• বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১১ ১৪৩১

  • || ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

আজকের টাঙ্গাইল

মুসলিমদের জন্য দ্বীনি দাওয়াতের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা

আজকের টাঙ্গাইল

প্রকাশিত: ৫ সেপ্টেম্বর ২০২২  

সর্ব শক্তিমান মহান আল্লাহ তাআলা সমগ্র মানবজাতির একমাত্র সৃষ্টিকর্তা ও পালনকর্তা। নবী মোহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সমগ্র মানবজাতির নবী এবং আখেরী নবী। 

কোরআনুল কারীম সমগ্র মানবজাতির জন্যই পথ প্রদর্শক এবং আখেরী কিতাব। ইসলাম ধর্ম সমগ্র মানবজাতির একমাত্র জীবন ব্যবস্থা, যা কিয়ামত পর্যন্ত আনেওয়ালা সবার জন্যই তা গ্রহণ করা অত্যাবশ্যক, এমনকি তা ব্যতীত আর অন্য কোন দ্বীন বা ধর্ম আল্লাহর নিকট গ্রহণযোগ্যও নয়। 


কিভাবে সমগ্র মানবজাতি মহান রাব্বুল আলামিন আল্লাহ তাআলাকে চিনতে পারে, তার নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে আখেরী নবী মেনে নিয়ে তার পথে চলতে পারে, আল-কুরআনকে আখেরী কিতাব হিসাবে পথের পাথেও হিসাবে মেনে নিতে পারে, সর্বশেষ ও একমাত্র গ্রহণযোগ্য ধর্ম হিসেবে ইসলামকে তাদের জীবন বিধান হিসেবে মেনে নিতে পারে এজন্য মহান রাব্বুল আলামিন যুগে যুগে নবী ও রাসূল প্রেরণ করেছেন।       

নবী ও রাসূলগণ আপন জাতি এবং সর্বস্তরের মানুষের জন্য পথপ্রদর্শক হিসেবে কাজ করতেন, তাদেরকে দিকনির্দেশনা দিতেন, কোনটা সঠিক কোনটা ভুল। কিন্তু আখেরী নবী ইন্তিকালের পর আর কোনো নবী আসবেন না সুতরাং কেয়ামত পর্যন্ত কে বা কারা এই মানবজাতিকে তাদের প্রতিপালকের পরিচয় করিয়ে দিবে, কে তাদের প্রতিপালকের হুকুম-আহকামকে তাদের সামনে তুলে ধরবে? কারা সেই নবীর জিম্মাদারী আদায় করবে? এর উত্তরে আমরা কুরআনুল কারিম ও হাদীস শরিফে দুই শ্রেণির লোকদের উপর দুই ধরনের দায়িত্বের বিষয় খুঁজে পাই।  

এক, সাধারণ মুসলমানদের ওপর সাধারণ দায়িত্ব। 

আল্লাহ তাআলা কুরআনুল কারীমে ইরশাদ করেন:

{كُنْتُمْ خَيْرَ أُمَّةٍ أُخْرِجَتْ لِلنَّاسِ تَأْمُرُونَ بِالْمَعْرُوفِ وَتَنْهَوْنَ عَنِ الْمُنْكَرِ وَتُؤْمِنُونَ بِاللَّ} [آل عمران: 110]

‘তোমরাই হলে সর্বোত্তম উম্মত, মানবজাতির কল্যাণের জন্যেই তোমাদের উদ্ভব ঘটানো হয়েছে। তোমরা সৎকাজের নির্দেশ দান করবে ও অন্যায় কাজে বাধা দেবে এবং আল্লাহর প্রতি ঈমান আনবে’। সুরা আল- ইমরান ৩:১১০ 

তেমনিভাবে কুরআনুল কারীমে সূরা আল-ইমরানের ১০৪ নং আয়াতে ইরশাদ হয়েছে:

{وَلْتَكُنْ مِنْكُمْ أُمَّةٌ يَدْعُونَ إِلَى الْخَيْرِ وَيَأْمُرُونَ بِالْمَعْرُوفِ وَيَنْهَوْنَ عَنِ الْمُنْكَرِ وَأُولَئِكَ هُمُ الْمُفْلِحُونَ} [آل عمران: 104]

