• বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১১ ১৪৩১

  • || ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

আজকের টাঙ্গাইল

উন্নয়নের ছোঁয়া লাগছে টাঙ্গাইলের প্রতিটি প্রান্তে

আজকের টাঙ্গাইল

প্রকাশিত: ২৮ নভেম্বর ২০২১  

টাঙ্গাইল জেলার সকল উন্নয়ন এখন দৃশ্যমান। বাংলাদেশের সফল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে রাজধানী ঢাকার পার্শ্ববর্তী টাঙ্গাইল জেলার প্রতিটি প্রান্তে উন্নয়নের ছোঁয়া লেগেছে। টাঙ্গাইলের গ্রামগুলো এখন শহরের রূপ নিয়েছে। এমন উন্নয়নে টাঙ্গাইলবাসী বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞ।

 
গণপূর্ত বিভাগ ॥ ৩৮৪ কোটি ৯১ লাখ টাকা ব্যয়ে শেখ হাসিনা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল, ৫২ কোটি ৫৪ লাখ টাকা ব্যয়ে টাঙ্গাইল চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত, নাগরপুরে ২২ কোটি ৪৭ লাখ টাকা ও কালিহাতীতে ২২ কোটি ৪৭ লাখ টাকা ব্যয়ে কারিগরি ট্রেনিং সেন্টার, ৫ কোটি ৪২ লাখ টাকা ব্যয়ে উপজেলা ভূমি অফিস ও ইউনিয়ন ভূমি অফিস, টাঙ্গাইল সদরে ২ কোটি ৬৮ লাখ ও মধুপুরে ২ কোটি ৬৭ লাখ টাকা ব্যয়ে উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রি অফিস ভবন, ৪০ কোটি ১৯ লাখ টাকা ব্যয়ে টাঙ্গাইল জেলা সাকির্ট হাউস নতুন ভবন, ৪ কোটি ৪৯ লাখ টাকা ব্যয়ে টাঙ্গাইল সিভিল সার্জন অফিস ভবন, ৪ কোটি ২৮ লাখ টাকা ব্যয়ে মির্জাপুর উপজেলার গোড়াই হাইওয়ে ৩ তলা বিশিষ্ট পুলিশ আউট পোস্ট নির্মাণ, ১৫ কোটি ৩৭ লাখ টাকা ব্যয়ে টাঙ্গাইল পুলিশ লাইনে ২০ শয্যা হাসপাতাল নির্মাণ, ৭ কোটি ৭৮ লাখ টাকা ব্যয়ে জেলা ও উপজেলা মডেল মসজিদ নির্মাণ, ৪ কোটি ৬১ লাখ টাকা ব্যয়ে টাঙ্গাইল বন বিভাগের মধুপুরে রেস্ট হাউস নির্মাণ, ১ কোটি ৮৫ লাখ টাকা ব্যয়ে টাঙ্গাইল বধ্যভূমি নির্মাণ, ২ কোটি ৯৪ লাখ টাকা ব্যয়ে দেলদুয়ারে ফায়ার সার্ভিস স্টেশন নির্মাণ, ৩ কোটি ৪০ লাখ টাকা ব্যয়ে ঘাটাইলে ফায়ার সার্ভিস স্টেশন নির্মাণ।

