• বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১২ ১৪৩১

  • || ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

আজকের টাঙ্গাইল

অনুদানের খবরে টাঙ্গাইলে শিক্ষার্থীদের আবেদনের হিড়িক

আজকের টাঙ্গাইল

প্রকাশিত: ৯ মার্চ ২০২১  

সরকার প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে ১০ হাজার করে টাকা অনুদান দেবে– এমন খবর ছড়িয়ে পড়ায় টাঙ্গাইলের প্রত্যন্ত অঞ্চলের শিক্ষার্থীরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে প্রত্যায়নপত্র তুলে আবেদন করতে ভিড় করেছেন অনলাইনের দোকানগুলোতে। রবিবার (৭ মার্চ) সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত টাঙ্গাইল শহরের বিভিন্ন অনলাইনের দোকানে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের ছিল উপচে পড়া ভিড় ছিল।  

জানা গেছে, করোনাকালে স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকায় সরকার শিক্ষার্থীদের ১০ হাজার করে টাকা অনুদান দেওয়া হবে এমন খবর ছড়িয়ে পড়লে শিক্ষার্থী নিজ নিজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে প্রত্যায়নপত্র তুলতে ভিড় করেন। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধান ও অন্যান্য শিক্ষকরা টাকা দেওয়ার বিষয়টি অবগত নয় জানালেও শিক্ষার্থীরা তা মানতে নারাজ। বাধ্য হয়েই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধানরা তাদের প্রত্যায়নপত্র দেন।

প্রত্যায়নপত্র তুলে আবেদন করতে শহরের বিভিন্ন অনলাইনের দোকানে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা ভিড় জমান।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, বিভিন্ন স্কুল-কলেজ, শিক্ষক, শিক্ষার্থীদের মধ্যে ২০২০-২১ অর্থবছরের রাজস্ব বাজেটের বিশেষ মঞ্জুরির অনুদানের টাকা বিতরণের উদ্যোগ নেয় সরকার। পরে গত ১৮ জানুয়ারি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন প্রকাশ করা হয়। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও শিক্ষকদের এ টাকা পেতে গত ১ ফেব্রুয়ারি থেকে অনলাইনে আবেদন শুরু হয়েছিল। 

অনলাইনে আবেদনের সময় ছিল ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। পরে সে সময় বাড়ানো হয় ৭ মার্চ পর্যন্ত। এরপর আবারও সময় বাড়ানো হয়েছে ১৫ মার্চ পর্যন্ত। সরকারি এবং বেসরকারি এমপিওভুক্ত ও নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা চিকিৎসা, দুর্ঘটনা এবং চিকিৎসার খরচের জন্য বিশেষ মঞ্জুরির অনুদান প্রাপ্তির আবেদন করতে পারবে। এক্ষেত্রে প্রতিবন্ধী, অসহায়, অসচ্ছল ও মেধাবী, অনগ্রসর সম্প্রদায়ের শিক্ষার্থীরা অগ্রাধিকার পাবে।

সরকারি শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিব মহাবিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আসমা আক্তার বলেন, ‘দুপুর ১২টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত অনলাইনের দোকানে বসে থেকে আবেদন করতে পারিনি। আমাদের বান্ধরীরা আবেদন করেছে। শুনেছি প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে ১০ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে।’

করটিয়া সা’দত কলেজের একাধিক শিক্ষার্থী বলেন, ‘সহপাঠীদের কাছ থেকে তথ্য পেয়ে আবেদন করতে এসেছি। কলেজ থেকে প্রত্যায়নপত্র তুলেছি। পরে অনলাইনের দোকানে গিয়ে দেখি সার্ভার বন্ধ।’

শহরের নিরালা মোড়ের দোকানে অনলাইনে কাজ করা কম্পিউটার অপারেটর রিপন মিয়া বলেন, ‘সকাল থেকে আমার কাছে শতাধিক শিক্ষার্থী আবেদন করতে এসেছে। সার্ভার বন্ধ থাকায় আবেদন করা সম্ভব হয়নি। পরে তারা ফিরে গেছেন।’

টাঙ্গাইল কালেক্টরেট স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুল বাছেদ মিঞা বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা আবেদন করলেই ১০ হাজার করে টাকা পাবে আমরা এমন কোনও চিঠি পাইনি। শিক্ষার্থীদের না করার পরও তারা প্রত্যায়নপত্র তুলতে ভিড় করে। এক পর্যায়ে তাদের প্রত্যায়ন দেওয়া হয়। এ পর্যন্ত প্রায় ৫০ জন শিক্ষার্থীকে প্রত্যায়নপত্র দেওয়া হয়েছে।’

সরকারি সা’দত কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক আলীম মাহমুদ বলেন, ‘শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে একটা অনুদান দেওয়া হবে। তবে সেখানে টাকার পরিমাণ উল্লেখ করা হয়নি। এটা অনলাইনে আবেদন করতে হবে। যেকোনও শিক্ষার্থী আবেদন করতে পারবে। কাকে নির্বাচিত করবে সেটা বোর্ড থেকে নির্ধারণ করবে।’

টাঙ্গাইলের জেলা শিক্ষা অফিসার লায়লা খানম বলেন, ‘এ বিষয়ে মন্ত্রণালয় থেকে কোনও চিঠি পাইনি। তবে আজ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে ফোনে জানতে পেরে মন্ত্রণালয় থেকে মেইলে চিঠি আনা হয়েছে। শিক্ষার্থীরা টাকার জন্য আবেদন করতে পারবে। এক্ষেত্রে প্রতিবন্ধী, অসহায়, অসচ্ছল ও মেধাবী শিক্ষার্থীরা অগ্রাধিকার পাবে। তবে কতো টাকা করে পাবে এমন বিষয় আমার জানা নেই।’

তিনি আরও বলেন, ‘মন্ত্রণালয় থেকে গত ১৮ জানুয়ারি ওয়েবসাইটে এ সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন প্রকাশ করে। তবে আমরা সেটি পেয়েছিলাম না। ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত শেষ সময় ছিল। পরে ৭ মার্চ পর্যন্ত সময় বাড়ানো হয়। পরবর্তীতের ১৫ মার্চ পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। টাঙ্গাইলে এ পর্যন্ত কতজন শিক্ষার্থী আবেদন করেছে সেটি আমার জানা নেই।’

আজকের টাঙ্গাইল
আজকের টাঙ্গাইল