আর তোমাদের মধ্যে এমন একটা দল থাকা উচিত যারা আহবান জানাবে সৎকর্মের প্রতি, নির্দেশ দেবে ভালো কাজের এবং বারণ করবে অন্যায় কাজ থেকে, আর তারাই হলো সফলকাম’। সুরা আল-ইমরান ৩:১০৪
  
হাদীস শরীফে নবী কারীম সা. ইরশাদ করেছেন, 
فَقَالَ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ ‏ "‏ مَنْ رَأَى مِنْكُمْ مُنْكَرًا فَلْيُغَيِّرْهُ بِيَدِهِ فَإِنْ لَمْ يَسْتَطِعْ فَبِلِسَانِهِ فَإِنْ لَمْ يَسْتَطِعْ فَبِقَلْبِهِ وَذَلِكَ أَضْعَفُ الإِيمَانِ ‏

রাসূলুল্লাহ্‌ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, তোমাদের কেউ গর্হিত কাজ হতে দেখলে সে যেন স্বহস্তে (শক্তি প্রয়োগে) পরিবর্তন করে দেয়, যদি তার সে ক্ষমতা না থাকে, তবে মুখ (বাক্য) দ্বারা এর পরিবর্তন করবে। আর যদি সে সাধ্যও না থাকে, তখন অন্তর দ্বারা করবে, তবে এটা ঈমানের দুর্বলতম পরিচায়ক। (সহিহ মুসলিম, হাদিস নং ৮১) 

এই সমস্ত আয়াত এবং হাদীসের মাধ্যমে প্রমাণিত হয় যে, প্রত্যেক মুসলমানদের ওপর সাধারণভাবে দাওয়াতের কাজ করা নিজ অবস্থান থেকে ফরজ।  
দুই, বিশেষ ব্যক্তিদের ওপর বিশেষ দায়িত্ব। উলামায়ে কেরাম হলেন এ জাতির জন্য বিশেষ রাহবার ও বিশেষ ব্যক্তি। কারণ তারা সরাসরি নবীর ওয়ারিশ। 

নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেছেন: 

إِنَّ الْعُلَمَاءَ وَرَثَةُ الْأَنْبِيَاءِ، إِنَّ الْأَنْبِيَاءَ لَمْ يُوَرِّثُوا دِينَارًا وَلَا دِرْهَمًا، إِنَّمَا وَرَّثُوا الْعِلْمَ، فَمَنْ أَخَذَهُ أَخَذَ بِحَظٍّ وَافِرٍ" (سنن ابن ماجه )

‘আলিমগণ নবীগণের ওয়ারিস। আর নবীগণ দীনার ও দিরহাম (নগদ অর্থ) ওয়ারিসী স্বত্ব হিসাবে রেখে যাননি,  বরং তাঁরা ওয়ারিসী স্বত্বরূপে রেখে গেছেন ইলম (জ্ঞান)। যে ব্যক্তি তা গ্রহণ করলো, সে যেন একটি পূর্ণ অংশ লাভ করলো”। (সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস নং ২২৩)  
   
সুতরাং নবীগণের ওয়ারীস একজন আলেমে দ্বীন হিসেবে তাদের ওপর বিশেষ দায়িত্ব হল, নবীদের আসল এবং প্রধান দায়িত্ব ও দাওয়াতের এই কাজকে নিজের জীবনের মাকসাদ বানানো। আল্লাহ তাআলা উম্মতের এই বিশেষ জাতিকে তাদের জিম্মাদারী বুঝা এবং তার উপর আমল করার তাওফিক দান করুক। আমীন।    

দাওয়াতের এই কাজ করলে শুধুমাত্র মাদউর (যাকে দাওয়াত দেওয়া হয়) তার ফায়দা নয় বরং দায়ী (দাওয়াত দেনেওয়ালা) ব্যক্তিও অনেক ফায়দা ও উপকার রয়েছে। দুনিয়াতেও রয়েছে এবং আখেরাতেও। 

হাদীস শরীফে ইরশাদ হয়েছে:

