• শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৭ ১৪৩১

  • || ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

আজকের টাঙ্গাইল

কালিহাতীতে সরিষার বাম্পার ফলনে কৃষকের মুখে হাসি

আজকের টাঙ্গাইল

প্রকাশিত: ২৪ ডিসেম্বর ২০১৯  

টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে সরিষার বাম্পার ফলন হয়েছে। উপজেলার চারান, আউলিয়াবাদ, বল্লা, রামপুর, কামন্না, পাইকরা, বাঁশি, নারান্দিয়া, গোহালিয়াবাড়ী, হালিয়াবাড়ী, বল্লভবাড়ী, সরাতৈল, নিকরাইল, বাংড়া, সহদেবপুর, বর্তা, ব্রজগাতী, পাথালিয়া, পারখী, বীরবাসিন্দা, হরিপুর, কামার্থী, সালেংকা সহ বেশ কয়েকটি গ্রামে মাঠে মাঠে বিস্তর এলাকা জুড়ে সরিষার ব্যাপক চাষা বাদ হয়েছে। হলুদ ফুলে ভরে আছে জমি গুলো। ফুলের মৌ মৌ গন্ধ সুবাস ছড়াচ্ছে পুরো এলাকায়। আকৃষ্ট করছে মৌমাছি সহ সকল প্রকৃতি প্রেমিককে। এবার প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে ফলন ভাল হবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্ট কৃষকরা।

চারদিকে তাকালে যেন সবুজের ফাঁকে হলুদের সমাহার। কখনো কখনো সরিষার ক্ষেতে বসছে পোকা খাদক বুলবুলি ও শালিকের ঝাঁক। অনেকটা প্রতিকূল আবহাওয়ার পরও এ বছর লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে প্রায় ২৭৯১ হেক্টর জমিতে সরিষা অর্জন হয়েছে।

সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, সরিষার ফুলে ফুলে ও মৌ মৌ গন্ধে ভরে উঠেছে কালিহাতী উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকার ফসলি ক্ষেত। ফসলি মাঠের শোভা বাড়িয়ে তুলেছে এসব সরিষার ক্ষেত। মাঠের চারিদিক যেন হলুদ হলুদে পরিপূর্ণ। সরিষা ফুলের শোভা আরো বাড়িয়ে তুলেছে অসংখ্য মৌমাছির দল গুণ গুনিয়ে মধু আহরণে ব্যস্ততায় ।

কৃষকরা বলছেন, সরিষার গাছ ভালো হয়েছে। ভালো ফুল ফুটেছে বলে ভালো ফলনও আশা করা যায়। সরিষার ফুলে ফুলে হলুদ বর্ণের বর্ণিল জমি গুলোতে আশে পাশে দুর দুরান্ত থেকে স্কুল কলেজের সৌখিন প্রকৃতি প্রেমিকরা বেড়াতে আসছেন। আবার সরিষার ফুলের সৌন্দর্যকে ধরে রাখার জন্য অনেক তরুণ-তরুণীরা ক্যামারা ও ভিডিও’র মাধ্যমে নিজের ছবির সাথে সরিষার ফুলের ছবি ধরে রাখছেন।

এ বছর অনেকেই আগাম সরিষা চাষ আবাদ করেছেন। প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে চলতি মৌসুমে সরিষার বাম্পার ফলন আশা করছে এ উপজেলার কৃষকরা। বিশাল বিস্তৃর্ণ মাঠ জুড়ে সরিষার চাষ করে রীতিমতো বিপ্লব ঘটিয়েছে এ উপজেলার কৃষকরা। বন্যা পরর্বতী সময়ে তাদের মনে এখন নতুন করে আশা সঞ্চার করেছে সরিষা চাষে।

উপজেলার কামার্থী গ্রামের কৃষক সামাদ বলেন, এবার ৬০ শতাংশ জমিতে তিনি সরিষা আবাদ করেছেন। এ আবাদে সেচ, সার ও কীটনাশক অনেক কম লাগায় খরচও কম হয়। তারমতে, প্রাকৃতিক কোন দুর্যোগ না হলে এবার বাম্পার ফলন হবে। তিনি বলেন, সরিষা চাষ করে মানুষ শুধু তেল-ই তৈরী করেনা। এই সরিষা ভাঙ্গিয়ে খৈল ও গাছ থেকে ভূষি তৈরী হয় যা গরুর ভালো খাদ্য এবংভালো জ্বালানি হিসেবেও ব্যবহৃত হয়।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জানান সাজ্জাদ হোসেন তালুকদার বলেন, গত বছরের চেয়ে এ বছর কালিহাতী উপজেলায় সরিষার আবাদের লক্ষ্য মাত্রা ২৫০০ হেক্টর ছাড়িয়ে ২৭৯১ হেক্টর জমিতে সরিষা আবাদ অর্জন হয়েছে। কৃষিবান্ধব সরকারের ভোজ্য তেলে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের লক্ষে সারাদেশেই কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এ বছর প্রনোদনা কর্মসূচীর আওতায় প্রায় ১ হাজার ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে সরিষার বীজ ও রাসায়নিক সার প্রদান করা হয়েছে। সদ্য অবমুক্ত উচ্চ ফলনশীল ও সল্প জীবন কাল সম্পন্ন সরিষার জাত গুলো যেমন, বারি সরিষা-১৪, বারি সরিষা-১৭ জন প্রিয় করার লক্ষ্যে মাঠ পর্যায়ে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাগণ প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। এছাড়াও  এ উপজেলায় নতুন তেল জাতীয় ফসল হিসেবে সূর্যমূখীর আবাদ প্রচলনের লক্ষ্যে প্রদর্শনী ও প্রনোদনার মাধ্যমে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

আজকের টাঙ্গাইল
আজকের টাঙ্গাইল