বঙ্গবন্ধু ডুয়েলগেজ রেল সেতুর নির্মাণকাজ ॥ চারদিকে নিরাপত্তা বেষ্টনী। দূর থেকেই কানে আসে বিকট সব শব্দ। ভেতরে চলছে মহাকর্মযজ্ঞ। করোনা মহামারীর মধ্যেও যমুনার উজানে নেই বিরতি, চলছে দিন-রাত কাজ। বঙ্গবন্ধু সেতুর ৩০০ মিটার উজানে নির্মিত হচ্ছে দেশের সবচেয়ে বড় রেল সেতু। নাম বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতু। করোনার কারণে কোন ধরনের আনুষ্ঠানিকতা না থাকলেও এরই মধ্যে শুরু হয়েছে চারটি পাইল বসানোর কাজ। মূল সেতুর বাইরেও দুই প্যাকেজে ভাগ করে চলছে শ্রমিকদের থাকার জায়গা ও অস্থায়ী অফিস নির্মাণ। বঙ্গবন্ধু সেতুর পূর্ব-উত্তর পাশের গাইড বাঁধের কাছ থেকে ৪৬ নম্বর পিয়ার দিয়ে পাইল বসানোর কাজ শুরু হয়েছে। এখন চলছে ৪৫, ৪৬, ৪৭ ও ৪৮ নম্বর পিয়ারের স্টিল পাইপ শিল পাইপ (এসপিএসপি) ড্রাইভিংয়ের কাজ। ক্রেনের সাহায্যে হ্যামার দিয়ে বসানো হচ্ছে পাইলিং পাইপ। আবার বঙ্গবন্ধু সেনানিবাস সংলগ্ন এলাকায় চলছে প্রকল্প অফিস ও আবাসন নির্মাণের কাজ। সেতুর ভাটিতে যমুনা নদীতে আনলোডের অপেক্ষায় রয়েছে ভারি যন্ত্রপাতি। এছাড়া সেতু এলাকার হার্বারের পুরনো জেটি সংস্কার করে ক্রেনের সাহায্যে বিভিন্ন যন্ত্রপাতি আনলোড করা হচ্ছে। পূর্বদিকে চলছে নতুন জেটির নির্মাণ কাজও।


শিক্ষা প্রকৌশল ॥ ২১২ কোটি ৬৯ লাখ টাকায় নির্বাচিত বেসরকারী মাধ্যমিক বিদ্যালয়সমূহের উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ৮০টি স্কুল নির্মাণ। ৯৪ কোটি ২৮ লাখ টাকায় বেসরকারী মাধ্যমিক বিদ্যালয়সমূহের উর্ধমুখী সম্প্রসারণ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় ৮১টি স্কুল নির্মাণ। ১৩৭ কোটি ৪৪ লাখ টাকায় ৪৭টি মাদ্রাসা নির্মাণ। ৯২ কোটি ৬১ লাখ টাকায় তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় শিক্ষার মান উন্নয়নের লক্ষ্যে নির্বাচিত বেসরকারী কলেজসমূহের উন্নয়ন শীর্ষক প্রকল্প (আইসিটি) ৬৯টি কলেজ নির্মাণ। ২০১৭-১৮ বর্ষের ৭১টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ৪৯ কোটি ৫৮ লাখ টাকায় জেলার বিভিন্ন স্কুলের আবাসিক ভবন নির্মাণ, সম্প্রসারণ নতুন ভবন নির্মাণ। ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষে ৩৯ কোটি ৭০ লাখ টাকায় ৪৯টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কাজ। ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষে ৩৭ কোটি ৪০ লাখ টাকায় ৪৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কাজ। ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে ১০ কোটি ২০ লাখ টাকায় ১২টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কাজ। ২৯ কোটি ৯৮ লাখ টাকায় ৩৮টি মাদ্রাসার আবাসিক ভবন নির্মাণ ও সম্প্রসারণ। ২৯ কোটি ৯৯ লাখ টাকায় ২টি টেকনিক্যাল স্কুল এ্যান্ড কলেজের কাজ। ১৪ কোটি ৮১ লাখ টাকায় ৫টি সরকারী মাধ্যমিক বিদ্যালয় উন্নয়ন। ১৪ কোটি ১০ লাখ টাকায় ২টি সরকারী কলেজের বিজ্ঞান শিক্ষার সম্প্রসারণ কাজ।

মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ॥ শিক্ষা, প্রশাসন ও অবকাঠামোগত উন্নয়ন ২০১৬ সালে প্রণীত বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদিত মাস্টার প্ল্যান অনুযায়ী ‘মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শক্তিশালীকরণ’ শীর্ষক প্রকল্পটি ৩৪৫ কোটি ৭৭ লাখ টাকা ব্যয়ে জুলাই ২০১৬ হতে জুন ২০১৯ মেয়াদে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) সভায় ২০১৬ সালের ২৫ অক্টোবর অনুমোদন লাভ করে। পরবর্তীতে জুলাই/২০১৬ হতে জুন/২০২২ মেয়াদে সংশোধন আকারে অনুমোদন প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। অনুমোদিত প্রকল্পটির আওতায় বাস্তবায়নাধীন কার্যক্রমগুলো হলো- ভূমি অধিগ্রহণ, ভূমি উন্নয়ন, ১২ তলা বিশিষ্ট একাডেমিক-কাম-রিসার্চ ভবন নির্মাণ, ১০ তলা বিশিষ্ট প্রশাসনিক এ্যানেক্স উত্তর ভবন নির্মাণ, জননেতা আব্দুল মান্নান হলের অবশিষ্ট অংশ (৩য়, ৪র্থ ও ৫ম তলার) উর্ধমুখী সম্প্রসারণ (২৫০ ছাত্রের জন্য)। নির্মাণাধীন ১০ তলা বিশিষ্ট বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব হল নির্মাণ (৭০০ ছাত্রীর জন্য), ১০ তলা ভিতে ৬ তলা পর্যন্ত শেখ রাসেল হল নির্মাণ (৫৫০ ছাত্রের জন্য), ১০ তলা ভিতে ৫ তলা পর্যন্ত মাল্টিপারপাস ভবন নির্মাণ, সিনিয়র শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের জন্য ১০ তলা ভিতে ৫ তলা পর্যন্ত আবাসিক ভবন নির্মাণ (প্রতি তলায় ২টি ইউনিট) (গ্রেড ৩ ও ৪-এর জন্য)। বর্ণিত কার্যক্রমসমূহের বাস্তবায়ন কাজ বর্তমানে দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলেছে। আশা করা যাচ্ছে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন কাজ সমাপ্ত হলে শিক্ষা, প্রশাসন এবং অবকাঠামোগত উন্নয়নে ব্যাপক পরিবর্তন আসবে।