مَنْ سَنَّ سُنَّةً حَسَنَةً فَعُمِلَ بِهَا كَانَ لَهُ أَجْرُهَا وَمِثْلُ أَجْرِ مَنْ عَمِلَ بِهَا لاَ يَنْقُصُ مِنْ أُجُورِهِمْ شَىْءٌ ، وَمَنْ سَنَّ سُنَّةً سَيِّئَةً فَعُمِلَ بِهَا كَانَ لَهُ وِزْرُهَا وَمِثْلُ وِزْرِ مَنْ عَمِلَ بِهَا لاَ يَنْقُصُ مِنْ أَوْزَارِهِمْ شَىْءٌ.

‘যে ব্যক্তি কোনো ভালো কাজের প্রচলন করবে এবং যারা সেটার অনুসরণ করবে তার জন্য এর প্রতিদান দেওয়া হবে এবং অনুসরণকারীর অনুরূপ নেকী দেওয়া হবে। কিন্তু তাদের প্রতিদান থেকে এতটুকু কমানো হবে না। অনুরূপ যে ব্যক্তি কোনো পাপ কাজের প্রচলন ঘটাবে এবং অন্যরা সেটার অনুসরণ করবে তাহলে সেই পাপের প্রচলনকারী এবং অনুসরণকারী উভয়ের গুনা তার আমলনামায় যুক্ত হতে থাকবে। অনুসরণকারীর পাপের সামান্য অংশও তাতে হ্রাস করা হবে না।’ ইবন মাজাহ্ : ২০৩; সহীহ ইবন হিব্বান : ৩৩০৮
   
কারো চেষ্টায় যদি কোন অমুসলিম ঈমান আনয়ন করে অর্থাৎ মুসলমান হয় তাহলে সেই দায়ীর জন্য কোটি টাকা লাভবানের চেয়েও বেশি মূল্যবান। যেটাকে হাদীসে লাল উটনির সঙ্গে উপমা দিয়েছেন।  

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হযরত মুয়াজ (রা.) কে সম্বোধন করে বলেছেন:  

عن معاذ بن جبل: أن النبي صلى الله عليه وسلم قال له: " يا معاذ، أن يهدي الله على يديك رجلا من أهل الشرك خير لك من أن يكون لك حمر النعم " (مسند أحمد ط الرسالة (36/ 392)

‘হে মুয়াজ! তোমার হাতে কোন অমুসলিম মুসলমান হওয়াটা, লাল একটি উটনী লাভ করার চেয়েও অধিক শ্রেয়। (মুসনাদে আহমদ, হাদীস ৩৬/৩৯২) 

বুখারী শরীফে উল্যেখ রয়েছে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেছেন: 

فَوَاللَّهِ لَأَنْ يَهْدِيَ اللَّهُ بِكَ رَجُلًا وَاحِدًا، خَيْرٌ لَكَ مِنْ أَنْ يَكُونَ لَكَ حُمْرُ النَّعَمِ» صحيح البخاري (5/ 134)

‘তোমার মাধ্যমে কোন অমুসলিম মুসলমান হলে সেটা তোমার জন্য সেই জামানার আরবের একটি লাল উটনির চাইতেও বেশি মূল্যবান”। এর দ্বারা উদ্দেশ্য আপনার হাতেই মুসলমান হতে হবে এমনটা নয়, বরং হতে পারে আপনি তার ধর্ম সম্পর্কে চিন্তা ফিকির করার ব্যাপারে অথবা ইসলাম ধর্ম সম্পর্কে পড়াশোনা করার আগ্রহ তৈরি হওয়ার ক্ষেত্রে মাধ্যম বা সহায়ক হয়েছিলেন। যার ফলশ্রুতিতে আজ সে সঠিক ধর্ম চিনতে পেরেছে এবং ইসলাম কবুল করেছে। যদিও সেটা অন্যের হাতে হোক না কেন! আপনি কিন্তু তাঁর পূর্ণ প্রতিদান পেয়ে যাবেন। ইন শা-আল্লাহ। 

