একই ইউনিয়নের ৮জন মনোনয়ন প্রত্যাশী

আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে টাঙ্গাইল-২ (ভূঞাপুর-গোপালপুর) আসনের ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপির একই ইউনিয়নের ৮জন প্রার্থী স্ব স্ব দলের মনোনয়ন প্রত্যাশা করছেন। সেই সাথে নির্বাচনী এলাকায় গণসংযোগসহ প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। গোপালপুর উপজেলার হেমনগর ইউনিয়নের নারুচী গ্রামের বর্তমান আওয়ামীলীগের সাংসদ খন্দকার আসাদুজ্জামান, সাংসদ পুত্র খন্দকার মশিউজ্জামান রোমেল, জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক খন্দকার আশরাফউজ্জামান স্মৃতি, একই ইউনিয়নের বেলুয়া গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল হারুন-অর-রশিদ (বীরপ্রতিক), খামারপাড়া গ্রামের যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী বিশিষ্ট বিজ্ঞানী ড. নুরুন নবী, আরেক যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী সুলতান মাহমুদ খান।

অপরদিকে জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী হেমনগর ইউনিয়নের গোলপেচাঁ গ্রামের কেন্দ্রীয় যুবদলের সাধারন সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু এবং তার বড় ভাই সাবেক উপমন্ত্রী আব্দুস সালাম পিন্টু।

জানা গেছে, বড় দুই দলের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে আওয়ামী লীগের বর্তমান সাংসদ খন্দকার আসাদুজ্জামান কয়েকবছর ধরে অসুস্থ্যতায় নিষ্কিয় হওয়ার কারনে তার আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চাইছেন তারই ছেলে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের উপ-কমিটির শিল্প ও বানিজ্য বিষয়ক সহ-সম্পাদক খন্দকার মশিউজ্জামান রোমেল। এছাড়া খন্দকার পরিবারের আরেকজন জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র যুগ্ম সাধারন সম্পাদক খন্দকার আশরাফউজ্জামান স্মৃতি। আওয়ামী লীগের আরো দুইজন যারা যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী ড. নুরুন নবী ও সুলতান মাহমুদ খান। তারা দুইজন এলাকায় অবস্থান না করলেও তাদের হয়ে নির্বাচনী এলাকায় প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছে কর্মী-সমর্থকরা। বিভিন্ন জায়গায় সাঁটানো পোষ্টারে নতুন মুখ দেখে সাধারন মানুষের মধ্যে কৌতুহল জেগেছে। অন্যদিকে সেনাবাহিনী থেকে অবসর গ্রহণ করা কর্নেল (অব:) হারুন-অর-রশিদও আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী।

এদিকে এই ইউনিয়ন থেকেই ১৯৯১, ১৯৯৬ (১৫ ফেব্রুয়ারী) ও ২০০১ সালে বিএনপির  টিকেটে আব্দুস সালাম পিন্টু সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে শিক্ষা ও শিল্প মন্ত্রনালয়ের উপমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। পরবর্তিতে ২০০৪ সালের ২১ আগষ্ট গ্রেনেড হামলা-মামলার রায়ে আব্দুস সালাম পিন্টুর ফাঁসির দন্ডপ্রাপ্ত হয়ে কারাগারে রয়েছেন।

অপরদিকে খন্দকার আসাদুজ্জামান মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে মুজিব নগর সরকারের অর্থসচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়া তিনি সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রনালয়ে সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এরপর ১৯৯৬, ২০০৮, ২০১৪ সালে আওয়ামী লীগের টিকেটে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এবং কেবিনেট মন্ত্রী পদমর্যাদায় প্রধানমন্ত্রীর মুক্তিযুদ্ধ ও সংস্থাপন বিষয়ক উপদেষ্টার দায়িত্বসহ বিভিন্ন সংসদীয় কমিটির সভাপতি ও বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেন। বর্তমানে তিনি সংসদ সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

 হেমনগর ইউনিয়নের অনেকেই জানান, প্রত্যেকবার সংসদ নির্বাচনে এই ইউনিয়ন থেকে একাধিক প্রার্থী নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশা করেন। এই ইউনিয়ন থেকেই আওয়ামী লীগ অথবা বিএনপির এমপি হোন।

উপজেলার এই হেমনগর ইউনিয়নে একটি পুলিশ তদন্ত কেন্দ্র, সরকারি পলিটেকনিক্যাল কলেজ, শতাধিক বছরের পুরাতন মাধ্যমিক স্কুল, ডিগ্রী কলেজ, মিনি স্টেডিয়ামসহ জমিদার হেমচন্দ্র চৌধুরীর পরী দালান শোভা পাচ্ছে।

এই ইউনিয়নে ভোটার সংখ্যা ২৭ হাজার ২৬৫জন। এরমধ্যে পুরুষ ভোটার সংখ্যা ১৩হাজার ৬২০ ও মহিলা ভোটার সংখ্যা ১৩ হাজার ৬৪৫জন।