• শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৫ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

আজকের টাঙ্গাইল

ফাইনাল না খেলেও যে ম্যাচের চ্যাম্পিয়ন উরুগুয়ে

আজকের টাঙ্গাইল

প্রকাশিত: ৩০ নভেম্বর ২০২২  

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কারণে ১৯৫০ সালের বিশ্বকাপ আয়োজন নিয়ে ছিল সংশয়। সে সংশয় কাটিয়ে সেবার সফলতার সঙ্গেই মাঠে গড়ায় ফুটবলের বিশ্বকাপ। মজার ব্যাপার হলো সেবার ফাইনাল না খেলেও বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয় উরুগুয়ে। সেদিন তাদের প্রতিপক্ষ ছিল ব্রাজিল। অলিখিত সে ফাইনাল খেলা দেখার জন্য ব্রাজিলের মারাকানা স্টেডিয়ামে সেদিন উপস্থিত ছিল প্রায় ২ লক্ষ দর্শক। 
এর অবশ্য কারণও ছিল। সেবার ব্রাজিল উঠেছিল ফাইনালে আর ফুটবল পাগল ব্রাজিলিয়ানরা স্বাগতিকদের খেলা দেখার জন্য এদিন পুরো মাঠ ভরিয়ে তোলে।     

ফাইনাল না খেলেও কেমনে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয় উরুগুয়ে, চলুন সেটাই জেনে আসি। 

চতুর্থ বিশ্বকাপে থেকে নেয়া হয় এক অদ্ভুত সিদ্ধান্ত। নকআউট পর্ব তো ছিলই না, ছিল না ফাইনাল ম্যাচও। সেবার গ্রুপ পর্বের সর্বোচ্চ পয়েন্ট সংগ্রহকারী দলকেই চ্যাম্পিয়ন ঘোষণা করা হয়। আর সেটা পায় উরুগুয়ে।

চতুর্থ বিশ্বকাপে প্রথমবারের মতো অংশ নেয় ফুটবলের জনক দেশ ইংল্যান্ড। বাছাই পর্ব শেষে যথারীতি বেছে নেওয়া হয় ১৬টি দল। তবে এ নিয়েও আছে নানা বিতর্ক। বাছাই পর্বে সুযোগ পেয়েও শেষ মুহূর্তে নাম প্রত্যাহার করে নেয় ফ্রান্স, স্কটল্যান্ড ও তুরস্ক। 

বিশেষ করে ফ্রান্সের নাম প্রত্যাহার করে নেওয়া নিয়ে নানা গুঞ্জন রয়েছে। গুঞ্জন রয়েছে আরও- ভারতীয়দের দাবি এ বিশ্বকাপে সুযোগ পেয়েছিল তারা। তবে বিশ্বকাপে বুট পরে খেলতে হবে জানার পর নাম প্রত্যাহার করে নেয় দেশগুলো।

শেষ পর্যন্ত চতুর্থ বিশ্বকাপে ১৩টি দল অংশ নেয়। সেবার ইউরোপ থেকে খেলতে আসে ৬টি দল- যুগোস্লাভিয়া, সুইজারল্যান্ড, স্পেন, ইংল্যান্ড, সুইডেন ও ইতালি। 

ল্যাতিন আমেরিকার ৫টি- বলিভিয়া, উরুগুয়ে, প্যারাগুয়ে, চিলি ও ব্রাজিল। আর বাকি ২টি দল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও মেক্সিকো। 

চারটি গ্রুপ করে শুরু হয় বিশ্বকাপ। এরপর চারটি গ্রুপের চার চ্যাম্পিয়ন দল নিয়ে হয় ফাইনাল পর্ব।

প্রথমবার বিশ্বকাপ খেলতে এসে নিজেদের প্রথম ম্যাচেই দুর্বল যুক্তরাষ্ট্রের কাছে ১ গোলে হারে ইংল্যান্ড। প্রথম লেগের চার গ্রুপে বিজয়ীদের দলগুলো ছিল স্বাগতিক ব্রাজিল, উরুগুয়ে, স্পেন ও সুইডেন।

ফাইনাল পুলের শুরুটা দারুণ করে ব্রাজিল। ৭-১ গোলে উড়িয়ে দেয় তখনকার বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ইতালিকে বিদায় করে দেওয়া সুইডেনকে। পরের ম্যাচেও তারা দুর্দান্ত। এবার ৬-১ গোলে উড়িয়ে দেয় স্পেনকে। 

প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ জিততে শেষ ম্যাচে উরুগুয়ের বিপক্ষে দরকার ছিল কেবল হার এড়ানো। আর তাহলেই পয়েন্ট তালিকায় শীর্ষে  থেকে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়ে যাবে তারা। আর সে ম্যাচের শুরুটাও হয় দারুণ। 

খেলার ৪৭ মিনিটে ১-০ গোলে এগিয়ে যায় স্বাগতিকরা। কিন্তু এরপর ২টি গোল খেয়ে উল্টো হেরে বসে দলটি। আর এতেই দ্বিতীয়বারের মতো শিরোপা জিতে নেয় উরুগুয়ে।


অথচ সেদিন সে ম্যাচে ব্রাজিল চ্যাম্পিয়ন হবে ভেবে মারাকানা স্টেডিয়ামে উপস্থিত ছিল প্রায় ২ লক্ষ সমর্থক। যা ফুটবল ইতিহাসের সর্বোচ্চ উপস্থিতির রেকর্ড। আগের দুই ম্যাচের ফলাফলই আত্মবিশ্বাস এনে দিয়েছিল তাদের। 

উরুগুয়ে যেখানে সুইডেনের বিপক্ষে জিতেছিল ৩-২ গোলে, আর স্পেনের বিপক্ষে জিততেই পারেনি। ২-২ গোলে ম্যাচ ড্র। অথচ ব্রাজিল সেবার এই দুই দলের বিপক্ষে দিয়েছিল ১৩ গোল। 

কিন্তু অলিখিত সেই ফাইনালে খেই হারিয়ে শুধু শিরোপাই হারায়নি তারা, হারিয়েছিল দেশটির বেশ কিছু ভক্তসমর্থককেও। প্রিয় দলের হার সইতে না পেরেই মারাকানার ছাদ থেকে লাফিয়ে আত্মহুতি দেয় তারা।

আজকের টাঙ্গাইল
আজকের টাঙ্গাইল