আমরা যদি একটু চিন্তা করি তাহলে অবাক হয়ে যাবো যে, এই দাওয়াতের প্রতিফলন কতদূর পর্যন্ত যেতে পারে! হতে পারে আমার এই মেহনতের কারণে বংশের বংশ মুসলমান হয়ে যেতে পারে এবং কিয়ামত পর্যন্ত তার সিলসিলা জারী থাকতে পারে। আর আমি ঘরে বসে অথবা কবরে থাকা অবস্থায়ও তার সাওয়াব পেতে থাকবো। ইন শা-আল্লাহ।   

দাওয়াতের কারণে যদি কোন ধরনের ফায়দা উপলব্ধি নাও করা যায় অথবা নজরে প্রকাশ না পায় তারপরও সর্বনিম্ন যেই উপকারটি হবে তা হল, পূর্বের ন্যায় আর তারা ইসলাম ও মুসলমানদের প্রকাশ্যে বিরোধিতা করবেনা এবং মুসলমানদের থেকে ভয়ে অথবা ঘৃণায় দূরে থাকার চেষ্টা করবে না; বরং তারা পরম বন্ধু হিসাবে পরিণত হবে ইন শা-আল্লাহ। 

আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন:
     
{ وَمَنْ أَحْسَنُ قَوْلًا مِمَّنْ دَعَا إِلَى اللَّهِ وَعَمِلَ صَالِحًا وَقَالَ إِنَّنِي مِنَ الْمُسْلِمِينَ (33) وَلَا تَسْتَوِي الْحَسَنَةُ وَلَا السَّيِّئَةُ ادْفَعْ بِالَّتِي هِيَ أَحْسَنُ فَإِذَا الَّذِي بَيْنَكَ وَبَيْنَهُ عَدَاوَةٌ كَأَنَّهُ وَلِيٌّ حَمِيمٌ} [فصلت: 33، 34]

‘তার কথা অপেক্ষা উত্তম কথা আর কার যে আল্লাহর দিকে দাওয়াত দেয়, সৎকর্ম করে এবং বলে, আমি একজন মুসলমান? সমান নয় ভালো ও মন্দ। জওয়াবে তাই বলুন যা উৎকৃষ্ট। তখন দেখবেন আপনার সাথে যে ব্যক্তির শত্রুতা রয়েছে, সে যেন অন্তরঙ্গ বন্ধু। সুরা হা-মীম ৪১: ৩৩,৩৪

দাওয়াতের এই গুরুত্বপূর্ণ ফরজ দায়িত্ব আদায় না করলে যেমনিভাবে দুনিয়া ও আখেরাতের কল্যাণ থেকে বঞ্চিত হতে হবে তেমনিভাবে তার ক্ষতি বা তার খারাপ প্রভাব আমাদের উত্তরসূরীদের ওপর পড়তে পারে; যদিও তার প্রভাব পঞ্চাশ বছর পরে হোক না কেন। 

দাওয়াতের এই গুরুত্বপূর্ণ ফরজ দায়িত্ব আদায় না করার কারণে সম্ভাব্য কিছু ক্ষতি ও অকল্যাণের বিষয় নিচে তুলে ধরা হল:
   
ক. দাওয়াতে ইসলামের কাজ না করার সবচেয়ে বড় ক্ষতি হল যে, আমরা নিজেরাই কোন না কোন বাতিল মতবাদ বা ধর্মের মাদউ তথা তাদের নিশানায় পড়ে যাব। যার কারণে আস্তে আস্তে আমাদের ঈমান দূর্বল হয়ে যাবে এবং আমরা অথবা আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম ঈমান হারা হয়ে দুনিয়া থেকে যেতে পারে। কারণ আমাদের পূর্বসুরীদের দাওয়াতের মেহনতের কারণে আজ আমরা মুসলিম হিসেবে পরিচয় দিতে পারতেছি এবং আমাদের রব আল্লাহ তাআলাকে চিনতে পেরেছি। তাদের দাওয়াতের মেহনত যদি না থাকত তাহলে আমাদেরকে অন্যান্য দেশের অমুসলিমদের মতই থাকতে হতো। আল্লাহ তাআলার কাছে দুয়া, তিনি যেন আমাদের পূর্বে সকল দায়ী ইলাল্লাহদেরক মাফ করে দেন এবং জান্নাতের উচু মাকাম দান করেন। আমিন। 

