• শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৭ ১৪৩১

  • || ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

আজকের টাঙ্গাইল

৪৪ বছরের বাবার সঙ্গে মেয়ের এসএসসি পাস

আজকের টাঙ্গাইল

প্রকাশিত: ৩০ নভেম্বর ২০২২  

টাঙ্গাইলের ঘাটাইলে বাবা-মেয়ে এক সঙ্গে এসএসসি পাস করেছেন। বাবা মো. জয়নাল আবেদীন কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে ফুল মালীর চালা ফজরগঞ্জ আলিম মাদ্রাসার ভোকেশনাল শাখার প্লোল্টি রিয়ারিং এন্ড ফার্মিং থেকে জিপিএ ৪ দশমিক ৮৬ এবং মেয়ে জেসমিন আক্তার ফুল মালির চালা ছাকেদ আলী হাইস্কুল এন্ড কলেজের মানবিক শাখা থেকে জিপিএ ৩ দশমিক ৩৩ পেয়ে এসএসসি পাস করেছেন।

এসএসসি পাস করা বাবা-মেয়ের বাড়ি উপজেলার সাগরদিঘী ইউনিয়নের ফুলমালি চালায়। বাবা-মেয়ে এক সঙ্গে এসএসসি পাস করায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। বন্ধুমহল, গ্রামবাসী, আত্মীয়-স্বজনরা নানাভাবে তাদের অভিনন্দন জানাচ্ছেন।

জানা যায়, বাবা মো. জয়নাল আবেদীন ও তার দুই মেয়ে এবার এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেন। বাবা ও বড় মেয়ে পাস করলেও ছোট মেয়ে মোসা. আছিয়া আক্তার অকৃতকার্য হয়েছে। বাবা মো. জয়নাল আবেদীন পেশায় একজন ব্যবসায়ী। পরিবারে তার চার মেয়ে ও এক ছেলে রয়েছে। ছেলে মো. রুহুল আমিন দ্বিতীয় শ্রেণি, বর্ষা ষষ্ঠ শ্রেণি ও সুমাইয়া অষ্টম শ্রেণিতে স্থানীয় রাশেদ মডেল স্কুলে পড়াশোনা করছে।

এ বিষয়ে মেয়ে জেসমিন আক্তার বলেন, বয়সকে জয় করে বাবা ৪৪ বছর বয়সে পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন। বাবার অদম্য ইচ্ছা-শক্তির কারণে এটা সম্ভব হয়েছে। আমার বাবা আমাদের জন্য অনেক পরিশ্রম করেন। বাবা আমার আদর্শ। আমাদের যেমন পড়াশোনার জন্য অনুপ্রাণিত করেন, তেমনি তিনি নিজেও পরীক্ষা দিয়ে পাস করেছেন। ছোট বোনের জন্য মন খারাপ লাগছে। কিন্তু আমাদের পরিবারের সবাই বাবার এই সফলতায় আনন্দিত।

মেয়ের সঙ্গে এসএসসি পাসের অনুভূতি জানিয়ে মো. জয়নাল আবেদীন বলেন, বড় মেয়েটা পাস করেছে। কিন্তু ছোট মেয়ের জন্য একটু মন খারাপ। মেয়েটা পাস করলে আনন্দটা পরিপূর্ণ হতো। মেয়েটা যেন পাস করে এজন্য পুনঃনিরীক্ষণের আবেদন করবো।

তিনি আরও বলেন, ছোটবেলায় সংসারের দায়িত্ব নিতে গিয়ে এসএসসি পরীক্ষা দিতে পারিনি। আমি ১৯৯৬ সালে পরীক্ষার্থী ছিলাম। পরে বিদেশে চলে যাই। সৌদি আরব ৫ বছর থেকে দেশে ফিরে আসি। ২০০১ সালে বিয়ে করে সংসার জীবন শুরু কর। আমার পাঁচ সন্তান। কিন্তু বুকের ভেতরে লেখাপড়া করতে না পারার চাপা কষ্ট মাঝে মধ্যেই আমাকে পীড়া দিতো। লোক লজ্জায় পড়ালেখা হয়ে উঠছিলো না। সমাজে দশটা মানুষের মতো নিজেকেও একজন শিক্ষিত মানুষ হিসেবে যেন পরিচয় দিতে পারি সেই লক্ষ্যে ২০২০ সালে ফুল মালীর চালা ফজরগঞ্জ আলিম মাদ্রাসার ভোকেশনাল শাখার প্লোল্টি রিয়ারিং এন্ড ফার্মিং ট্রেড এ নবম শ্রেণিতে ভর্তি হই।

রাশেদ মডেল স্কুলের পরিচালক রাশেদ আলম বলেন, আমি ব্যক্তিগত ভাবে আনন্দিত হয়েছি। বয়স কোন বাঁধা নয়, তা প্রমাণ করলেন জয়নাল আবেদীন। এ প্রজন্ম অনুপ্রেরণা পাবে। আমার প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকেও অভিনন্দন জানানো হয়েছে। আমি তাদের সফলতা কামনা করছি।

আজকের টাঙ্গাইল
আজকের টাঙ্গাইল