• শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৬ ১৪৩১

  • || ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

আজকের টাঙ্গাইল

জাদুটোনা থেকে যেভাবে নিজেকে রক্ষা করবেন!

আজকের টাঙ্গাইল

প্রকাশিত: ২৫ জুন ২০১৯  

জাদুটোনা-তাবিজ-কবজ কিংবা কুফরি কালাম থেকে বাঁচতে আমাদের যেমন সঠিক আমল করা জরুরি। তেমনি আক্রান্ত হয়ে গেলে তা থেকে বাঁচতে সঠিক তদবির গ্রহণ করাও জরুরি। 

জাদুটোনা কিংবা কুফরির মাধ্যমে মানুষের মারাত্মক ক্ষতি হয়ে যায়। তা থেকে বেঁচে থাকতে রয়েছে আমল ও দোয়া। এ জাদুটোনা মানুষ এবং বদ-জ্বীনের কুপ্রভাবে হয়ে থাকে।

 

জাদুটোনার প্রভাব থেকে মুক্তির জন্য কিছু আমল, উপায় ও পদ্ধতি নিম্নে তুলে ধরা হলো-

 

জাদুটোনার ধরণ বুঝে পদক্ষেপ গ্রহণ: 

মানুষের ক্ষতি কী ধরণে জাদুটোনা দ্বারা করা হয়েছে প্রথমেই সে সম্পর্কে জেনে নিতে হবে। আর তা জানতে সক্ষম হলে জাদুর জিনিসগুলো ধ্বংসের মাধ্যমেই তা থেকে মুক্ত হওয়া যায়। যেমন- কোনো নির্দিষ্ট স্থানে কিংবা নির্দিষ্ট কোনো জিনিসের মাধ্যমে হতে পারে তা মানুষের চুল, ব্যবহৃত চিরুনি, পানি পানের গ্লাস বা মগ কিংবা অন্য কোনো ব্যবহৃত জিনিস। তবে সে সব জিনিস আগুণে কিংবা পানি দ্বারা নষ্ট করে দিতে হবে।

 

জাদুকার চিহ্নিত করা: 

কোন ব্যক্তির দ্বারা ক্ষতিকর জাদুটোনা করা হয়েছে, সম্ভব হলে তা জেনে নেয়া। জাদুটোনাকারী কে? তা জানতে পারলে সে ব্যক্তিকে তা নষ্ট করতে বাধ্য করা। জাদুটোনাকারী ব্যক্তিকে তা নষ্ট করার পর তাওবা করানো। ইসলামে জাদুটোনাকারীকে হত্যার নির্দেশ এসেছে। মুসলিম (ইসলামি শাসন প্রক্রিয়ায়) শাসকের ওপর দায়িত্ব হলো জাদুকারীকে তাওবার আহ্বান না করেই হত্যা করা।

 

হজরত ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত হাদিস পাকে প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, ‘জাদুকরের শাস্তি হচ্ছে তলোয়ারের আঘাতে তার গর্দান ফেলে দেয়া।’ ফলে হজরত হাফসা রাদিয়াল্লাহু আনহা যখন জানতে পারলেন যে, তার এক বাদী জাদুটোনা করে, তখণ তাকে হত্যা করা হয়।

 

ঝাঁড়ফুঁকের মাধ্যমে জাদুটোনা নষ্ট করা: 

জাদু নষ্ট করার ক্ষেত্রে ঝাড়ফুঁকের রয়েছে বড় ধরনের প্রভাব। আর তাহলো এমন, ‘জাদুটোনায় আক্রান্ত ব্যক্তির ওপর অথবা কোনো একটি পাত্রের পানিতে আয়াতুল কুরসি অথবা সূরা আরাফ, সূরা ইউনুস, সূরা ত্বহা এর যাদু বিষয়ক আয়াতগুলো পড়ে দম করা এবং তা পান করা।

 

