• মঙ্গলবার ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ||

  • ভাদ্র ২৫ ১৪৩১

  • || ০৫ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

সর্বশেষ:
বঙ্গবন্ধুর পরিবারের সদস্যদের বিশেষ নিরাপত্তার আইন বাতিল আড়িয়াল বিল অবৈধ দখল মুক্ত করতে কঠোর পদক্ষেপের নির্দেশ টেলিটকের সেবার মান উন্নত করার নির্দেশ উপদেষ্টা নাহিদ ইসলামের আসামি পক্ষে আইনজীবী না থাকলে সহায়তা দেবে লিগ্যাল এইড ১১৫ জনের বিরুদ্ধে চট্টগ্রামে সাইবার ট্রাইব্যুনাল মামলা বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবলস পিএলসির সক্ষমতা বৃদ্ধির ওপর গুরুত্বারোপ সীমান্ত হত্যা ঢাকা-দিল্লি সম্পর্কে বড় বাধা : পররাষ্ট্র উপদেষ্টা সুন্দর বাংলাদেশ গড়ার মাধ্যমে শহীদদের ঋণ শোধ করতে হবে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের শহীদদের সম্মান জানাবে সরকার বিদেশি নাগরিকদের শতভাগ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে

ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ড লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক দিলীপ কুমার

আজকের টাঙ্গাইল

প্রকাশিত: ৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪  

জেলায় বন্যার পানি কমতে শুরু করেছে। পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় কেউ কেউ ঘরে ফিরতে শুরু করেছে। তবে বন্যায় হাজার হাজার বাড়িঘর ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে অনেক বাড়িঘর বসবাসের উপযোগিতা হারিয়েছে। কুমিল্লার দক্ষিণাঞ্চলের পরিস্থিতির ইতিমধ্যে বেশ উন্নতি হয়েছে। তবে কিছু কিছু এলাকার মানুষ এখনো পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছেন। ঘরে ফিরে যেতে তাদের আরও তিন থেকে পাঁচদিন সময় লেগে যেতে পারে। বন্যা কবলিত মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, খাদ্যসংকট ও নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে অনেকে। তারা জানায়, যেখানে দুবেলা আহার জোটানো কষ্টসাধ্য, সেখানে বাড়িঘর ঠিক করার প্রশ্ন আরও পরের বিষয়। ৭০ বছর বয়সী মমতাজ উদ্দিন বাসসকে বলেন, নদীর কুলে বসবাস করলেও আমার এ বয়সে কখনো এত পানি দেখিনি। একটি জিনিসও ঘর থেকে বের করার সুযোগ পাইনি। পানির স্রোতে ঘর ভেঙে পড়ে মাটিসহ চলে গেছে। নাতি-নাতনিদের নিয়ে কোনমতে জান নিয়ে বের হয়ে পাশের একটি চারতলা ভবনে আশ্রয় নিয়েছিলাম। এখন যদি কেউ আমাদের জন্য সাহায্য সহযোগিতা নিয়ে পাশে দাঁড়ায় নাতি-নাতনিদের নিয়ে অন্তত মাথাগোঁজার ঠাঁই হবে। স্থানীয় বাসিন্দা জহিরুল হোসেন বাসসকে বলেন, বন্যার পানিতে তাদের ঘরবাড়ি একদম শেষ হয়ে গেছে। কোনো মতে মাথা গোঁজার ঠাঁই পাবে এমন অবস্থাও নেই। মূলত কৃষি ও দিনমজুরের কাজ করেই তাদের পরিবার চলতো। ভিটেমাটি ছাড়া তেমন আর কোন সম্পদও নেই। এদিকে ভয়াবহ বন্যায় কুমিল্লার বুড়িচংয়ের সর্বত্রই এখন একই চিত্র। যেখানে খেয়ে-পরে টিকে থাকাই কষ্টের, সেখানে মাথা গোঁজার ঠাঁই হারিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টায় বানভাসি হাজারো মানুষ। বুরবুড়িয়া এলাকার বাসিন্দা শ্যামলা খাতুন বাসসকে বলেন, বাড়িঘরের পানি কমলেও বাড়িতে তো কিছুই নাই। আমার সাজানো সংসারে কত কিছুই না ছিল। মিলন নামের এক বাসিন্দা বলেন, বাঁধ ভাঙার খবরে জানডা লইয়া বাহির হইছি। কিছুই সরাতে পারিনি। পানি কমায় বাড়িতে এসে দেখি, ঘরডা পইরা রইছে। আগামী দুই-তিন মাসেও ঘর ঠিক করে উঠতে পারুম না। ইছাপুরা গ্রামের জাহাঙ্গীর আলম বাদশা বলেন, আমার বয়স ৬৫ বছর। এ বয়সে গ্রামের রাস্তাঘাট কখনো ডুবতে দেখিনি। এবারের বন্যা ইতিহাস সৃষ্টি করবে। তিনি আরও বলেন, বুড়িচংয়ে মাটির বসতি বেশি। অতিরিক্ত পানির কারণে ঘরের দেওয়াল নরম হয়ে ধসে পড়েছে। বাকশিমূল গ্রামের আমজা হোসেন বলেন, এর আগেও একবার গোমতীর বাঁধ ভেঙেছে, কিন্তু আমাদের গ্রামে পানি ওঠেনি। এবার বুকসমান পানি হয়েছে। পানিতে ডুবে ছয়টি মাটির ঘর ভেঙে গেছে। জেলা প্রশাসনের তথ্যমতে, জেলার ১৭ টি উপজেলায় মধ্যে বন্যায় আক্রান্ত ১৪ টি উপজেলায় ঘর-বাড়ি হারিয়েছে ১ লক্ষ ১০ হাজার পরিবার, সবচেযে বেশি বুড়িচং উপজেলার ৪০ হাজার পরিবার ঘর বাড়ি হারিয়েছে। জেলা দুর্যোগ ও ত্রাণ কর্মকর্তা আবেদ আলী বলেন, জেলায় ১০ লাখ ৭৮ হাজার মানুষ পানিবন্দি ছিলো। ৭ শ’ ২৪টি আশ্রয়কেন্দ্রে ৭৮ হাজারেরও বেশি মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন। জেলা প্রশাসন থেকে ৩৯ লাখ নগদ টাকা ও ৮০০ টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে কুমিল্লা জেলায় ১৬ শ’ টন চাল, নগদ ২৫ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। এদিকে কুমিল্লায় পর্যাপ্ত ত্রাণ এসেছে বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন। বিভিন্ন সংগঠন ও শিক্ষার্থীরা ত্রাণগুলো দুর্গতদের মধ্যে পৌঁছে দিচ্ছেন। কুমিল্লা জেলা প্রশাসক খন্দকার ম মুশফিকুর রহমান বলেন, ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে,আমরা আমাদের প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা করছি তাদের।