• শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৬ ১৪৩১

  • || ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

আজকের টাঙ্গাইল

‘আমার বাড়ি আমার খামার’ আমিরুল ইসলামকে দেখালো আলোর মুখ

আজকের টাঙ্গাইল

প্রকাশিত: ৪ জানুয়ারি ২০২০  

‘প্রযুক্তিভিত্তিক কাজ করি, স্বনির্ভর দেশ গড়ি’ এ স্লোগান নিয়ে মাগুরা সদরের বেলনগর পূর্বপাড়ার আমিরুল ইসলাম নিজের  ৫০ শতক জমির উপর গড়েছেন ‘আমার বাড়ি আমার খামার’ নামের স্বপ্নের বাগিচা। সেই  স্বপ্নের বাগিচায় তিনি নিজে যেমন স্বপ্ন দেখেন তেমনি স্বপ্ন দেখেন এলাকার অনেক মানুষ। 
মাগুরা সদরের বেলনগর গ্রামে তার নিজের শ্রমে গড়া  খামারে সরেজমিনে গিয়ে কথা হয় আমিরুলের সঙ্গে। তিনি বলেন, স্বপ্ন ছিলো বিদেশ গিয়ে পরিবারের দুঃখ-কষ্ট দূর করব, কিন্তু তা হলো না। বিদেশে গিয়ে আবার নিজ দেশে ২০১২ সালে ফিরে আসি। এরপর কী করব ভেবে পাচ্ছিলাম না। নিজ এলাকার অনেকের নার্সারি দেখে শখ হয়। তবে শুরু করেও তাতে তেমন লাভ না হওয়ায় তিন বছর পর পেশা বদল করে নিজের ২০ শতক জমির উপর সবজি বাগান, দেশি মুরগি ও হাঁস চাষ শুরু করি।

আমিরুল আরো বলেন, সেই চিন্তা থেকেই সামান্য সাফল্যের মুখ দেখায় ২০১৫ সালে কিছু টাকা লোন করে নিজের জমির পাশে আরো ৩০ শতাংশ জায়গা ক্রয় করি। এতে পুকুর কেটে মাছ চাষ শুরু করি। পাশাপাশি টার্কি মুরগিসহ বিভিন্ন সমন্বিত ফল যেমন আম, লিচু, পেয়ারা, লেবু, নারকেল ও নানা জাতের সবজি  বাগানও গড়ে তুলি। এ খামার গড়তে আমার ৯ থেকে ১০ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। 

নিজের উপার্জনের কথা জানাতে গিয়ে আমিরুল বলেন, বর্তমানে মাছ, মুরগি, বিভিন্ন জাতের ফল ও সবজি বিক্রি করে বছরে ১৫ থেকে ১৬ লাখ টাকা আয় করছি। বর্তমানে দেশি মুরগির ডিম থেকে বাচ্চা ফুটিয়ে তা জেলার বিভিন্ন খামারির কাছে বিক্রি করছি। 

তিনি বলেন, আমার খামার পরিদর্শন করে খুলনা বিভাগীয় কমিশনার, সদরের ইউএনও, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান ভীষণ খুশি হয়েছেন। আমার নিজ শ্রমে গড়া খামার দেখে সাধুবাদ জানিয়েছেন। সরকারের একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পের বিভিন্ন উঠান বৈঠক এখন আমার বাড়ি চত্বরে হয়ে থাকে। এ অনুষ্ঠানে আমার নিজ এলাকার কৃষকদের উঠান বৈঠকের মাধ্যমে সচেতন করা হয়। আমার  খামার দেখে এলাকার অনেক কৃষক উদ্বুদ্ধ হয়ে খামার করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। 


 
এদিকে এ খামার গড়তে কারো কাছ থেকে তেমন সহযোগিতা পাওয়া যায়নি বলে জানান আমিরুল। তবে সরকারের একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পের মাধ্যমে ২০ হাজার টাকা পেয়েছেন বলেও জানান তিনি। নিজের স্বপ্নের কথা বলতে গিয়ে আমিরুল জানান, যদি সরকারের পক্ষ থেকে আরো সহযোগিতা পান, তবে আরো ভালো কিছু  করার চিন্তা আছে। 

আমিরুলের এ সাফল্যে মাগুরা সদরের ইউএনও আবু  সুফিয়ান বলেন, আমিরুল একজন পরিশ্রমী কৃষক। গ্রামীণ  সুন্দর  ও পরিচ্ছন্ন পরিবেশে তার খামার। আমি তার খামার দেখে মুগ্ধ হয়েছি। সরকারের একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পের মাধ্যমে আমরা তাকে সহযোগিতা করার চেষ্টা করছি। আমরা চাই আমিরুলের মতো জেলার অন্যান্য কৃষকরাও খামার গড়ে স্বাবলম্বী হোক।

আজকের টাঙ্গাইল
আজকের টাঙ্গাইল