টাঙ্গাইল পানি উন্নয়ন বোর্ড ॥ বর্তমান সরকারের সময়ে টাঙ্গাইল পানি উন্নয়ন বোর্ডের অনেক প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়েছে। এছাড়া অনেক প্রকল্প চলমান রয়েছে। সমাপ্ত প্রকল্পগুলোতে হলো- ১ কোটি ৩০ লাখ টাকা ব্যয়ে বাসাইল উপজেলার কাশিল কেবিএন উচ্চ বিদ্যালয় ৯৮ মিটার দৈর্ঘ্য পুংলী/বংশাই নদী ভাঙ্গন প্রতিরক্ষা কাজ। মির্জাপুর উপজেলায় ১ কোটি ৭৫ লাখ ৩২ হাজার টাকায় ১৬৫ মিটার দৈর্ঘ্যের বংশাই নদী ভাঙ্গন হতে হাটফতেহপুর হাইস্কুল ও বাজার প্রতিরক্ষা করা। ৫ কোটি ৫০ লাখ টাকায় ৩৭৩ মিটার দৈর্ঘ্যরে পুংলী/ঝিনাই নদী ভাঙ্গন হতে কালিহাতী উপজেলা সদর রক্ষা করা। চৌহালী উপজেলায় ১৩৪ কোটি টাকায় ফ্লাড এ্যান্ড রিভার ব্যাংক এরোশন রিস্ক ম্যানেজমেন্ট ইনভেস্টমেন্ট প্রোগ্রাম (টি-১) প্রতিরক্ষা কাজ ৭.২০ কিলোমিটার (৫ কিঃমিঃ স্থায়ী, ২.২০ কিঃমিঃ প্রিকশনারী)। ১৬০ কোটি ৮৭ লাখ ৯৮ হাজার টাকা ব্যয়ে টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর ও গোপালপুর উপজেলাধীন যমুনা নদীর বামতীরবর্তী কাউলীবাড়ী ব্রিজ হতে শাখারিয়া (ভরুয়া-বটতলা) পর্যন্ত তীর সংরক্ষণ প্রকল্প। যার দৈর্ঘ্য ৩ কিলোমিটার, এর মধ্যে যমুনা নদী ড্রেজিং রয়েছে ৩.৪০ কিঃমিঃ। টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলার অর্জুনা নামক এলাকাকে যমুনা নদীর ভাঙ্গন হতে রক্ষার্থে নদী তীর সংরক্ষণ প্রকল্প। ২৬১ কোটি ১৫ লাখ ৬৮ হাজার টাকা ব্যয়ে ৫.৮৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য ও যমুনা নদী ড্রেজিং ৬.১২৫ কিঃমিঃ। টাঙ্গাইলের দেলদুয়ার উপজেলাধীন ধলেশ্বরী নদীর বামতীরবর্তী গাছ-কুমুল্লী, বারপাখিয়া এবং নাগরপুর উপজেলার ঘোনাপাড়াসহ বাবুপুর-লাউহাটি এফসিডি এলাকায় তীর সংরক্ষণ প্রকল্প। ১০৩ কোটি ৬৩ লাখ ৫১ হাজার টাকা ব্যয়ে ২.৫৩ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য, ধলেশ্বরী নদী ড্রেজিং ৭.৪৫ কিঃমিঃ। ২৯ কোটি ৪ লাখ টাকা ব্যয়ে ধনবাড়ি ও গোপালপুর উপজেলাধীন বৈরান নদী (৩৭.৫০ কিঃমিঃ), নাগরপুর উপজেলাধীন নোয়াই নদী (১৩.৭৫ কিঃমিঃ) এবং ঘাটাইল উপজেলাধীন টোক (ঝিনাই) নদী (৭.০০ কিঃমিঃ) পুনর্খনন কাজ এবং ২টি খাল মির্জাপুর উপজেলাধীন বহুরিয়া খাল (৭ কিঃমিঃ) এবং দেলদুয়ার ও সদর উপজেলাধীন বরুহা খাল (২.১৬ কিঃমিঃ) পুনর্খনন কাজ। এছাড়া চলমান প্রকল্পগুলো হলো- বুড়িগঙ্গা নদী (নিউ ধলেশ্বরী-পুংলী-বংশাই-তুরাগ-বুড়িগঙ্গা রিভার সিস্টেম) পুনরুদ্ধার প্রকল্প।

টাঙ্গাইল সড়ক বিভাগ ॥ সাসেক সংযোগ সড়ক প্রকল্পের আওতায় গাজীপুরের জয়দেবপুর চন্দ্রা থেকে টাঙ্গাইলের কালিহাতীর এলেঙ্গা পর্যন্ত ছয় লেনে উন্নীতকরণ প্রকল্প এখন প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে। এডিপি আবুধাবি ফান্ড ও বাংলাদেশ সরকারের অধীনে সাড়ে ৫ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে এই প্রকল্পের এখন ৯৭ ভাগ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। ৭০ কিলোমিটার মহাসড়কের কাজে জমি অধিগ্রহণ, ৬ লেনের সড়ক, ৫২টি ব্রিজ, ৭টি ফ্লাইওভার, ১৩টি আন্ডারপাস রয়েছে। বর্তমানে এই মহাসড়কের ৩টি ফ্লাইওভার ও আংশিক সার্ভিস লেনের কাজ অসম্পূর্ণ রয়েছে। এছাড়া প্রশস্ত হচ্ছে টাঙ্গাইল-কালামপুর সড়ক। এজন্য ‘টাঙ্গাইল-দেলদুয়ার-লাউহাটি-সাটুরিয়া-কাওয়ালীপাড়া-কালামপুর বাসস্ট্যান্ড সড়ক আঞ্চলিক মহাসড়কের যথাযথমান ও প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ’ শীর্ষক একটি প্রকল্পের প্রস্তাব করা হয়েছে পরিকল্পনা কমিশনে। এটি বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে এক হাজার ৪৩৫ কোটি ৮৯ লাখ ৩৬ হাজার টাকা। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে টাঙ্গাইল, দেলদুয়ার, নাগপুর, ধামরাই ও সাটুরিয়া উপজেলার সঙ্গে মানিকগঞ্জ ও ঢাকার মধ্যে স্বল্পতম সময়ে নিরবচ্ছিন্ন ও নিরাপদ সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা স্থাপন করা হবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা। প্রকল্পটি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) আগামী বৈঠকে উপস্থাপনের সুপারিশ করা হয়েছে। অনুমোদন পেলে আগামী ২০২৩ সালের জুনের মধ্যে এটি বাস্তবায়ন করবে সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদফতর।


