পদ্মা সেতুর জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারকে ধন্যবাদ
আজকের টাঙ্গাইল
প্রকাশিত: ১৬ জুন ২০২২
২০১৬ সালের কথা। জরুরী চিকিৎসার প্রয়োজনে ভারত ভ্রমন করেছিলাম। ফিরেছি বাসে। শীতের সময় ছিলো। ফেরার সময় বেনাপোল থেকে রওনা করেছিলাম বিকালের দিকে। বাসা বলে রেখেছিলাম ইনশাল্লাহ রাতে বাসায় একসাথে খাবার খাবো। গাড়ীও চলছিলো সেই মতই।
সন্ধায় পৌছে গেলাম ফেরীঘাটে। সঠিক সময়ে ফেরীতেও উঠে গেলো গাড়ী। ফেরীও ছেড়ে দিয়েছে। বাসেই ঝিমুনি হচ্ছিলো আশায় আছি কখন বাসায় যাবো। কিন্তু বিধীভাম রাত প্রায় ৮টার দিকে ফেরী বন্ধ হয়ে গেলো।
ঘটনার অনুসন্ধানে বের হলাম। বাস থেকে নামতেই এক ভাইয়ের সাথে খেলাম ধাক্কা আমি তাকে দেখতেই পাইনি। বুঝতে পারলাম সেও আমাকে দেখতে পায় নি। এত্ত কুয়াশা যে ঠিক সামনের কিছুই দেখা যাচ্ছে না।
আমরা অপার পদ্মার মাঝে কিনারায় না শুরুতেই কিছুই বুঝার উপায় নেই। মোবাইলের নেটওয়ার্কও নাই। তাই বাসায় জানাতেও পারছি না। তাও একটা মেসেজ দিয়ে রাখলাম যে ফেরী বন্ধ হয়ে আছে কখন ফিরবো কিছুই জানি না।
এভাবে আশায় থাকতে থাকতে রাত ১১ টায় প্রচন্ড ক্ষুধা অনুভব করলাম মনে পরলো সব শেষ দেশের বাইরে কলকাতায় খেয়েছি। এরপর আর খাওয়া হয়নি। বাসার আলুভর্তা শুটকি আর গরুর মাংসের কথা বার বার মনে পরছে। কখন বাসায় যাবো আর খাবো তাই ভাবছি।
এদিকে কেউ একজন বলছে ভাই যদি ভাই না খেয়ে থাকেন তাড়াতাড়ি ফেরীতে খেয়ে নেন। কিছুক্ষন পর আর কোন খাবার পাবেন না। এই ফেরীর অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে আজ রাতে আর ছাড়বে না। আমিও শত অনিচ্ছা সত্যেও আলুভর্তা, শুটকি আর গরুর মাংস মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলে দিলাম।
ফেরীর কেন্টিন গিয়ে দেখি ১০/১৫জন খাবার খাচ্ছে। বয় জিজ্ঞাস করলাম কি আছে? জানালো মামা ইলিশ মাছ ভুনা আর ডাল ভাত। আর কিছু নাই। পর্যবেক্ষণ করতে গেলাম ইলিশের সাইজ। কেমন দেখলাম অথৈ তেলের পদ্মায় একাকী বড় আকাড়ের পুটির সাইজের ইলিশের একটি লেজ হাবুডুবু খাচ্ছে। দেখেই পেটে মোচর দিয়ে উঠলো অনিচ্ছা সত্যেও দাঁড়িয়ে রইলাম।
মামা বললো আপনি কি নিবেন? না নিলে সরেন অন্যকে দেই। এর পর কিন্তু শুধু ডাল দিয়ে খেতে হবে। আমি আর ইলিশের দিকে না তাকিয়ে পেটের দিকে তাকিয়ে বললাম দিন।
ঠান্ডা ভাত তেলে চুপচুপ ইলিশ লেজ আর ডাল ধোয়া পানি দিয়ে গোগ্রাসে খেয়ে নিলাম। আমি যখন ঢেকুড় তুলছি। তখন দেখলাম প্রায় ৫০ জন এসেছে খেতে কিন্তু কোন খাবার নেই। এমনকি বিস্কুট নেই, চিপসও নেই। ১২ টাকার বেনসন সিগারেট ২৫ টাকা, তাও কেউ পাচ্ছে না।
