নারীর ক্ষমতায়নে প্রধানমন্ত্রীর প্রশংসা

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে নারীর ক্ষমতায়নে বাংলাদেশ রোল মডেলে পরিণত হয়েছে। নারীরা তাদের যোগ্যতার প্রমাণ দিয়ে দেশের জন্য অবদান রাখছে। নারী যেখানে সুযোগ পাচ্ছে, সেখানে সাফল্য রাখছে।

বৃহস্পতিবার (২৩ মার্চ) জাতীয় প্রেস ক্লাবে জাতিসংঘ এবং বঙ্গবন্ধু কমিশনের যৌথ উদ্যোগে ‘বাংলাদেশে নারীর ক্ষমতায়ন’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক সেমিনারে এসব কথা বলেন বক্তারা।

সেমিনারের উদ্বোধন করেন সাবেক সংসদ সদস্য এবং আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির কৃষি ও সমবায় সম্পাদক ফরিদুন নাহার লাইলী। তিনি বলেন, শেখ হা‌সিনা নারীর ক্ষমতায়‌নে ব‌্যাপক কাজ ক‌রে যা‌চ্ছেন। দে‌শ-বি‌দে‌শে নারীদের অবদান দৃশ‌্যমান। অন‌্য যেকো‌নো সম‌য়ের চেয়ে নারীরা এখন গুরুত্বপূর্ণ প‌দে কাজ কর‌ছে। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশি নারীরা কাজ করছে, ক্রীড়া ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সম্পর্কে বিশ্বকে জানান দিচ্ছে নারীরা। দেশে নারীদের শিক্ষার হার বেড়েছে। প্রধানমন্ত্রীর শাসন আমলে নারীরা অনেক এগিয়ে গেছে, যা আগে চিন্তাও করা যেত না। নারীরা যেখা‌নে সু‌যোগ পাচ্ছে, সেখা‌নে সাফল‌্য রাখ‌ছে।

সভাপতির বক্তব্যে বঙ্গবন্ধু কমিশনের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ও স্পেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রিজভি আলম বলেন, নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন— এ সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান পাঁচ। নারী উন্নয়নে সার্বিক সূচকে এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলভুক্ত ২৪টি দেশের মধ্যে অস্ট্রেলিয়ার পরই দ্বিতীয় শীর্ষ অবস্থান বাংলাদেশের। এর একক কৃতিত্ব বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুযোগ্য নেতৃত্বের কারণে নারীর ক্ষমতায়নে এ ঊর্ধ্বমুখী।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বঙ্গবন্ধু কমিশনের চেয়ারম্যান ও সেন্ট্রাল ডেমোক্রেটিক কমিটির নির্বাহী সদস্য এবং মিশিগান ডেমোক্রেটিক পার্টির সহ সভাপতি ড. রাব্বি আলম জেডি। তিনি বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার কারিগর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে শিক্ষা, সংসদ সব জায়গায় নারীর ক্ষমতায়ন। বাংলা‌দে‌শি হি‌সে‌বে আমি বল‌তে চাই, বাংলাদেশের নারীদের জীবনধারা প‌রিবর্তন ক‌রে দি‌য়ে‌ছেন প্রধানমন্ত্রী। বাংলা‌দে‌শের নারীরা এগিয়ে যা‌চ্ছে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্ব।

ড. রাব্বি আলম বলেন, মিশিগান সিনেটের বিশেষ অধিবেশনে বাংলাদেশের বিশিষ্ট নারীদের সম্মাননা প্রদান করা হয়েছে, যা বাংলাদেশের ইতিহাসে বিরল এবং একক দৃষ্টান্ত। এ অর্জন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার। বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য উত্তরসূরি হিসেবে তিনি শুধু অবকাঠামোগত উন্নয়নই করছেন না, মানবসম্পদের সুষম উন্নয়নে নারীর ক্ষমতায়নে ব্যাপক কাজ করে চলেছেন, যা সত্যিই বিস্ময়কর।

সেমিনারে ভার্চুয়ালি সংযুক্ত হন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন শিক্ষাবিদ এবং রাজনীতিকরা। এদের মধ্যে ছিলেন— জাতিসংঘের নারী প্রতিনিধিসহ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আইনপ্রণেতা হ্যালি স্টিভেন, রাশিদা তালাইব এবং এলিসা স্লটকিন্স এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সিনিয়র সিনেটর ডেবি স্টেবনাওসহ কংগ্রেস ওমেন সদস্যরা।

এতে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শেখ হাসিনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. প্রফুল্ল চন্দ্র সরকার। তিনি বলেন, বাংলাদেশে বিভিন্ন ক্ষেত্রে নারীদের ইনভলভমেন্ট নতুন ধারণা নয়। শিক্ষাক্ষেত্রে নারীদের ক্ষমতায়ন হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী প্রাইমারি থেকে শুরু করে উচ্চশিক্ষায় নারীদের সংযুক্ত রাখার জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। রাজনীতিতে নারীদের অংশগ্রহণ বাড়ছে। আমাদের অর্থনীতির চাকা ঘুরছে, আমাদের গার্মেন্টস খাতে নারীরা কাজ করে দেশের জিডিপিতে বিশাল অবদান রাখছেন।

তিনি বলেন, নারী অনেকটা এগিয়ে গেছে এটা সত্য। তবে এখনো নারী‌দের ক্ষমতায়‌নে অনেক বাধা আছে। নারীরা এখনো নির্যাতনের মুখোমুখি হতে হচ্ছে। সব গৃহে নারীরা এখনো কিন্তু তাদের প্রাপ্য অধিকারটুকু পাচ্ছে না।

সেমিনারে প্যানেল আলোচনায় অংশ নেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের সাবেক ডিন প্রফেসর ড. অরুণ কুমার গোস্বামী এবং কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মনিরুজ্জামান কাজল।

এতে গেস্ট অব অনার হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, সংসদ সদস্য রাবেয়া আলীম, আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ড. শাম্মী আহমেদ, আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক ড. রোকেয়া সুলতানা, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্মৃতি জাদুঘরের কিউরেটর এন আই খান, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ ও বঙ্গবন্ধু পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেপুটি রেজিস্টার ডা. শেখ আব্দুল্লাহ আল মামুন।

সেমিনারটি ভার্চুয়ালি পরিচালনা করেন জাতিসংঘের এসডিজিএস এবং লিঙ্গ সমতা বিষয়ক বঙ্গবন্ধু বিশেষ কমিশনার ড. রেমি আলাপো এবং বাংলাদেশ থেকে সরাসরি রয়্যাল ইউনিভার্সিটি অব ঢাকার শিক্ষা বিভাগের চেয়ারম্যান এবং বঙ্গবন্ধু কমিশন ও এম টিভি ইউএসএস’র কান্ট্রি ড. মুহাম্মদ আবু বকর সিদ্দিক।