• শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৬ ১৪৩১

  • || ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

আজকের টাঙ্গাইল

ঘাটাইলে এ এক অন্যরকম ঈদ

আজকের টাঙ্গাইল

প্রকাশিত: ২৫ মে ২০২০  

পুরো বিশ্বে এক অন্যরকম ঈদ পালিত হচ্ছে। মুসলিম উম্মাহ্’র কাছে এবারের ঈদুল ফিতর ও করোনা ভাইরাস সংক্রমণ ঝুঁকি যুগোপৎ সমাগত। চিরচেনা ঈদের চিত্রটা এবারে একেবারে ভিন্ন ও অচেনা। সোমবার (২৫ মে) সারাদেশের মতো টাঙ্গাইলের ঘাটাইলে পালিত ঈদের চিত্রটা অভূতপূর্ব।

 

করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে সরকারি নির্দেশনায় ঘাটাইল উপজেলার ৬৯৪টি মসজিদে ঈদের নামাজ আদায় হয়েছে।

 

ঘাটাইল পৌরসভার বাসস্ট্যান্ডে অবস্থিত কেন্দ্রীয় সদর জামে মসজিদে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয় সকাল সাড়ে আঁটটায়। নামাজের আগে ঘাটাইল পৌরসভার মেয়র শহিদুজ্জামান খান সংক্ষিপ্ত নীতিনির্ধারণী বক্তব্য রাখেন।

 

ঘাটাইল উপজেলা পরিষদ মসজিদে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয় সকাল সাড়ে সাতটায়।

 

এছাড়াও পৌরসভার বাজার মসজিদ, থানা মসজিদ, দক্ষিণ পাড়া মসজিদ, চান্দশি মসজিদ ইত্যাদিতে সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক স্বাস্থ্যবিধি মেনে শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়।

 

ঘাটাইল উপজেলার প্রায় শাতশত মসজিদেই এবারে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে।

 

আজ সোমবার ঈদের সকাল শুরু হওয়ার পর থেকেই চারদিকের মসজিদগুলো থেকে মাইকে ঈদের নামাজের প্রস্তুতিমূলক আওয়াজ ভেসে আসে। নামাজের আগে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য, নামাজ ও খুৎবা যখন মসজিদের মাইকে প্রচার করা হয়, তখন এতে এক অভাবনীয় পবিত্র মধুর পরিবেশের সৃষ্টি হয়। মসজিদের মাইকগুলো থেকে চারদিক থেকে ভেসে আসা পবিত্র কুরআনের বানী মানুষের মনে পবিত্রতম অবস্থার অবতারণা করে।

 

অনেকে আবার অতিরিক্ত সতর্কতায় নিজ বাসাতেই ঈদের নামাজ আদায় করেছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। ইমাম ডেকে বাসা বাড়িতে নামাজ আদায় করার ব্যতিক্রম ঘটনাও ছিল লক্ষণীয়।

 

নিরাপদ দূরত্ব নিশ্চিত করতে ঘাটাইলের অনেক মসজিদে একাধিক ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হয়।

 

এবার ঈদের নামাজ শেষে কোলাকুলির সেই পরিচিত দৃশ্য দেখা যায়নি। এমনকি দেখা যায়নি একে অপরের সঙ্গে হাত মেলাতেও।

 

প্রতি বছর মাসব্যাপী সিয়াম সাধনার পর দেশবাসী ঈদ আনন্দে মেতে উঠলেও এবার সেই সুযোগ ছিল না। করোনাভাইরাসের কারণে বন্দী জীবনেই ঈদ আনন্দ চলছে। ঈদের নামাজ আদায়, বাইরে ঘুরতে যাওয়া, নানা ধরনের আয়োজন সবকিছুতেই এবার ভাটা। সবাই ঈদের আনন্দ উপভগ করছে ভার্চুয়ালভাবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। অনেকে প্রিয়জনদের সাথে মোবাইলে বা মেসেঞ্জারে কোথা বলে সুখদুঃখ ভাগাভাগি করে নেয়ার চেষ্টা করছেন। রাস্তায় ললনাদের সাজুগুজু করে বেড়ানোর দৃশ্য এবারে দেখা যাচ্ছে না।

 

সকালেই ঘাটাইলের মসজিদগুলোতে ভিড় করতে থাকেন মুসল্লিরা। তবে আগের মতো সেই প্রাণোচ্ছ্বাস নেই। শিশুদের হাত ধরে, বয়স্কদের সঙ্গে নিয়ে সপরিবারে ঈদের নামাজ পড়তে আসার চেনা সেই দৃশ্যও ছিল না। অদৃশ্য ভাইরাসের ভয়ে এ যেন এক অচেনা ঈদ।

 

বাসায় ওজু করে, নিজের জায়নামাজ নিয়ে, মাস্ক পরে শারীরিক দূরত্ব মেনে অংশ নিতে হবে নামাজে, এমনটাই নির্দেশনা। ভিড় এড়াতে প্রতিটি মসজিদে একাধিক জামাতের ব্যবস্থা করা হয়। নামাজ শেষে মোনাজাত করেন করোনা ভাইরাসের হাত থেকে দেশ ও জাতিকে রক্ষায়।

 

মুসল্লিরা বলছেন, এর আগে এমন ঈদের নামাজ আসেনি, এমন জামাত আর কখনো না আসুক বিশ্ব ইতিহাসে, এমনটাই প্রত্যাশা তাদের।

 

প্রতিটি মসজিদে বেশিরভাগ মুসল্লি জায়নামাজ নিয়ে ঈদের নামাজ আদায় করেন। তাদের মুখমণ্ডলে ছিলো মাস্ক, অনেকের হাতে ছিলো গ্লোভস। এছাড়া অনেক মসজিদে, ব্লিচিং পাউডারযুক্ত পাপোস এবং হ্যান্ড স্যানিটাইজারের ব্যবস্থা রাখা হয়।

 

এদিকে প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও জামাতে ঈদের নামাজ আদায় করতে পেরে খুশি সাধারণ মুসল্লিরা। ঈদের নামাজের মোনাজাতের মধ্য দিয়ে করোনা নির্মূল হবে আশা ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদের।

আজকের টাঙ্গাইল
আজকের টাঙ্গাইল