• শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৬ ১৪৩১

  • || ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

আজকের টাঙ্গাইল

ময়ূরীর কাছে বিএনপি’র মনোনয়ন বিক্রি:

দলটি’র রুচিহীনতার বহিঃপ্রকাশ

আজকের টাঙ্গাইল

প্রকাশিত: ১৪ নভেম্বর ২০১৮  

প্রকৃত নাম মুনমুন আক্তার লিজা। চলচিত্রে তার নাম ময়ুরী ও বর্তমান নাম খাদিজা ইসলাম। তবে ময়ূরী নামেই যার একক পরিচিতি, আর পরিচিতি এমনিতেই আসেনি। এসেছে অশ্লীল বা অর্ধনগ্ন পোষাকে অভিনয় করার জন্য।

 

নতুন করে বিএনপি’র মনোনয়ন ফরম ক্রয়ের মাধ্যমে আবারও এসেছেন আলোচনায়।

 

১৯৯৮ সালে “মৃত্যুর মুখে” চলচ্চিত্রে অভিনয় করার মধ্যে দিয়ে হাতেখড়ি হয় ময়ূরীর। মাহমুদ নামক একজন প্রযোজকের মাধ্যমে চলচ্চিত্রে এসেছিলেন তিনি। চলচ্চিত্রের পরিচালক ছিলেন আবিদ হাসান। কিন্তু শেষ পর্যন্ত চলচ্চিত্রটিতে ময়ূরী ছিলেন না।

 

পরবর্তী সময়ে খোলামেলা পোষাকে অশ্লীল নায়িকার চরিত্রে অভিনয়ের মধ্যে দিয়ে সমাজের একটি অংশে জনপ্রিয়তা পান। পক্ষান্তরে অশ্লীল চলচ্চিত্র নায়িকার উপাধি লাভ করেন।

সম্প্রতি বিএনপি থেকে মনোনয়ন পত্র সংগ্রহের খবর মিডিয়ায় ছড়িয়ে পরলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হৈচৈ পরে যায়।

যে কারনে বিএনপি’র যারা সমর্থক তারাও ময়ূরীর এই মনোনয়ন সংগ্রহের সংবাদে বিব্রত। অনেকেই দলের কেন্দ্রিয় নেতাদের নির্বুদ্ধিতার ও রুচি-জ্ঞান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। যেখানে আওয়ামলীগ থেকে প্রগতিশীল দেশ প্রেমিক মূল ধারার শিল্পিদের বিশেষ করে রোকেয়া প্রাচী, শমি কায়সারদের মতো নারী মনোনয়ন প্রত্যাশিদের কাছে মনোনয়ন ফরম বিক্রি করছেন। সেখানে আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ময়ুরী’র মতো অশ্লীল চলচ্চিত্র নায়িকার কাছে বিএনপি’র মতো একটি দলের মনোনয়ন ফরম বিক্রি করা তাদের রাজনৈতিক দেওলিয়াপনা স্পষ্ট প্রকাশ।

 

উল্লেখ্য, অশ্লীল চলচিত্র থেকে অবসর নেওয়ার পরে ময়ূরী "নিউ অপেরা সার্কাস" নামে সার্কাস দলে যোগ দিয়েছিলেন। সার্কাস দলের সাথে তিনি সারাদেশে ঘুরে বেড়াতেন। তিনি দলের নর্তকী ও অভিনেত্রী ছিলেন।

 

