প্রয়োজ’ন হতে পারে।

রেমডেসিভির (Remidesivir INN Lyophillized Powder for IV Injection) উৎপাদনের একচেটিয়া স্বত্ব রয়েছে গিলিয়েডের। তবে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য আইন অনুযায়ী, জাতিসংঘস্বীকৃত বাংলাদেশের মতো স্বল্পোন্নত দেশগুলো এসব পেটেন্ট বা স্বত্ব অগ্রাহ্য করতে পারে। ফলে এসব দেশ সহনীয় মূল্যে ওষুধ উৎপাদন করতে পারে। তবে এই ওষুধ বর্তমানে খোলা বাজারে দেওয়া হবে না। এটা দেওয়া হবে করোনার চিকিৎসার জন্য সরকার অনুমোদিত হাসপাতাল বা ক্লিনিককে।

যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ ও আমেরিকার ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব অ্যালার্জি অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজেসের পরিচালক অ্যান্থনি এস ফাউসি হোয়াইট হাউসে এক আলোচনায় বলেন, করোনা থেকে দ্রুত সেরে ওঠার ক্ষেত্রে রেমডেসিভিরের (Remidesivir INN Lyophillized Powder for IV Injection) ইতিবাচক প্রভাব পরিষ্কার। আর এই ওষুধ যেহেতু কাজ করছে বলে পরিষ্কার প্রমাণ মিলেছে, তখন তা দ্রুত মানুষকে জানানো নৈতিক বাধ্যবাধকতার মধ্যে পড়ে।

শিল্পপতি লতিফুর রহমানের নেতৃত্বাধীন ট্রান্সকম গ্রুপের অন্যতম প্রতিষ্ঠান এসকেএফ ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড ৩০ বছর ধরে ওষুধ উৎপাদন করে আসছে। প্রতিষ্ঠানটি দেশের বাইরে ইউরোপ, অস্ট্রেলিয়া, আফ্রিকা ও এশিয়া মহাদেশের ৩০টি দেশে ওষুধ রপ্তানি করে আসছে।

আজকের টাঙ্গাইল
আজকের টাঙ্গাইল