এলজিইডি ॥ ৩৪ কোটি ৮২ লাখ টাকা ব্যয়ে কালিহাতীর এলেঙ্গা-জোকার চর রাস্তা ও দুর্গাপুর ইউনিয়নে নদীর ওপর ২৬৪ মিটার গার্ডার ব্রিজ নির্মাণ। ২২ কোটি ১০ লাখ ৭৮ হাজার টাকা ব্যয়ে টাঙ্গাইল সদর উপজেলায় নিয়োগী জোয়াইর-রানাগাছা ফেরিঘাট রাস্তা এবং লৌহজং নদীর ওপর ২৯৬ মিটার গার্ডার ব্রিজ নির্মাণ। ২৭ কোটি ২৩ লাখ টাকা ব্যয়ে বাসাইল উপজেলার নাটিয়াপাড়া-কাঞ্চনপুর রাস্তা এবং ঝিনাই নদীর ওপর ২৫৬ মিটার গার্ডার ব্রিজ নির্মাণ। ২৯ কোটি ৭৫ লাখ টাকা ব্যয়ে বাসাইল উপজেলার করটিয়া জসিহাটি ও দেওলী রাস্তা এবং ঝিনাই নদীর ওপর ২৮২ মিটার গার্ডার ব্রিজ নির্মাণ। ২৬ কোটি ৫৯ লাখ ৮৭ হাজার টাকা ব্যয়ে বাসাইল উপজেলার কাশিল ইউপি অফিস-বিলপাড়া হাট রাস্তা এবং ঝিনাই নদীর ওপর ২৭০ মিটার গার্ডার ব্রিজ নির্মাণ। ২৯ কেটি ২৬ লাখ ৮৯ হাজার টাকা ব্যয়ে কালিহাতী উপজেলার সল্লা ইউপি-আয়নাপুর রাস্তা এবং লৌহজং নদীর ওপর ২৫০ মিটার গার্ডার ব্রিজ নির্মাণ। ২২ কোটি ৬৫ লাখ টাকা ব্যয়ে টাঙ্গাইল সদর উপজেলার তোরাপগঞ্জ-যমুনা ব্রিজ এ্যাপ্রোচ রাস্তা এবং ধলেশ্বরী নদীর ওপর ৩২০ মিটার গার্ডার ব্রিজ নির্মাণ। এছাড়া বর্তমান সরকারের সময়ে বিগত ২০০৯ সাল থেকে চলতি বছর পর্যন্ত এলজিইডি ২ হাজার ৮শ’ ৪৩ কোটি ২৮ লাখ টাকার উন্নয়মমূলক কাজ হয়েছে। ৭৬১ কোটি ৯৮ লাখ টাকা ব্যয়ে ১৩৮৪.৩৭ কিঃমিঃ পাকা সড়ক নির্মাণ। ৩৯৪ কোটি টাকা ব্যয়ে ১০০ মিটারের মোট ২০৪১৪.৭৯ মিটার বড় ব্রিজ নির্মাণ। ২৭ কোটি ৫ লাখ টাকা ব্যয়ে ৮০টি গ্রোথ সেন্টার/ হাট-বাজার উন্নয়ন। ২৭ কোটি ১ লাখ ব্যয়ে ৮টি উপজেলা কমপ্লেক্স নির্মাণ ও সম্প্রসারণ। ২৪ কোটি ২৬ লাখ টাকা ব্যয়ে ৪৭টি ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণ। ২০ কোটি ৩৭ লাখ টাকা ব্যয়ে ১০টি উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণ। ১৩ কোটি ৬১ লাখ টাকা ব্যয়ে ১৫১টি ভূমিহীন ও অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য বাসস্থান নির্মাণ।