২০০৯ সালে অশ্লীল বা অর্ধনগ্ন পোষাকে ময়ূরীর অভিনয় দেখে টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলার বিএনপি’র নেতা ও উপজেলা ভাইচ চেয়ারম্যান রেজাউল করিম মিলন তাকে বিয়ে করার জন্য পছন্দ করেন। বিভিন্ন সূত্রে জানা যায় বিএনপি নেতা রেজাউল করিম মিলন বিয়ের আগেই ময়ুরী’র সাথে দৈহিক সম্পর্ক গড়ে তুলেন। ঐ সময় ময়ুরী রাজনৈতিক সুবিধা পাওয়ার উদ্দেশ্যে তাদের দৈহিক সম্পর্কের ভয়ভিতি’র ‍হুমকি দিয়ে বিএনপি নেতা রেজাউল করিম মিলনকে বিয়ে করেন। সে সাথে বিএনপি’র বিভিন্ন নেতার সঙ্গে ময়ূরীর ব্যক্তিগত সম্পর্ক তৈরী হয়। বিএনপি’র বিভিন্ন নেতার সাথে ব্যক্তিগত সম্পর্কের তথ্য রেজাউল করিম মিলন জানতে পেরে ময়ুরী’কে তালাক দেয়। এরপর ময়ূরী শ্রাবন শাহ নামক একজন অভিনেতাকে বিয়ে করেন। কিছুদিনের মধ্যে তার সাথেও বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে যায়।

 

এরপর ২০১৭ সালে গাজীপুরের একটি মাদ্রাসার শিক্ষককে তিনি বিয়ে করেন। তার তৃতীয় স্বামীর নাম শফিক জুয়েল। নতুন স্বামীর সাথে তিনি এখন টঙ্গীতে বসবাস করছেন। নিজের উপার্জনের টাকা দিয়ে তিনি মগবাজারে একটি ফ্ল্যাট কিনেছিলেন ময়ূরী। সেই ফ্ল্যাট বিক্রি করে দিয়ে তিনি এখন টঙ্গীতে স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন।

হঠাকরে তার একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ গ্রহনের নেপথ্যে অন্যকোন মটিভ কাজ করছে কিনা, তা অনেকেরই প্রশ্ন?

জনপ্রিয় ব্লগ সাইট Somewhereinblog নামকে ব্লগে তাকে নিয়ে লেখা একটি পোস্ট তারই ইঙ্গিত দিচ্ছে। লেখাটি হুবহু এখানে তুলে ধরা হলো।

 

“শুনলাম, ১৮+ জোটের পক্ষ থেকে নাকি চিত্রনায়িকা "খোদার খাসী ময়ুরী"কে আগামি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থিতার নমিনেশন দেওয়ার চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে? "ময়ুরী বিম্পিতে যোগ দিচ্ছে"; ভালো কথা। "ময়ুরী আগামীতে বিম্পির পক্ষ থেকে,মনোনীত সংসদ সদস্য হবে"; ভালো কথা।কিন্তু,আমার প্রশ্ন একটাই. বর্তমানে লোকাল মার্কেটের সিডির দোকানে এবং গ্রামগঞ্জের চা-ষ্টল গুলোতে "ময়ুরীর গরম কালেকশান"/"ঝাকানাকা ময়ুরী"/"হট ময়ুরী"/"নাইট কুইন ময়ুরী"/"ময়ুরীর যৌবন জ্বালা" নামক যেসব অশ্লীল পর্ণো সিডিগুলো ওপেনে পাওয়া যায়, ১৮+ জোটের সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য হিসেবে মনোনয়ন পাওয়ার পর ঐসব অশ্লীল এবং পর্ণো সিডিগুলো কি লোকাল মার্কেট থেকে সম্পূর্ণভাবে ব্যানড/নিষিদ্ধ হবে? নাকি "ঝাকানাকা ময়ুরী"/"নাইট কুইন ময়ুরী" নাম পাল্টিয়ে পূর্বের সিডিগুলোই,"এমপি ময়ুরী"/"সাংসদ ময়ুরী" নামে গোপনে গোপনে আণ্ডারগ্রাউণ্ড মার্কেটে বিক্রি হতেই থাকবে? কোনটা ঘটবে? জাতির বিবেকের কাছে,প্রশ্ন রইলো।”

 

আজকের টাঙ্গাইল
আজকের টাঙ্গাইল