• শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৬ ১৪৩১

  • || ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

আজকের টাঙ্গাইল

বাসাইলে জমে উঠেছে ইউপি নির্বাচনের প্রচারণা

আজকের টাঙ্গাইল

প্রকাশিত: ৩১ ডিসেম্বর ২০২১  

টাঙ্গাইলের বাসাইল উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নের চারটি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন আগামী ৫ জানুয়ারী অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচন ঘিরে শেষ সময়ে প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রার্থীরা। পোস্টার, ব্যানারে ছেয়ে গেছে ইউনিয়নের অলিগলি।

প্রার্থীরা সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ঘুরছেন ভোটারদের দ্বারে দ্বারে, দিচ্ছেন নানান প্রতিশ্রুতি। মিছিল-মিটিং, পথসভা, উঠান বৈঠকে গণসংযোগ চলছে। ইউনিয়নের হাট-বাজার, চা স্টলে চলছে নির্বাচনি আলাপ-আলোচনা। চেয়ারম্যান প্রার্থীদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে সাধারণ সদস্য ও সংরক্ষিত নারী সদস্যরাও রাত-দিন ভোটারদের বাড়ি বাড়ি ঘুরে ভোট প্রার্থনা করছেন।

সবার আশা ভোট যুদ্ধে তারই জিত হবে। তবে সাধারণ ভোটাররা ভোট দেওয়ার ব্যাপারে কোনো প্রার্থীকে নিরাশ করছেন না। নির্বাচনের সময় যতই ঘনিয়ে আসছে, ততই প্রার্থীরা ভোটারদের কাছে গিয়ে তাদের আদর্শের বয়ানসহ ইউনিয়নে উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করছেন।

সরেজমিনে দেখা গেছে, চেয়ারম্যান, সাধারণ সদস্য ও সংরক্ষিত নারী সদস্য প্রার্থীরা দলবেঁধে প্রচার প্রচারণায় নির্বাচনী এলাকা সরগরম করে তুলছেন। তারা অটোরিকশা, ইজিবাইক ও রিকশায় মাইক বেঁধে গান-ছন্দে ছন্দে চালাচ্ছেন নির্বাচনী প্রচারণা।
৪টি ইউনিয়নের মধ্যে ২ টিতে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী রয়েছে। বিএনপি সমর্থিত প্রার্থীরা স্বতন্ত্র হিসেবে ৪ টি ইউনিয়নেই চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

উপজেলা নির্বাচন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, কাঞ্চনপুর ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে ৭ জন, হাবলা ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে ৫ জন, ফুলকি ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে ৭ জন ও কাউলজানী ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে ৪ জন জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

এছাড়াও সংরক্ষিত নারী সদস্য পদে ৫২ জন ও সাধারণ সদস্য পদে ১৫৮ জনপ্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন।

আনোয়ার হোসেন নামে এক ভোটার জানান, আমরা এমন একজন চেয়ারম্যান চাই, যিনি সাধারণ মানুষের নাগরিক অধিকার বাস্তবায়ন করবেন। ইউনিয়নের সব প্রকল্প ব্যয় উন্মুক্ত ও জবাবদিহি মূলক পরিষদ গঠন করবেন।

ভোটার কালাম মিয়া বলের, এলাকার উন্নয়নে কাজ করবে, রাত-দিন গরিবের পাশে থাকবেন, এমন প্রার্থীকে ভোট দেব।

কাঞ্চনপুর ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মামুন অর রশিদ (আনারস প্রতীক) বলেন, জনগণের ইচ্ছাতেই নির্বাচন করে চেয়ারম্যান হয়েছি। এবারও জনগণের ইচ্ছাতেই প্রার্থী হয়েছি। সর্বদা ন্যায়ের পথে থেকেছি, স্বজনপ্রীতি, ঘুস, দুর্নীতি করি নাই। ১০ টি বছর যদি ভালো কামলা দিয়ে থাকি তাহলে ইউনিয়ন বাসী তাদের মূল্যবান ভোটের মাধ্যমে কামলার দাম দিয়ে পুনরায় চেয়ারম্যান নির্বাচিত করলে ইউনিয়নের অসম্পূর্ণ কাজ শেষ করে আদর্শ ইউনিয়নে পরিণত করা হবে আমার মূল লক্ষ্য।

কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের স্বতন্ত্র প্রার্থী শামীম আল মামুন (চশমা প্রতীক) বলেন, দীর্ঘ দিন আমি এবং আমার পরিবার এলাকার এতিম, বিধবা, বয়স্কসহ সকল শ্রেণিপেশার মানুষদের বিপদে-আপদে সাধ্যমত পাশে দাঁড়িয়েছি। এলাকাবাসীর দোয়া ও ভালোবাসা পুঁজি করে নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে অংশ নিয়ে জয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী।

হাবলা ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী (নৌকা প্রতীক) খোরশেদ আলম বলেন, আমি দুই বার এই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ছিলাম। আমি আমার উপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করেছি বলেই প্রধানমন্ত্রী আমাকে আবার নৌকার মনোনয়ন দিয়েছেন। আমি নির্বাচিত হলে হাবলা ইউনিয়নকে মডেল ইউনিয়ন হিসেবে রুপান্তরিত করবো।

হাবলা ইউনিয়নের স্বতন্ত্র প্রার্থী তরিকুল ইসলাম রতন (মটর সাইকেল) নির্বাচন থেকে সরে দাড়িয়ে তাকে সমর্থন দেয়ায় ভোটের হিসাব পাল্টে গেছে- এমনটাই বলছিলেন স্বতন্ত্র প্রার্থী সৈয়দ নিজামুল ইসলাম রুপন (আনারস)। তিনি আরো বলেন সব শ্রেণি পেশার মানুষের মধ্যে আমার ব্যাপক জনপ্রিয়তা রয়েছে। ভোটারদের মাঝে আমি যে উৎসাহ-উদ্দীপনা দেখেছি, অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে বিজয় কেউ ঠেকাতে পারবে না। আমি প্রশাসনের কাছে অবাধ সুষ্ঠ নিরপেক্ষ নির্বাচন আশা করছি।

উপজেলার ফুলকি ও কাউলজানী ইউপি থেকে এবারই মনোনয়ন পাওয়া দুই প্রার্থী করিম তালুকদার ও আতাউল গনী হাবিব জানান, বঙ্গবন্ধুর কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাদের নৌকা প্রতীক দিয়েছেন। তারা নির্বাচিত হতে পারলে প্রধানমন্ত্রীর হাতকে শক্তিশালী করার লক্ষ্যে ইউনিয়নে উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখবেন।

দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে বেশিরভাগ ইউনিয়নে মাঠে রয়েছেন এক বা একাধিক স্বতন্ত্র প্রার্থী। এছাড়াও প্রার্থীদের মধ্যে অজানা এক আতঙ্ক কাজ করছে। তারা কেউ কেউ বলছেন দলীয় প্রার্থীর লোকজন প্রভাব খাটাতে গেলে দাঙ্গা-হাঙ্গামা ও হতাহত হবে, কারণ কেউ কাউকে ছাড় দিবে না।

উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মনি শংকর রায় বলেন, এখন পর্যন্ত কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে প্রচারণা চালাতে প্রার্থীদের অনুরোধ করা হয়েছে। আমরা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।

আজকের টাঙ্গাইল
আজকের টাঙ্গাইল