• শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৬ ১৪৩১

  • || ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

আজকের টাঙ্গাইল

করোনা মোকাবেলায় মির্জাপুর প্রশাসনের চার যোদ্ধা

আজকের টাঙ্গাইল

প্রকাশিত: ২২ জুন ২০২০  

ঝড়-বৃষ্টি মাথায় নিয়ে দিনরাত প্রাণঘাতি ভাইরাস করোনার বিরুদ্ধে ছুটছেন টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলা প্রশাসনের চার কর্মকর্তা। যখনই খবর পাচ্ছেন ছুটে চলেছেন করোনায় আক্রান্তদের বাড়ি। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে উপজেলার একপ্রান্ত থেকে অপর-প্রান্ত পর্যন্ত নিরলসভাবে ছুটে চলেছেন তারা।

 

প্রশাসনের এই চার কর্মকর্তা হলেন টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আবদুল মালেক মোস্তাকিম, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মীর্জা মো. জুবায়ের হোসেন, মির্জাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. সায়েদুর রহমান এবং উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (টিএইচও) ডা. মাকসুদা খানম।

 

এই চার কর্মকর্তা এলাকায় মাইকিং করে বলছেন, করোনাকালীন দুর্যোগের সময় আপনারা নিরাপদে নিজ নিজ ঘরে থাকুন, আমরা আপনাদের পাশে থেকে সার্বিক সহযোগিতা করে খাবার বাড়ি পৌঁছে দিব। নিজে নিরাপদ থাকুন, পরিবারকে নিরাপদ রাখুন।

 

রবিবার উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আবদুল মালেক মোস্তাকিম বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, স্থানীয় সংসদ সদস্য, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, প্রশাসনের বিভিন্ন অধিদপ্তরের কর্মকর্তা এবং টাঙ্গাইল জেলা প্রশাসক মো. শহীদুল ইসলাম স্যারের দিক নির্দেশনায় মির্জাপুরকে করোনা মোকাবেলায় ঢেলে সাজানো হয়েছে।

 

সকলের সহযোগিতা ও সমন্বয়ে করোনা ভাইরাসকে মোকাবেলার জন্য কাজ করা হচ্ছে। পৌরসভা, মহেড়া, জামুর্কি, ফতেপুর, বানাইল, আনাইতারা, ওয়ার্শি, ভাদগ্রাম, ভাওড়া, বহুরিয়া, লতিফপুর, গোড়াই, আজগানা, তরফপুর ও বাঁশতৈল ইউনিয়নসহ প্রতিটি এলাকায় জনগণকে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে চলার জন্য গণজাগরণ সৃষ্টি করা হয়েছে।

 

করোনায় আক্রান্তদের বাড়ি বাড়ি খাবার পৌঁছে দেওয়া, ঔষধপত্র দেওয়া, লকডাউনে থাকা পরিবারের সদস্যদের খাবার বিতরণ, করোনায় আক্রান্তদের জন্য আইসোলেশনের ব্যবস্থা করা, শিশু খাদ্য বিতরণ, কর্মহীন ও দরিদ্রদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ, নিয়মিত বাজার মনিটরিং করা, মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা, ভিআইপিদের প্রটোকল দেওয়া, নিয়মিত অফিসের কাজ করাসহ করোনার মত মহামারী দুর্যোগের সময় ঝুঁকি মাথায় নিয়ে দিনরাত কাজ করা হচ্ছে।

 

দেশে করোনা ভাইরাস দেখা দেওয়ার পর থেকেই পরিবারের সদ্যদের জন্য এক দিনের জন্যও ছুটি কাটাতে পারেনি মির্জাপুরের কোন কর্মকর্তা। আমরা চেষ্টা করছি জনগণের পাশে থেকে সর্বোচ্চ সেবা ও সহযোগিতা করা।

 

মির্জাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. সায়েদুর রহমান বলেন, টাঙ্গাইল জেলা পুলিশ সুপার মি. সঞ্জিত কুমার রায় এর নির্দেশনায় মির্জাপুর থানা ও হাইওয়ে পুলিশের প্রতিটি পুলিশ সদস্য নিরলস ভাবে প্রশাসনের সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছেন।

 

করোনা ভাইরাসকে পরাজিত করার জন্য লিফলেট বিতরণ, স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রী বিতরণ, খাদ্য বিতরণসহ জনগণকে সেবা দিয়ে যাচ্ছে পুলিশ বাহিনী। যতক্ষণ জীবন থাকবে ততক্ষণ জনগণকে এই দুর্যোগের সময়ে সর্বাত্মক সহযোগিতা করা হবে বলে এই কর্মকর্তা জানিয়েছেন।

 

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মাকসুদা খানম বলেন, আমরা দিন বুঝি না, রাত বুঝি না, আমরা চাই এলাকার জনগণকে সর্বোচ্চ সেবা দেওয়া। জেলা সিভিল সার্জনের পরামর্শ ও সার্বিক সহযোগিতায় করোনা মোকাবেলার জন্য হাসপাতালের চিকিৎসক, স্বাস্থ্য কর্মীসহ প্রতিটি সদস্য নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছেন।

 

খবর আসা মাত্রই স্বাস্থ্য কর্মীরা লোকজনদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে করোনার নমুনা সংগ্রহ করছেন। গত মার্চ মাস থেকে আজ ২১ জুন পর্যন্ত পৌরসভা ও ১৪ ইউনিয়নে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ১১৪ জন। করোনায় মারা গেছেন ৭ জন। এর মধ্যে ৪ জন মারা গেছেন মির্জাপুরে এবং ২ জন মারা গেছেন ঢাকায়। যারা এখনও আক্রান্ত তারা হোম কোয়ারিন্টাইনে রয়েছেন।

 

উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) ও নির্বাহী ম্যজিষ্ট্রেট মীর্জা মো. জুবায়ের হোসেন বলেন, জনগনের পাশে থেকে সেবা করার সুযোগ এসেছে।

 

করোনার ভয়ে এখন আমাদের বসে থাকলে চলবে না। জনগণকে নিরাপত্তা দিতে হবে। সেই লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নিয়েই আমরা মাঠে কাজ করছি। যতক্ষন জীবন আছে ততক্ষন জনগনকে করোনা মোকাবেলায় সেবা দিয়ে যাবো।

আজকের টাঙ্গাইল
আজকের টাঙ্গাইল