• শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৭ ১৪৩১

  • || ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

আজকের টাঙ্গাইল

ভ্রমণ পিপাসুদের জন্য বেড়ানোর জায়গা নাগরপুর চৌধুরী বাড়ি

আজকের টাঙ্গাইল

প্রকাশিত: ১৯ জুলাই ২০২২  

ঊনবিংশ শতাব্দীতে টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলায় জমিদার যদুনাথ চৌধুরী কারুকার্যমণ্ডিত নাগরপুর জমিদার বাড়ী (Nagarpur Zamidar Bari) প্রতিষ্ঠা করেন। প্রায় ৫৪ একর জায়গার উপর নান্দনিক সৌন্দর্যে নির্মিত এই জমিদার বাড়ী থেকেই চৌধুরী বাড়ীর প্রথম পুরুষ যদুনাথ চৌধুরী ও তার বংশধর উপেদ্র মোহন চৌধুরী, জগদীন্দ্র মোহন চৌধুরী ও শশাঙ্ক মোহন চৌধুরী জমিদারীত্ব করতেন। নাগরপুর চৌধুরী বাড়ীর পূর্বে ধলেশ্বরী ও পশ্চিমে যমুনা নদী বয়ে চলেছে। কথিত আছে যদুনাথ চৌধুরী নাগরপুরকে কোলকাতার মতো করে সাজানোর পরিকল্পনা থেকেই নাগরপুর ও কোলকাতার নৌপথকে কেন্দ্র করে নাগরপুরে এই চৌধুরী বাড়ী নির্মাণ করেন। পরবর্তীতে উপেদ্র মোহন চৌধুরীর বড় ছেলে জমিদার সতীশ চন্দ্র চৌধুরী নাগরপুরে স্কুল, কলেজ, মন্দির, দাতব্য চিকিৎসালয়, খেলার মাঠ ও হাট বাজার প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তৎকালীন ব্রিটিশ সরকার সতীশ চন্দ্র চৌধুরীর জনহিতকর কর্মকাণ্ডের স্বীকৃতি স্বরূপ তাঁকে “রায় বাহাদুর” খেতাবে ভূষিত করেন।

পাশ্চত্য ও মোঘল সংস্কৃতির মিশ্রণে নির্মিত চার তলা বিশিষ্ট নাগরপুর জমিদার বাড়ীতে রয়েছে অসংখ্য ছোট বড় ঘর, যার অভ্যন্তরে সুদৃশ্য শ্বেত পাথরের ছিল লক্ষণীয়। চৌধুরী বাড়ীর অন্যান্য স্থাপনার মধ্যে মূল ভবন, নহবত খানা, অতিথিমহল, শৈল্পিক কারুকার্য মণ্ডিত তিল তালা বিশিষ্ট ঘোড়ার দালান, পূজা আর্চনার ঝুলন দালান, পরীর দালান ও রঙমহল বিশেষভাবে উল্লেখ্য। নাগরপুর চৌধুরী বাড়ীর সাথে অবস্থিত রঙমহলের পাশেই ছিল ময়ূর, কাকাতোয়া, হরিণ ও ময়নার মতো বিভিন্ন প্রাণীতে সুসজ্জিত চিড়িয়াখানা। আর বাড়ীর দক্ষিণ দিকে ১১ একর জায়গার উপর “উপেন্দ্র সরোবর” নামের একটি দীঘি রয়েছে। বর্তমানে চৌধুরী বাড়ীর মূল ভবনে নাগরপুর মহিলা ডিগ্রি কলেজ স্থাপন করা হয়েছে।

যেভাবে যাবেন
ঢাকা থেকে নাগরপুর চৌধুরী বাড়ী দেখতে যেতে চাইলে প্রথমে টাঙ্গাইল জেলা শহরে আসতে হবে। ঢাকার মহাখালি বা কল্যাণপুর থেকে টাঙ্গাইল কিংবা ধনবাড়ী গামী যেকোন বাসে চড়ে টাঙ্গাইল যেতে পারবেন। এরপর টাঙ্গাইল শহর থেকে সিএনজিতে নাগরপুর এসে অটো রিক্সায় ভাড়া নিয়ে নাগরপুর চৌধুরী বাড়ী যেতে পারবেন। নাগরপুর থেকে চৌধুরী বাড়ীর দূরত্ব মাত্র ৭ কিলোমিটার।
 
কোথায় থাকবেন
ঢাকা হতে এক দিনেই নাগরপুর জমিদার বাড়ী দেখে ফিরতে পারবেন। যদি প্রয়োজনে রাত্রি যাপন করতে হয় তবে টাঙ্গাইল শহরের মসজিদ রোড ও নিরালা মোড়ে আল ফয়সাল, হোটেল প্রিন্স, ব্যুরো হোটেল, আযান রেসিডেন্সিয়াল, হোটেল প্যারাডাইস ইন, হোটেল সাগর ও হোটেল শান্তির মতো আবাসিক হোটেলে রাতে থাকতে পারবেন।

কোথায় খাবেন
টাঙ্গাইলের নিরালা মোড়ে নিরালা ঘর, কবিরস ও নিউ তৃপ্তির মতো বেশ কিছু রেস্তোরা আছে। এছাড়া নাগরপুর বাজারে হালকা চা-নাস্তা করার ব্যবস্থা রয়েছে।

বি.দ্র : যে কোন পর্যটন স্থান আমাদের সম্পদ, আমাদের দেশের সম্পদ। এইসব স্থানের প্রাকৃতিক কিংবা সৌন্দর্য্যের জন্যে ক্ষতিকর এমন কিছু করা থেকে বিরত থাকুন, অন্যদেরকেও উৎসাহিত করুন। দেশ আমাদের, দেশের সকল কিছুর প্রতি যত্নবান হবার দায়িত্বও আমাদের।

সতর্কতাঃ হোটেল, রিসোর্ট, যানবাহন ভাড়া ও অন্যান্য খরচ সময়ের সাথে পরিবর্তন হয় তাই আমাদের প্রকাশিত তথ্য বর্তমানের সাথে মিল না থাকতে পারে। তাই অনুগ্রহ করে আপনি কোথায় ভ্রমণে যাওয়ার আগে বর্তমান ভাড়া ও খরচের তথ্য জেনে পরিকল্পনা করবেন। এছাড়া আপনাদের সুবিধার জন্যে বিভিন্ন মাধ্যম থেকে হোটেল, রিসোর্ট, যানবাহন ও নানা রকম যোগাযোগ এর মোবাইল নাম্বার দেওয়া হয়। এসব নাম্বারে কোনরূপ আর্থিক লেনদেনের আগে যাচাই করার অনুরোধ করা হলো। কোন আর্থিক ক্ষতি বা কোন প্রকার সমস্যা হলে তার জন্যে নিউজ টাংগাইল দায়ী থাকবে না।

আজকের টাঙ্গাইল
আজকের টাঙ্গাইল