খ. দাওয়াতের এই কাজ আমাদের প্রত্যেকের ওপর ফরজ বিধায় অন্যান্য ফরজ তরক করার কারণে যেমনি ভাবে আমাদেরকে আল্লাহর কাছে হিসাব দিতে হবে তেমনি ভাবে দাওয়াতের এই ফরজ কাজ না করার কারণেও আমাদেরকে আল্লাহর কাছে হিসাব দিতে হবে এবং পূর্বে উল্লেখিত সকল প্রকারের ফায়দা থেকে আমরা বঞ্চিত হয়ে যাব। আল্লাহ তাআলা আমাদের সকলকে হেফাজত করেন। আমিন।  

গ. দাওয়াতে ইসলামের কাজ মানবতার সর্বোচ্চ পর্যায়ের কাজ। সুতরাং মানবতার খাতিরে হলেও আমাদেরকে দাওয়াতে ইসলামের কাজ করতে হবে। আল্লাহর বান্দাদেরকে জাহান্নামের আগুন থেকে বাঁচানোর জন্য চেষ্টা সাধনা চালিয়ে যেতে হবে। 

মনে করি আমরা কোনো রাস্তা দিয়ে যাচ্ছি, হঠাৎ কোনো গাড়ি এসে কোন ব্যক্তিকে ধাক্কা দিয়ে চলে গেল অথবা কোন দুর্ঘটনা ঘটে গেল, তখন কি কেউ (যার মধ্যে মানবতা বলতে কিছু রয়েছে) সে বসে থাকতে পারবে অথবা সে অবস্থায় তাকে রেখে চলে যেতে পারবে? অবশ্যই না, বরং সে তৎক্ষণাৎ তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাবে এবং তাকে বাঁচানোর জন্য যত চেষ্টা করার সে করবে। তখন কেউ এটা জিজ্ঞেস করবে না যে, তুমি কোন ধর্মের লোক, বরং তার সর্ব প্রথম কাজটা হবে তাকে বিপদ থেকে বাঁচানো এবং উদ্ধার করা। 

তেমনিভাবে যদি কেউ আগুনে পড়ে অথবা পানিতে পড়ে মৃত্যুর দিকে অগ্রসর হয়। সুতরাং আমাদের সামনে যখন কোন অমুসলিম ভাই ও বোন চির শাস্তির জায়গা জাহান্নামের পথে অগ্রসর হয়, জাহান্নাম নামক গর্তে পড়ে যাবে এবং সেখানে চিরস্থায়ী ভাবে আগুনে জ্বলতে থাকবে তখনও আমাদের উচিত হল, মানবতার দাবি হল তাকে তৎক্ষণাৎ বাঁচানোর চেষ্টা করা এবং তাকে উদ্ধার করা।  
   
পরিশেষে উদাত্ত আহ্বান হল, সাহাবায়ে কেরাম (রা.) থেকে আজ পর্যন্ত সমস্ত আকাবিরগণ যেমনিভাবে দাওয়াতের এই ফরজ দায়িত্বকে পরিপূর্ণভাবে আদায় করে গিয়েছেন আমাদেরকেও আমাদের জামানার আল্লাহ ভোলা লোকদেরকে আল্লাহর সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার জন্য এগিয়ে আসতে হবে এবং চেষ্টা সাধনা চালিয়ে যেতে হবে। 

দাওয়াতের এই ধারাবাহিকতা বাকি বা জারী থাকলেই আমাদের উত্তরসূরীরা ইসলাম পাবে ও তার ওপর আমল করে চিরস্থায়ী ঠিকানা জান্নাত অর্জন করতে পারবে। এভাবেই কিয়ামত পর্যন্ত চলতে থাকবে। অন্যথায় দুনিয়াতে আল্লাহ বলার মত লোক না থাকলে দুনিয়াও বাকি থাকবেনা বরং আল্লাহ ধংস করে দিবেন। আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে বুঝা ও মানার তৌফিক দান করেন। আমিন।   

আজকের টাঙ্গাইল
আজকের টাঙ্গাইল