একটু ফেরির ডেকের উত্তর পার্শে একটা হাওকাও শুনা গেলো আমার উৎসাহী মন সেদিকে টেনে নিয়ে গেলো। দেখলাম একটা লঞ্চ এসে ফেরীর সাথে ভিরেছে ছোট্ট সেই লঞ্চে জনা পঞ্চাশেক লোক। লঞ্চ কোন দিক খুজে না পেয়ে ৩য় বারের মত ফেরীর সাথে ভিড়েছে।
সারেং তার সমস্ত কারিগরি উৎসাহ হারিয়ে উদাস মনে বিঁড়ির সুখ টানে ব্যাস্ত, আর যাত্রীরা যে যার মত বিধাতার ডাকে ব্যস্ত এবং লঞ্চের লোকজনের প্রতি অভিসম্পাত করছে।
কিছুক্ষণ এই ঘটনা বিচক্ষণতার সহিত পর্যবেক্ষণ করে অন্য দিকে হাটতে থাকলাম। এর মধ্যে লাশের এ্যাম্বুলেন্স থেকে কান্নার শব্দ স্তিমিত হয়ে এসেছে। সেখান থেকে এক মাঝ বয়সী মহিলা মাথা বের করে জিজ্ঞাস করলো, বাবা ফেরী কখন ছাড়বে।
হতাশ দৃষ্টি দিয়ে তাকে আরো হতাশ করে আমি সামনের দিকে এগিয়ে গেলাম।
পাশের এক মাইক্রো থেকে প্রসব বেদনার কাতর এক মায়ের চিৎকার কিছুক্ষণ পর পর মধ্য রাতের মাঝ পদ্মার আকাশ ভারী করে চলছে।
শীতের তীব্রতার কাছে পরাস্ত হয়ে আমিও আমাদের বাসে আশ্রয় নিলাম।
এদিকে ঘড়িতে তখন রাত মাত্র ২টা। আবার মোবাইলের নেটওয়ার্ক খুজলাম, কিন্তু না এখনো নেই। বাসের নিস্তবদ্ধতা আমাকেও ঘুমের দিকে টেনে নিচ্ছে, যদিও বাসের পিছনের দিকে একজনের নসিকা গর্জন ঘুম ডিস্টার্ব করার পায়তারা করছে পাত্তা দিলাম না।
ঘুম থেকে উঠে দেখি ঘড়িতে দেখাচ্ছে সকাল ৭টা। বাইরে কিছু দেখার চেষ্টা করলাম। না কিছু দেখা যাচ্ছে না। কান টুপিটা আরেকটু টেনে ভালো করে কানের লতীটা ঢেকে দিলাম। অনিচ্ছা সত্যেও প্রকৃতির ডাকে হার মেনে বাস থেকে নামলাম।
খুব ভালো করে গত রাতের কথা চিন্তা করে দুহাত সামনে দিয়ে আস্তে আস্তে টয়লেটের দিকে আগালাম। একহাতে নাক মুখ ডেকে কোন দিকে না তাকিয়ে এবং আমিও কারো দিকে কর্নপাত না করে কাজ শেষ করে ফেললাম।
একটা চা খাবো এই আশায় কেন্টিনে গেলাম। দেখি সেখানে সবাই ঘুমিয়ে আছে। কাউকে ডিস্টার্ব করলাম না। ব্যাগপ্যাক থেকে সর্বশেষ পানির বোতল থেকে সাবধানে এক ঢোঁক মেরে দিলাম। বাকিটা সঞ্চয়।
পরিস্থিতি বলছে একটু পর পানির জন্য মারামারি হবে। কোথাও খাওয়ার পানি নেই। উদ্ধার পাবার সম্ভাবনা খুব ক্ষীণ।
ভারত থেকে নিয়ে আসা বিস্কুটের একটা প্যাকেট ব্যাগপ্যাকে ছিলো, পুরোটাই খেয়ে নিলাম। হাঁটছি এদিক সেদিক।
দেখি এক কর্নারে দাঁড়িয়ে এক যুবক কান্না করছে। জিজ্ঞাসা করলাম, ভাই কোন সমস্যা? তিনি বললেন, তার আজকে চাকরীর ইন্টারভিউ ছিলো সকাল ১০টায়। চাকরীটা তার খুব প্রয়োজন, বাবা নেই, মা অসুস্থ, ছোট একটা বোন বিয়ের বয়সী। এই চাকরীটা পেলে সে মায়ের চিকিৎসা বোনের বিয়ে করাতে পারবে।
কিন্তু কি আর করা, সে তো ইন্টারভিউই দিতে পারলো না। তাকে সান্ত্বনা দেওয়ার ভাষা খুজে পেলাম না।
লজ্জিত এবং চোখের ঈষন কোন পানির ঝিলিক নিয়ে আমিও বাসে ফেরত আসলাম।
