• শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৬ ১৪৩১

  • || ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

আজকের টাঙ্গাইল

ঘাটাইলে হজ্বের টাকায় ৫ হাজার হতদরিদ্রের মাঝে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ

আজকের টাঙ্গাইল

প্রকাশিত: ১৬ এপ্রিল ২০২০  

মহামারী করোনাভাইরাস সংক্রমণ ঠেকাতে টাঙ্গাইল  জেলাজুড়ে ঘোষিত ‘লকডাউন’ চলছে। জেলায় সর্বত্র এখন জনমানব শূন্য। 

 

ফলে সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ এখন চরম বিপাকে। ক্রমে নাভিশ্বাস উঠছে দিন মজুরদের। কর্মহীন হয়ে পড়ায় সংসার চালানো কঠিন হয়ে পড়েছে। 

 

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে হোম কোয়ারেন্টিনে থাকা মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে  ব্যক্তিগত  অর্থে খাদ্য সামগ্রী  পৌঁছে  দিচ্ছেন টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার ১নং দেউলাবাড়ি ইউনিয়নের পাকুটিয়া গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ আব্দুল খালেক খানের ছেলে মোঃ হারুন অর রশীদ খান।  

 

মানবতার অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করে গোটা উপজেলা জুড়ে প্রশংসার জোয়ারে ভাসছেন।  ইতি মধ্যেই তিনি প্রায় ৭  হাজার  মানুষের মাঝে চাল,ডাল,আটা,আলু,তৈল,লবণ  ও সাবান উপহার ( ত্রান) দিয়ে কঠিন এই দূর সময়ে অসহায়,হত দরিদ্রও ভূবুক্ষ মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে মানবতার ফেরিওয়ালা হিসাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হয়েছেন।  

 

মায়ের নির্দেশে তার ব্যাক্তিগত অর্থায়নে গোটা ইউনিয়ন জুড়ে প্রতিটি গ্রামের মসজিদের ইমাম সাহেবদের কাজ থেকে দরিদ্র মানুষের নাম জোগাড় করে প্রতিটি ঘরে ঘরে এ সব খাদ্য সামগ্রী তিনি পৌছে দিচ্ছেন। মহৎ এই মানুষটি রাত দিন পরিশ্রম করে মানুষের ঘরে ঘরে যে ভাবে সাহায্য করে যাচ্ছেন বর্তমান সমাজ ব্যবস্থায় এটি একটি বিরল দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবেন বলে অভিমত জানিয়েছেন অভাবী হাজারোও মানুষ।     

 

এসময় হারুন র রশিদ বলেন,  সমাজে যারা বিত্তবান আমি চাই তাদের হাত প্রসারিত হোক । আমি শুরু করেছি আপনার  শেষ করবেন। আমি ঘুরে ঘুরে একটা জিনিস দেখেছি যে টা হলো যারা চাইতে পারেনা তারাই বিপদ গ্রস্থ তাদেরকে  আপনার সহযোগীতা করবেন  এটা আশা রাখি। সারা দেউলাবাড়ী ইউনিয়নের  যারা বৃত্তবান  আছেন  তাড়া যদি এগিয়ে আসেন তাহলে ইউনিয়নের কেউ না খেয়ে থাকবে না।  

আমি আমার   মা স্ত্রী ২ সন্তানসহ  এ বছর পবিত্র ওমরা হজ্জ পালনের  উদ্দেশে পবিত্র মক্কা যাব এ জন্য পাসপোট করেছিলাম  টাকাও জমা দিয়েছিলাম। আমার মায়ের নির্দেশে  সেই টাকা গুলো উত্তোলন করে সেগুলো বিতরণ করতেছি। 

 

আমি মনে করি হজের চেয়ে এই কাজটা করা জরুরী  যার কারণে আমি হজ্জের টাকা খরচ করছি। শুধু মাত্র গণমানুষের কথা ভেবে  ভবিষ্যতে কোন কিছু পাওয়ার উদ্দেশ্যে নয় কোন কিছু চাওয়ার উদ্দেশ্যে নয়। আমি গণ মানুষের পাশে সারা জীবন থাকতে চাই। যদি  মহামারী দীর্ঘ মেয়াদী হয় আমার প্রচেষ্টা আমার প্রচেষ্ঠা অব্যহত থাকবে। 

 

আমার ব্যক্তিগত প্রচেষ্ঠা ব্যক্তিগত উদ্যোগ ততখন পর্যন্ত বহাল থাকবে আমার পৈত্রিক সহায় সম্পত্তি যতক্ষণ পর্যন্ত আছে। আমি সহায় সম্পত্তির মালিক না  নিজে কোন সম্পত্তি করিনাই । কোন টাকা পয়সা আমার কাছে নাই। হজে যাওয়ার জন্য কিছু জমি বিক্রি করা হয়েছিল। আর আমি গভমেন্ট চাকরি করতাম ২৭ বছর । 

 

২৭ বছরে ২৭ পয়সাও জমা করিনাই ।  কিন্তু সরকারী বাধ্যবাধকতার কারনে অনবধ্য কারন বশত হজ্জে যেতে না পেরে সেই টাকা উত্তোলন করে জনম দুঃখিনী মায়ের নির্দেশ পালন করার জন্যই এ সব কার্যক্রম পরিচালনা করছেন এবং এটা চলমান থাকবে।   

 

দরিদ্র দিনমজুর মানুষেরা কর্মসংকটে পড়ে সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন। তাই অতিদরিদ্র, দিনমজুর, কর্মহীন বেকার ও অসচ্ছল এই মানুষদের ঘরে ঘরে খাদ্যসামগ্রী  পৌঁছে দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছি, তিনি অনুরোধ করে বলেন সমাজের বিত্তবানরা করোনায় দারিদ্র দিনমজুর মানুষের পাশে এগিয়ে আসার জন্য। 

 

তিনি আরো বলেন সবাই যার যার ঘরে থাকুন, ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন, নিরাপদ থাকুন। করোনা ভাইরাস থেকে বাচতে জনসমাগম এড়িয়ে  চলুন। অন্তত ৩ ফুট দুরত্ব বজায় রাখুন। সব সময় পরিস্কার থাকুন, পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখুন।

আজকের টাঙ্গাইল
আজকের টাঙ্গাইল