• শনিবার ০৫ অক্টোবর ২০২৪ ||

  • আশ্বিন ২০ ১৪৩১

  • || ৩০ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

বৈষম্যহীন রাষ্ট্র গড়তে হলে প্রথমে সংবিধান সংস্কার করতে হবে: ফরহাদ

আজকের টাঙ্গাইল

প্রকাশিত: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪  

সমাজচিন্তক ও গবেষক ফরহাদ মজহার বলেছেন, বৈষম্যহীন একটি রাষ্ট্র গড়তে হলে প্রথমে সংবিধান সংস্কার করতে হবে।
‘নতুন বাংলাদেশ বৈষম্যহীন কল্যাণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা’ শীর্ষক এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি আজ এ কথা বলেন। 
জাতীয় প্রেস ক্লাবের তৃতীয় তলায় আকরাম খাঁ হলে প্রফেসর কে আলী ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে এ সেমিনার অনুষ্টিত হয়। 
অধ্যাপক ড. শেখ আকরাম আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সমাজচিন্তক ও গবেষক ফরহাদ মজহার। সেমিনারে আরো বক্তৃতা করেন- সাবেক সচিব ও এনবিআর এর চেয়ারম্যান আবদুল মজিদ, রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল (অব:) আবুল কালাম, অর্থনীতিকিদ ড. রেজা কিবরিয়া, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদের সাবেক ডীন অধ্যাপক সিদ্দিকুর রহমান খান, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব:) সলজার রহমান ও ফরিদ উদ্দিন প্রমুখ।
প্রধান অতিথির বক্তৃতায় ফরহাদ মজহার বলেন, গণতন্ত্র একটি রাষ্ট্রের বিশেষ ধর্ম। এটা রাষ্ট্রের বিশেষ রূপ। গনতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে রাষ্ট্র তার কর্মকান্ড সুষ্ঠুভাবে নির্ধারণ করলেই একটি রাষ্ট্র সুচারুভাবে গঠন করা হয়। তিনি বলেন, ১৯৭২ সালের যে সংবিধান তা ছিল পাকিস্তান আমলের, সেই সংবিধান প্রণেতারা সেই সময়ের আলোকে সংবিধান রচনা করেছিলেন। বর্তমানে যে সংবিধানের আলোকে রাষ্ট্র চলছে তা সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তৈরি সংবিধান। বৈষম্যহীন একটি রাষ্ট্র গড়তে হলে প্রথমে সংবিধান সংস্কার করতে হবে।
ফরহাদ মজহার বলেন, রাষ্ট্রের প্রত্যেকটা সেক্টরে সংস্কার করতে হবে। জনগণকে রাষ্ট্র ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত করতে হবে। সুতরাং দেশের গণতন্ত্র বজায় রাখতে প্রত্যেকটা ক্ষেত্রে জনগণের অংশগ্রহণ ও সম্পৃক্ততা নিশ্চিত করতে হবে। স্ব স্ব ক্ষেত্রে সবাইকে কাজ করার সুযোগ সৃষ্টি করতে দিতে হবে। 
সেমিনারে বক্তারা বলেন, সমাজের সর্বস্তরের মানুষের অংশগ্রহণে একটি বৈষম্যহীন রাষ্ট্র গঠন নিশ্চিত করতে হবে। তারা বলেন, জনসাধারণ একটি দেশের মূল চালিকাশক্তি। স্ব স্ব ক্ষেত্র থেকে এগিয়ে এলে একটি দেশ দ্রুত উন্নয়নের লক্ষ্যে এগিয়ে যাবে।
সেমিনারে লিখিত প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনিস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. নুরুল ইসলাম। প্রবন্ধে বলা হয়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে চরম গণ-অসন্তোষে ৫ আগস্ট স্বৈরাচার সরকারের পতনের ফলে জনমানুষের মধ্যে রাষ্ট্র সংস্কারের আকাক্সক্ষা বাস্তবে রূপায়নের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।
প্রবন্ধে বলা হয়, ছাত্র জনতার বিপ্লব একটি শোষণহীন, বৈষম্যহীন, দুর্নীতিমুক্ত গণতান্ত্রিক সমাজ প্রতিষ্ঠার বাস্তবতা এখন। দেশের জনসংখ্যার অর্ধেকই তরুন ও যুবা। তাদের প্রত্যাশা নতুন বাংলাদেশ গড়ে তোলা। বাংলাদেশের সংবিধানের আলোকে রাষ্ট্র সংস্কারের ১২ দফা রূপরেখা-২০২৪ পেশ করা হয়। ১২ দফার প্রস্তাবে রয়েছে, রাষ্ট্রের তিনটি প্রধান অঙ্গ নির্বাহী বিভাগ, আইনসভা ও বিচার বিভাগের মধ্যে ক্ষমতার ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা, যাতে একে অপরের উপর ক্ষমতা বা কর্তৃত্বের প্রয়োগ থেকে বিরত থাকে। বিচার বিভাগ পৃথকীকরণ নিশ্চিত করা এবং বিচারপতি নিয়োগে আলাদা কমিশন বা আইন প্রণয়ন করা। কেবল ধমর্, গোষ্ঠী, ব নারীপুরুষভেদ বা জন্মস্থানের কারণে কোন নাগরিকের প্রতি রাষ্ট্র বৈষম্য করবে না। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করবে।