হজরত ওয়াহাব রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন, যে ব্যক্তি জাদু-টোনার শিকার হয়, তাকে জাদুর প্রভাব থেকে মুক্ত করতে হলে নিম্নোক্ত আমলটি করতে হবে। আর তা হলো, ‘কুলের সাতটি পাতা পাটায় বেটে পানিতে মিশাতে হবে। অতঃপর আয়াতুল কুরসি পড়ে ওই পাটা পাতার ওপর ফু দিতে হবে। সেগুলো পানির সঙ্গে মিশাতে হবে। তা থেকে জাদুকৃত ব্যক্তিকে তিন ঢোক পানি পান করাতে হবে। অবশিষ্ট পানি দিয়ে গোসল করাতে হবে। ইনশাল্লাহ! এ আমলের কারো প্রতি জাদু ক্রিয়া হয়ে থাকে; তবে তা নষ্ট হয়ে যাবে।

 

জাদুটোনা থেকে বাঁচার আমল: 

নিয়মিত আয়াতুল কুরসি, সূরা কাফিরুন, সূরা ইখলাস, সূরা নাস ও সূরা ফালাক পড়া। 

 

এবং নিয়মিত নিম্নের দোয়াটি পড়া-

 

اَللَّهُمَّ رَبَّ النَّاسِ أذْهِبِ الْبَأسَ وَاشْفِ أنْتَ الشَّافِيْ لَا شِفَاءَ إلَّا شِفَاؤُكَ ، شِفَاءً لَا يُغَادِرُ سَقَمَا

 

উচ্চারণ : ‘আল্লাহুম্মা রাব্বান নাস! আজহিবিল বাস। ওয়াশফি আনতাশ শাফি। লা শিফাআ ইল্লা শিফাউকা, শিফাআন লা ইয়ুগাদিরু সাকামা।’

 

অর্থ : ‘হে আল্লাহ, হে মানুষের প্রতিপালক! আপনি কষ্ট দূর করে দিন ও সুস্থতা দান করুন। (কেননা) আপনি রোগ থেকে সুস্থতা দানকারী। আপনার সুস্থতা দানই হচ্ছে প্রকৃত সুস্থতা দান। আপনি এমনভাবে সুস্থতা দান করুন, যাতে তা রোগকে নির্মূল করে দেয়।’

 

হজরত জিবরাঈল (আ.) এর দোয়া:

বিশ্বনবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জন্য হজরত জিবরাঈল আলাইহিস সালাম এ দোয়া পড়ে ঝাঁড়ফুঁক করেছিলেন।

 

জিবরিলের দোয়াটি পড়া-

 

بِاسْمِ اللهِ أَرْقِيكَ، مِنْ كُلِّ شَيْءٍ يُؤْذِيكَ، مِنْ شَرِّ كُلِّ نَفْسٍ أَوْ عَيْنِ حَاسِدٍ، اللهُ يَشْفِيكَ بِاسْمِ اللهِ أَرْقِيكَ

 

উচ্চারণ : ‘বিসমিল্লাহি আরক্বিকা মিন কুল্লি শাইয়িন ইয়ুজিকা। মিন শাররি কুল্লি নাফসিন আও আইনি হাসিদিন; আল্লাহু ইয়াশফিকা । বিসমিল্লাহি আরক্বিকা।’

 

অর্থ : ‘আল্লাহর নামে সব কষ্টদায়ক বিষয় থেকে আমি আপনাকে ঝাঁড়ফুঁক করছি। প্রত্যেক আত্মা ও ঈর্ষাপরায়ণ চোখের অনিষ্ট থেকে। আল্লাহ আপনাকে সুস্থতা দান করুন। আল্লাহর নামে আমি আপনাকে ঝাড়ফুঁক করছি।’

 

মহান রাব্বুল আলামিন আল্লাহ তায়ালা মুসলিম উম্মাহকে উল্লেখিত আমল, দোয়া ও উপায়গুলো মেনে চলার মাধ্যমে ক্ষতিকর সব জাদুটোনা থেকে হেফাজত থাকার তাওফিক দান করুন। আল্লাহুম্মা আমিন।

আজকের টাঙ্গাইল
আজকের টাঙ্গাইল