জেলা পরিষদ ॥ মধুপুর অডিটরিয়াম-কাম-কমিউনিটি সেন্টার নির্মাণ, কালিহাতী অডিটরিয়াম-কাম-কমিউনিটি সেন্টার নির্মাণ (আউলিয়াবাদে), টাঙ্গাইল সদর উপজেলার নগর জালফৈ বাইপাসে স্মৃতিসৌধ নির্মাণ, গোপালপুর উপজেলার নারুচী স্কুল এ্যান্ড কলেজের স্টেডিয়াম উন্নয়ন, জেলা পরিষদের তৃতীয় শ্রেণীর কর্মচারীদের কোয়ার্টার নির্মাণ, টাঙ্গাইল সদর উপজেলার প্রেসক্লাবের ছাদের অসমাপ্ত কাজ সমাপ্তকরণ, ধনবাড়ী নওয়াব ইনস্টিটিউশনের মেন গেট ও বাউন্ডারি ওয়াল নির্মাণ, মির্জাপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে মেয়েদের কমনরুম ও টয়লেট নির্মাণ, ধনবাড়ী উপজেলার মুশুদ্দি রিজিয়া কলেজের উন্নয়ন, টাঙ্গাইল সদর উপজেলাধীন কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের অসমাপ্ত কাজ সমাপ্তকরণ।

জেলা প্রশাসন ॥ টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে যমুনা নদীতে জেগে ওঠা চরে অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। প্রস্তাবিত প্রকল্পে শুধু ভূঞাপুর তথা টাঙ্গাইল নয়, সিরাজগঞ্জসহ আশপাশের এলাকার শিল্প-বাণিজ্যের সম্ভাবনার দ্বার খুলে যাবে। কর্মসংস্থান হবে হাজার হাজার বেকারত্ব মানুষের। যমুনা নদীতে নির্মিত বঙ্গবন্ধু সেতু ও সদ্য নির্মিত হতে যাওয়া বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেল সেতুর পূর্ব পাশে উপজেলায় ৫০২.০২ একর খাস জমিতে অর্থনৈতিক অঞ্চলের জোন প্রতিষ্ঠার জন্য জোর তৎপরতা শুরু করেছে টাঙ্গাইল জেলা প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা। দেশে শিল্পাঞ্চল গড়ে তোলা ও কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার জন্য ভূঞাপুর উপজেলার পলশিয়া মৌজায় ৯৬.৩৪ একর, দোভায়া মৌজায় ৪৫.৪৫ একর, কোনাবাড়ী মৌজায় ৯৭.১৩ একর, পাটিতাপাড়া মৌজায় ৩২.৪০ একর, নাগরগাতী মৌজায় ৮৭.৩৮ একর, ভালকুটিয়া মৌজায় ৯৬.৩৬ একর, কষ্টাপাড়া মৌজায় ৬.৯৬ একর এবং খানুরবাড়ী মৌজায় ৪০ একরসহ সর্বমোট ৫০২.০২ একর ভূমিতে অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার জন্য স্থান নির্বাচন করা হয়েছে। প্রস্তাবিত স্থানটি অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এটি ভূঞাপুরের যমুনার তীরে অবস্থিত হওয়ায় নদীপথে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি হবে।

