• শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৬ ১৪৩১

  • || ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

আজকের টাঙ্গাইল

ঘাটাইল পৌর মেয়রের চার বছর পূর্তি

আজকের টাঙ্গাইল

প্রকাশিত: ২২ সেপ্টেম্বর ২০২০  

টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলা বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ একটি সংসদীয় আসন (১৩২)। এটি ১৪ টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা নিয়ে গঠিত। ঘাটাইল পৌরসভার মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-আহবায়ক শহীদুজ্জামান খান শহীদ। তিনি বিএনপি প্রার্থীকে পরাজিত করে প্রথমবারের মতো এই পৌরসভার মেয়র নির্বাচিত হন। আজ ২২ সেপ্টেম্বর (মঙ্গলবার) তার মেয়র হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের চার বছর পূর্তি।

জানা যায়, ব্রিটিশ শাসনামলে ১৮৭২ সালে গোপালপুর থানার অধীন ঘাটাইলে একটি পুলিশ ফাঁড়ি স্থাপিত হয়। বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভের পর ১৯৮৪ সালে ঘাটাইল থানাকে উপজেলায় উন্নীত করা হয়। ১৯৯৮ সালের ১২ সেপ্টেম্বর স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় ঘাটাইল শহরের ১১.০২ বর্গ কিলোমিটার এলাকাকে পৌরসভা হিসেবে ঘোষণা করে।


 
ঘাটাইল পৌরসভাটি ১১টি গ্রাম ও ৯টি ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত। ২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী এতে মোট ভোটার সংখ্যা ৩৫ হাজার ২৪৫ জন। এর মধ্যে পুুরুষ ১৯ হাজার ৫৯০ ও নারী ১৫ হাজার ৬৫৫ জন।

২০১৬ সালের ৭ আগস্ট অনুষ্ঠিত নির্বাচনে শহীদুজ্জামান শহীদ আট হাজার ৮৯৩ ভোট পেয়ে মেয়র নির্বাচিত হন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি প্রার্থী ফারুক হোসেন ধলা পেয়েছিলেন চার হাজার ৬২১ ভোট। পরে ওই বছরেরই ২২ সেপ্টেম্বর জনাব শহীদ মেয়র হিসেবে তার দায়িত্বভার গ্রহণ করেন।

ঘাটাইল পৌরসভার সাধারণ নাগরিকরা মনে করেন, পৌরকর বৃদ্ধি করা হলেও পৌরবাসীর সুযোগ-সুবিধা তেমন বৃদ্ধি পায়নি। জলাবদ্ধতা পৌরবাসীর জন্য অন্যতম উদ্বেগের কারণ। বর্ষাকালে বৃষ্টিপাত এবং পার্শ্ববর্তী পাহাড়ি অঞ্চল থেকে নেমে আসা ঢলে পৌরসভার অনেক এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থাপনার অপ্রতুলতার কারণে এমনটি ঘটছে বলে তারা বলছেন।

পৌর নাগরিকরা আরও বলছেন, প্রথম শ্রেণির পৌরসভা হিসেবে পৌরবাসীর যে সকল পরিষেবা প্রাপ্য তার বেশ কিছু অনুপস্থিত। আদর্শ পৌরসভা গড়ে তোলার জন্য দরকার সুষ্ঠু পরিকল্পনা। পৌরসভায় অপরিকল্পিতভাবে বসতবাড়ি গড়ে উঠছে, পর্যাপ্ত ও প্রশস্ত রাস্তা নেই, নিয়ম মেনে ভবন নির্মিত হচ্ছে না। অপ্রতুল ড্রেনেজ ও পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা, প্রধান সড়কে গাড়ি পার্কিংয়ে সমস্যা, ফুটপাত দখল, অনিয়ন্ত্রিত ইজিবাইক ও অটোরিকশা, সন্ত্রাস ও মাদক ইত্যাদি সমস্যা রয়েছে। পৌরসভার ময়লা-আবর্জনা ফেলার নির্ধারিত স্থান না থাকার বিষয়টি নিয়েও অনেকে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। এছাড়া বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ ব্যবস্থা, বিনোদন কেন্দ্র ও পার্ক না থাকার বিষয়টিও তারা উল্লেখ করেন।


 
পৌর মেয়র শহীদুজ্জামান খান বলেন, নির্বাচনে প্রতিশ্রুতি ছিল মডেল পৌরসভা করব। এ লক্ষ্যেই বিভিন্ন প্রকল্প হাতে নিয়ে কাজ করছি। দায়িত্ব নেয়ার পর থেকেই কর্মচারীদের নিয়মিত হাজিরা নিশ্চিত করেছি। নিজেও নিয়মিত দাপ্তরিক কার্যক্রম পরিচালনার পাশাপাশি পৌরবাসীর বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে সরেজমিনে কাজ করছি। ঠিকমতো অফিস করার কারণে সবাই সঠিকভাবে তার নিজ দায়িত্ব পালন করছেন।

মেয়র বলেন, গত চার বছরে সড়ক সংস্কার, নতুুুন সড়ক নির্মাণ, সড়ক আলোকিতকরণ, শহরের বিভিন্ন প্রয়োজনীয় স্থানে ডাস্টবিন স্থাপন সহ নানামুুুখী উন্নয়ন কর্মকান্ডে ঘাটাইল পৌরসভার নাগরিক সেবা নিশ্চিত করার চেষ্টা করেছি। এর সুফল জনগণ পাচ্ছেন। জনগণের প্রতিনিধি হিসেবে দলমত নির্বিশেষে সকলের উন্নয়নে কাজ করছি। আমার কাছে যারা আসছেন সামর্থ্য অনুযায়ী তাদের সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করে যাচ্ছি বলে তিনি উল্লেখ করেন।

পানি নিষ্কাশনের দুরবস্থার কথা স্বীকার করে তিনি বলেন, পৌরসভার কলেজ পাড়া, খরাবর, পশ্চিম পাড়ার ৩-৪টি মহল্লায় পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা ত্রুটিপূর্ণ। আমরা এই দুরবস্থার স্থায়ী নিরসনের জন্য কাজ করছি। এসব এলাকায় ড্রেন নির্মাণ করে এ সমস্যার সমাধান করা হবে।


 
মেয়র শহীদুজ্জামান খান শহীদ বলেন, বর্তমানে ঘাটাইল পৌর এলাকার বিভিন্ন ওয়ার্ডে প্রায় পাঁচ কোটি টাকার উন্নয়ন কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এছাড়াও বর্তমান মেয়াদ শেষ হওয়ার পূর্বে আরও প্রায় সাড়ে ছয় কোটি টাকার উন্নয়নমূলক কাজ বাস্তবায়নের প্রত্যাশা করছি। বিভিন্ন প্রকল্পের টাকা আছে, সেগুলো দিয়েও উন্নয়ন কাজ করা হবে। এছাড়াও বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ এবং বিনোদন পার্ক নির্মাণের কাজ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানান তিনি।

এদিকে মেয়র হিসেবে চারবছর পূর্তিতে আজ মঙ্গলবার বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ তার পৌর কার্যালয়ে গিয়ে শুভেচ্ছা ও কুশল বিনিময় করেন। চলমান উন্নয়ন কার্যক্রমকে অব্যাহত রাখতে তিনি সে সময় দ্বিতীয় মেয়াদে তাকে নির্বাচিত করার বিষয়ে সকলের সহযোগিতা ও দোয়া কামনা করেন।

আজকের টাঙ্গাইল
আজকের টাঙ্গাইল