আর ভয়ে বের হইনি। বাহিরের সিচুয়েশনে আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। যখন রোঁদ হবে কুয়াশা কাটবে, তখন আমরা এই অবস্থা থেকে নিস্তার পাবো।
খালি আপেলের ঝুড়ি থেকে পুরাতন পত্রিকার ছেড়া অংশ কুড়িয়ে নিয়ে এসেছি, তাই পড়ে সময় কাটাব। ছেড়া পত্রিকায় মননিবেশ করলাম এবং আশেপাশের পরিবেশ উপেক্ষার চেষ্টায় থাকলাম। আবার ঘুম পাচ্ছে, হাত থেকে পত্রিকা পরে গেলো, আমিও ডুবে যাচ্ছি পদ্মায়, ডুবে যাচ্ছি নিঃশ্বাস নিতে পারছি না।
চারদিক থেকে পানি আমার নাক মুখে ঢুকে যাচ্ছে, ঐ দূর থেকে ফেরীর সাইরেন শুনা যাচ্ছে, আর বুকের উপর মনে হচ্ছে একটা বড় পাথর চাপা পরছে। আমি কি মরে যাচ্ছি? কি হবে, কি হবে।
খুব জোরে হাতটা নাড়া দিলাম, চোখ খুলে তাকানোর চেষ্টা করলাম। চিৎকার দিয়ে সাহায্য চাইবো দেখি পাশের সিটে মোটকা বেটা তার সমস্ত শরীরের ভার আমার উপর দিয়ে নাক দিয়ে সাইরেন বাজিয়ে যাচ্ছে। ইচ্ছে করেই জোরে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিলাম।
ঘড়িতে এখন দুপুর ১টা, একটু একটু করে কুয়াশা কাটছে।
দুপুর ২টার দিকে দেখলাম আমরা ঘাট থেকে ১০০ মিঃ দূরে দাড়িয়ে আছি। এই ১০০ মিঃ দূরত্ব পার হবার জন্য আমরা ১৮ ঘন্টা ধরে নদীতে ভেসেছি। অসংখ্য মানুষের কষ্টের আর্তনাদ দেখেছি। সন্তানসম্ভবা নারীর চিৎকার শুনেছি। বেকার যুবকের আর্তনাদ দেখেছি।
এই অবর্ননীয় কষ্টের লাঘব হতে চলেছে। আসছে ২৫ জুন উদ্বোধন হবে আমাদের স্বপ্নের পদ্মা সেতুর।
যেভাবেই হোক এই সেতুর প্রয়োজনীয়তা লিখে শেষ করা যাবে না। যারা এই রাস্তায় যাতায়াতের কষ্ট সহ্য করেছে তারাই বলতে পারবেন।
আমি আমার পক্ষ থেকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বর্তমান সরকারকে ধন্যবাদ এবং শুভেচ্ছা জানাই।
এস এম ইমরুল কায়েস রাজিব
প্রকাশক,
ঘাটাইল ডট কম
- এভিয়েশন শিল্পের উন্নয়নে সহযোগিতা করতে চায় যুক্তরাজ্য
- বিশ্ব ম্যালেরিয়া দিবস আজ
- হজযাত্রীদের সহযোগীতার আশ্বাস সৌদির
- ব্যাংক একীভূত হলেও আমানত সুরক্ষিত থাকবে: বাংলাদেশ ব্যাংক
- ডিজিটাল পেমেন্ট বাড়াতে সহায়তা দেবে আইএফসি
- এসএসসি পরীক্ষা হবে ৫ ঘণ্টা, ৫০% লিখিত
- হিট অ্যালার্ট আরো তিনদিন বাড়লো
- র্যাবের মিডিয়া উইংয়ের নতুন মুখপাত্র কমান্ডার আরাফাত
- কুমিল্লায় সূর্যমুখী চাষে কৃষকের আগ্রহ বাড়ছে
- লক্ষ্মীপুরে দিনব্যাপী হজ্জযাত্রীদের প্রশিক্ষণ
- গ্যাটকো মামলা : খালেদা জিয়াসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন ২৫ জুন
- আত্মসাতের মামলায় সাইমেক্স লেদারের এমডি ও তার স্ত্রী কারাগারে
- বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে মরিশাসের প্রতি আহ্বান
- চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের সুফল দিতে সরকার নতুন প্রযুক্তি নিয়ে আসছে
- নির্মাণাধীন ভবনে এডিস মশার লার্ভা পেলে নির্মাণ কাজ বন্ধ করা হবে
- নীলফামারীতে ‘হিটস্ট্রোক’ সচেতনতায় সেমিনার
- নওগাঁয় উফশী আউশ চাষে ৫৮ হাজার কৃষককে প্রণোদনা
- শেখ হাসিনা ইসলামকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করেন না
- সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে নবনিযুক্ত তিন বিচারপতির শপথ কাল
- শাবিপ্রবিতে ডিজিটাল এটেন্ডেন্স সিস্টেমের উদ্বোধন
- নাটোরে অসচ্ছল ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের বৃত্তি প্রদান
- কক্সবাজারে ভোটার তালিকায় থাকা রোহিঙ্গাদের তালিকা চেয়ে আদেশ
- মন্ত্রী-এমপি’র স্বজনরা প্রার্থিতা প্রত্যাহার না করলে ব্যবস্থা
- উত্তর কোরীয় প্রতিনিধি দলের ইরান সফর
- সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে ৩ জন বিচারপতি নিয়োগ
- কুমিল্লার সফল খামারীদের মাঝে চেক ও পুরস্কার বিতরণ
- ভোলায় ৬০ লাখ মিটার অবৈধ জাল জব্দ
- বগুড়ায় আন্তর্জাতিক শব্দ সচেতনতা দিবস পালিত
- সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে
- নাটোরে আন্তর্জাতিক শব্দ সচেতনতা দিবস পালিত
- আজ ব্যাংককের উদ্দেশে রওনা দেবেন প্রধানমন্ত্রী
- বাংলাদেশ জলবায়ু উন্নয়ন অংশীদারিত্ব গঠন: প্রধানমন্ত্রী
- আমাদের সকল প্রাপ্তির দ্বার উন্মোচন করে গেছে মুজিব নগর সরকার
- হিটস্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে যে নির্দেশনাগুলো দিলো স্বাস্থ্য অধিদফতর
- ব্যাংককে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে লাল গালিচার সংবর্ধনা
- আজ আপনার জন্মদিন হলে জেনে নিন রাশিফল
- সেনাবাহিনীর অভিযানে কুকি চিন ন্যাশনাল আর্মির এক সন্ত্রাসী নিহত
- আগামীতে বাংলাদেশের হজ ব্যবস্থাপনা হবে বিশ্বের অন্যতম স্মার্ট
- উন্মুক্ত হতে পারে কুয়েতের শ্রমবাজার
- চালের বিকল্প হিসেবে গম আমদানি করছে সরকার
- ভেন্ডিং মেশিনে পাওয়া যাবে ট্রেনের টিকিট, আর নয় টিকিটের লাইন
- শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশ করবে আওয়ামী লীগ
- রেলসেতুতে যুক্ত হলো যমুনার দুই পার
- যুদ্ধের অর্থ জলবায়ু পরিবর্তনে ব্যয় হলে বিশ্ব বাঁচত
- বাংলাদেশ থেকে দক্ষ জনশক্তি নিতে চায় কিরগিজস্তান
- শোকজ শুরু বিএনপির পদধারী প্রার্থীদের
- এপ্রিলের ১৯ দিনে রেমিট্যান্স এসেছে ১২৮ কোটি ডলার
- বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর পরিচালকের শ্রদ্ধা
- বাংলাদেশ ও কাতারের মধ্যে ৫টি চুক্তি এবং ৫টি সমঝোতা স্মারক সই
- ইসলামপুরে হিট স্ট্রোকে ব্যবসায়ীর মৃত্যু