এ বিষয়ে টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক ড. আতাউল গণি বলেন, সারাদেশের ন্যায় টাঙ্গাইল জেলাতেও সরকার ব্যাপক উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। এর মধ্যে যোগাযোগের ক্ষেত্রে ছয় লেন বিশিষ্ট রাস্তা প্রায় সম্পূর্ণ হওয়ার পথে। এতে খুব দ্রুত সময়ের ঢাকার সঙ্গে টাঙ্গাইলের যোগাযোগ স্থাপিত হয়েছে। এর ফলে টাঙ্গাইলের ব্যবসা-বাণিজ্য, শিক্ষা, চিকিৎসা সকল ক্ষেত্রে এর একটা প্রভাব পড়েছে। জেলার ভূঞাপুরে অর্থনৈতিক জোন তৈরি করা হবে। এই অর্থনৈতিক জোনটা হলে টাঙ্গাইলের লাখ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান হবে এবং টাঙ্গাইল ছাড়াও আশপাশের জেলার মানুষ এই জোন হলে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হবে। শেখ হাসিনা মেডিক্যাল কলেজের হাসপাতালের কার্যক্রম চালু হলে চিকিৎসা ক্ষেত্রে টাঙ্গাইলের মানুষের ভোগান্তি অনেকটা কমে যাবে। এছাড়া সখিপুর ও মধুপুরে বেসরকারীভাবে অনেক পর্যটনের বিকাশ হচ্ছে। এর ফলে টাঙ্গাইলের অর্থনীতিতে অনেক বড় একটা প্রভাব ফেলবে। জেলায় কৃষিমন্ত্রীর বাড়ি হওয়ায় কৃষি ক্ষেত্রে অনেক উন্নয়ন পরিকল্পনা হাতে নেয়া হয়েছে। যমুনা নদীতে ড্রেজিং করা হচ্ছে। এই কাজ শেষ হলে নদী ভাঙ্গন থেকে মানুষ রক্ষা পাবে। টাঙ্গাইলের অবকাঠামো, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, যোগাযোগ নানা ক্ষেত্রে সরকারের যে বিনিয়োগ তা সফল হবে। এছাড়া ডাবল গ্রেজের রেললাইন হবে। এটা হলে আমাদের টাঙ্গাইলসহ উত্তরবঙ্গের অর্থনীতির উন্নয়ন হবে। এক কথায় সরকার টাঙ্গাইল জেলার উন্নয়নের ক্ষেত্রে দৃশ্যমান উন্নয়ন করেছে। এর ফলে টাঙ্গাইলর মানুষের জীবন মান উন্নয়ন হয়েছে ভবিষ্যতে আরও উন্নয়ন হবে।

টাঙ্গাইলের সার্বিক উন্নয়নের বিষয়ে কৃষিমন্ত্রী, আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও টাঙ্গাইল-১ (মধুপুর-ধনবাড়ী) আসনের সংসদ সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, দেশের সফল প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকারের ধারাবাহিক উন্নয়নে টাঙ্গাইলের গ্রামগুলো এখন শহরে পরিণত হয়েছে। মানুষের সকল চাহিদা পূরণ হচ্ছে এখন গ্রামগুলোতেই। টাঙ্গাইল জেলার প্রতিটি ক্ষেত্রে উন্নয়ন হয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকার উন্নয়নে বিশ্বাসী। শুধু কথায় নয়, তা কাজে প্রমাণিত হয়েছে। মানুষ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ওপর আস্থা রেখেছে বলেই তিনি টাঙ্গাইলের এত উন্নয়ন কর্মকান্ডে অবদান রেখে চলেছেন। আরও উন্নয়ন কাজ করা হবে। মানুষের ভোটের মর্যাদা দিতে প্রধানমন্ত্রী আরও উন্নয়নমূলক কাজ করবেন। টাঙ্গাইল জেলার কৃষি, সড়ক ও বড় বড় অবকাঠামো নির্মিত হওয়াসহ প্রতিটি ক্ষেত্রে অভূতপূর্ব উন্নয়ন সাধিত হয়েছে। এতে এই জেলা অর্থনৈতিকভাবে এগিয়ে যাচ্ছে। মানুষের কর্মসংস্থানের জায়গা হয়েছে অনেক।

-তথ্য: জনকণ্ঠ

আজকের টাঙ্গাইল
আজকের টাঙ্গাইল