• শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৬ ১৪৩১

  • || ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

আজকের টাঙ্গাইল

সরকারের লক্ষ্য অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার বজায় রাখা: অর্থমন্ত্রী

আজকের টাঙ্গাইল

প্রকাশিত: ২ জুন ২০২৩  

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, চলমান প্রণোদনা প্যাকেজ সফলভাবে বাস্তবায়নের মাধ্যমে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার টেকসই করার ওপর গুরুত্ব দিচ্ছে সরকার।
তিনি বলেন, আমরা মহামারির প্রভাব পুরোপুরি কাটিয়ে উঠেছি। তাই এই বাজেটে আমাদের লক্ষ্য হবে চলমান উদ্দীপনা প্যাকেজগুলো সফলভাবে বাস্তবায়ন করে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার বজায় রাখা। 


বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে অর্থবছর ২০২৩-২৪-এর জন্য প্রস্তাবিত ৭ দশমিক ৬১ লাখ কোটি টাকার বেশি জাতীয় বাজেট পেশের সময় এসব কথা বলেন মন্ত্রী।

বাজেট বক্তব্যে মুস্তফা কামাল বলেন, কোভিড-১৯ মহামারি বিশ্বব্যাপী জনগোষ্ঠীর জীবন ও জীবিকাসহ আর্থ-সামাজিক অবস্থাকে ব্যাহত করেছে। এর কারণে ২০১৯-২০ অর্থবছরে আমাদের জিডিপি প্রবৃদ্ধিও কমেছে ৩ দশমিক ৪৫ শতাংশ। তবে এই সময়ের মধ্যে অন্যান্য বেশিরভাগ দেশেই প্রবৃদ্ধি নেতিবাচক ছিল। আমাদের সরকার কোভিড পরিস্থিতিকে দৃশ্যমান সাফল্যের সঙ্গে মোকাবিলা করেছে।


এ সময় তিনি বলেন, সরকার প্রবৃদ্ধির চেয়ে জনগণের জীবন-জীবিকা রক্ষা ও সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা রক্ষায় অনেক বেশি গুরুত্ব দিয়েছে।

মন্ত্রী আরো বলেন, কোভিড-পরবর্তী বছরে বাংলাদেশ উচ্চ প্রবৃদ্ধির পথে ফিরেছে। রাজস্ব ও মুদ্রানীতির বিচক্ষণ ও সু-সমন্বিত বাস্তবায়ন ও অর্থনীতির অন্তর্নিহিত স্থিতিস্থাপকতার কারণে এই অর্জন এসেছে। এটা সত্য যে-আমাদের অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার দ্রুত হয়েছে, কিন্তু কোভিড-১৯ এর বৈশ্বিক প্রভাব দীর্ঘস্থায়ী হয়েছে। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ; যা বৈশ্বিক ভূ-রাজনীতিতে একটি নতুন মাত্রা যোগ করেছে। ফলে বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধির গতি আরো মন্থর হয়েছে। এই উন্নয়নগুলোর পিছিয়ে যাওয়া প্রভাব আমাদের পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়াকেও ব্যাহত করেছে।


মুস্তফা কামাল বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ পরিস্থিতি মুদ্রাস্ফীতি, সরকারি ব্যয়, পরিশোধের ভারসাম্য, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ও বিনিময় হারে সবচেয়ে বেশি প্রভাব ফেলেছে। যুদ্ধ ও যুদ্ধকেন্দ্রিক নিষেধাজ্ঞার কারণে আন্তর্জাতিক সরবরাহ চেইন ব্যাহত হয়। সেই সময়ে বিশ্ববাজারে খাদ্যপণ্য, সার ও জ্বালানির দাম অনেক বেড়ে যায়। নজিরবিহীন মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে উন্নত দেশগুলো; বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ধীরে ধীরে নীতিগত সুদের হার বাড়ায়। বৈশ্বিক পরিবেশের এই পরিবর্তনগুলো আমাদের অর্থনীতিতেও প্রভাব ফেলছে। 

তিনি বলেন, তবে যুদ্ধোত্তর বৈশ্বিক মুদ্রাস্ফীতির কারণে আমদানি ব্যয় বৃদ্ধি ও দেশের বৈদেশিক মুদ্রার হারের অবমূল্যায়নের ফলে ২০২২ সালের আগস্টে গড় মূল্যস্ফীতি ৯ দশমিক ৫ শতাংশে উন্নীত হয়। এর ফলে চলতি অর্থবছরে লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী বার্ষিক গড় মূল্যস্ফীতি ৫ দশমিক ৬ শতাংশের মধ্যে রাখা সম্ভব হবে।


কামাল বলেন, কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে জনগণের স্বাস্থ্য সুরক্ষার পাশাপাশি অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলায় সরকারের সাফল্য এবং পরবর্তীতে দ্রুত পুনরুদ্ধারের বিষয়টি বিশ্বব্যাপী ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হয়েছে।

তিনি বলেন, মহামারির কারণে সৃষ্ট অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলায় সরকার বিভিন্ন কৌশল গ্রহণ করেছে। যেমন- কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য সরকারি ব্যয় বৃদ্ধি করা, ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে শিল্প ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে স্বল্প সুদে ঋণ সুবিধা প্রদান, সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচির পরিধি বিস্তৃত করা এবং কাঙ্ক্ষিত স্তরে মুদ্রাস্ফীতি ধারণ করে সর্বোত্তম অর্থ সরবরাহ নিশ্চিত করা।


কামাল আরো বলেন, আমরা ২ লাখ ৩৭ হাজার ৬৭৯ কোটি টাকার ২৮টি উদ্দীপনা প্যাকেজ গ্রহণ করেছি, যা দ্রুত অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারে সহায়ক ছিল ও জরুরি স্বাস্থ্য পরিষেবা, খাদ্য নিরাপত্তার পাশাপাশি কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং কোভিডের কারণে অর্থনৈতিক ক্ষতি কমানোর মাধ্যমে সামষ্টিক অর্থনৈতিক ভেরিয়েবলগুলোকে স্থিতিশীল করতে সহায়তা করেছিল। এসব প্রণোদনা প্যাকেজ বাস্তবায়নের ফলে দেশের মানুষ প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে উপকৃত হয়েছে।

তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত প্রায় ৭ কেটি ৬৫ লাখ ৩৫ হাজার ব্যক্তি ও ২ লাখ ৪০ হাজার প্রতিষ্ঠান সরাসরি এই প্রণোদনা কর্মসূচি থেকে উপকৃত হয়েছে।

আজকের টাঙ্গাইল
আজকের টাঙ্গাইল