• শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১২ ১৪৩১

  • || ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

আজকের টাঙ্গাইল

রৌমারীতে নাব্যতা সংকটে ব্রহ্মপুত্র নদে নৌকা চলাচল ব্যাহত

আজকের টাঙ্গাইল

প্রকাশিত: ২৪ জানুয়ারি ২০২৩  

নাব্যতা সংকটে ব্রহ্মপুত্র নদে নৌকা চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। এ কারনে কুড়িগ্রাম, চিলমারী নৌবন্দর, ফকিরের হাট, রৌমারী লডঘাট, কর্তিমারী, বলদমারা, ঘুঘুমারী, খেওয়ারচর, রাজিবপুর লডঘাট, মোহনগঞ্জ, কোঁদালকাটি ও নয়ারচর নৌপথে নৌকা চলাচলে ব্যাহত সৃষ্টি হয়েছে। এতে নৌপথে চলাচলকারী যাত্রীরা পড়েছেন চরম ভোগান্তিতে। 

গত দেড়মাস ধরে নাব্যতা সংকট থাকলেও তা উত্তরনের জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তর কোন উদ্যোগ গ্রহন না করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন নৌপথে যাতায়াতকারী যাত্রী ও নৌকার মাঝিরা।
মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে সরেজমিনে ফলুয়ারচর লডঘাটে গিয়ে জানা যায়, ব্রহ্মপুত্র নদের বুকে বালু মাটি ভরাট হয়ে চর জেগে উঠায় মালামাল ও যাত্রীবাহী নৌকা চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। দেড়মাস থেকে বলদমারা নৌকাঘাট থেকে ফকিরের হাট নৌকাঘাটে যেতে নদের পানি কমে যাওয়ায় যাত্রীবাহি নৌকা ঘাটে যেতে পারছে না। নদের চরে একেবেকে বয়ে যাওয়া অল্প পানির ¯্রােতধারায় যাত্রী নিয়ে নৌকা চলাচল করছে। এতে রৌমারীর বিভিন্ন নৌকা ঘাট থেকে চিলমারী নৌকা ঘাটে পৌছিতে সময় লাগছে আগের চেয়ে দ্বিগুণ। অপর দিকে অল্প পানি দিয়ে এই নৌকা চলতে মাঝে মধ্যে বালুর চরে ঠেকছে। ফলে যাত্রীদের জীবনের ঝুকিও বাড়ছে। নৌকা চলাচল না করায় নদীর তীর সংরক্ষণ কাজের বালু ও পাথর  বহন করা সম্ভব হচ্ছে না।
নৌকার মাঝি সমেজউদ্দিন বলেন, ফলুয়ারচর ও বলদমারা থেকে ফকিরেরহাট ঘাটে নৌকা যেতে প্রায় তিন ঘন্টা সময় লাগে, আগে এক ঘন্টায় যাইতাম, পানি না থাকায় সময় বেশি লাগে। নদী মধ্যে নৌকা আটকা গেলে সারা দিন শেষ হয়ে যায়, যাত্রীরা হরানির মধ্যে পড়ে, আমাদের নদী পথে ব্যবসার দিন শেষ।
নৌকার মাঝি নিলচাঁন মেকার বলেন, বলদমারা ঘাট থেকে আমরা এক ঘন্টার মধ্যেই ফকিরের হাট ঘাটে যেতাম। নদীর পানি কমে যাওয়ায় ওই ঘাটে যেতে বর্তমান প্রায় ২ ঘন্টা সময় লাগছে।
একটি মামলার বাদী হেলাল মিয়া বলেন কর্তিমারী ঘাট থেকে সকাল ১০টার মধ্যেই কুড়িগ্রাম কোর্টে পৌঁছানো যেতো আদালতে হাজিরা দিয়ে আবার বাড়ি আসতাম, এখন সকালে বাড়ি থেকে বের হলেও নদীতে পানি না থাকায় কুড়িগ্রাম পৌঁছাতে ১২টা বাজে। এ কারনে রৌমারী ও রাজিবপুর উপজেলার মানুষ ভোগান্তিতে পড়েছে।
পাথর ব্যবসায়ী আলহাজ্ব মো, জাহিদুল ইসলাম জাহিদ বলেন, ব্রহ্মপুত্র নদের পানি হ্রস ও নদীর বুকে ছোট ছোট অসংখ্যক চর জেগে ওঠার কারনে পণ্যবাহী নৌকা রৌমারী, বলদমারা ঘাটে আসেনা। ফকিরের হাট, চিলমারী, কুড়িগ্রাম নৌকা ঘাট থেকে মালামাল নৌপথে রৌমারী আনা যাচ্ছে না, ব্যবসায়ীরা ক্ষতির মুখে পড়েছে। জরুরী ভিত্তিতে নদী ড্রেজিং করে নৌপথ সচল  না করলে নৌপথে ব্যবসা ও যাত্রী পারাপার বন্ধ হয়ে যাবে।
স্থানীয় ব্যবসায়ী সাইফুল ইসলাম জানান নাব্যতা সংকটে নৌপথের দূরত্ব বেড়েছে। খরচ ও সময়ও বেশি লাগছে। আমরা সময়মতো হাটে পণ্য নিতে পারছি না। ব্যবসায়ীকভাবে খারাপ সময় যাচ্ছে।
রৌমারী, চিলমারী ও রাজিবপুর ঘাট ইজারাদার ও উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান শফিউল আলম বলেন, নাব্যতার সংকটের কারনে আমাদের আয় অনেক কমেছে। নদের পানি কমে গিয়ে ডুবোচর সৃষ্টি হওয়ায় উলিপুর উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়নসহ রৌমারী ও রাজীবপুর উপজেলার সঙ্গে চিলমারী, ফকিরের হাট, কুড়িগ্রাম নৌঘাটে নৌচলাচল ব্যাহত হচ্ছে। নাব্যতা সংকট দূর করতে নৌপথ ড্রেজিং করে কার্যকর ব্যবস্থা না নিলে নৌপথ বন্ধ হয়ে যাওয়া সম্ভবনা রয়েছে।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, নদেও বুকে ছোট ছোট চর জাগায় নদের পানির প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এ কারনে নাত্যতা সংকট দেখা দিয়েছে। তবে নদের ড্রেজিং এর দায়িত্বে আমরা না।
 

আজকের টাঙ্গাইল
আজকের টাঙ্গাইল