• শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৫ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

আজকের টাঙ্গাইল

আগ্রহের শ্রমবাজার রোমানিয়া

আজকের টাঙ্গাইল

প্রকাশিত: ১৩ মে ২০২২  

আগ্রহের শ্রমবাজারে পরিণত হয়েছে পূর্ব ইউরোপের দেশ রোমানিয়া। হঠাৎ করেই সেখানে বাংলাদেশিদের কাজের জন্য যাওয়ার সুযোগও তৈরি হয়েছে। রীতিমতো বাংলাদেশে বিশেষ কনস্যুলার অফিস বসিয়ে ভিসা ইস্যু করছে রোমানিয়া। ইউরোপের দেশ হওয়ায় বিশেষ আগ্রহ এই দেশটি নিয়ে। এর মধ্যে বাংলাদেশ থেকে ৪০ হাজার কর্মী নেওয়ার ঘোষণা তৈরি করেছে বাড়তি আকর্ষণ। অবশ্য রোমানিয়ায় গিয়ে অন্য দেশে চলে যাওয়ার এক ধরনের ইচ্ছাও কাজ করছে অনেকের মধ্যে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন জানিয়েছেন, মধ্যপ্রাচ্য ও মালয়েশিয়া থেকে বৈধ কাজের ভিসা নিয়েও অনেক বাংলাদেশি রোমানিয়ায় যাচ্ছেন। গত চার মাসে বাংলাদেশের নাগরিকদের জন্য ১ হাজার ১৮০টি ভিসা দিয়েছে দেশটি। এর মধ্যে দিল্লির রোমানিয়া দূতাবাস ২০২০ সালে বাংলাদেশিদের জন্য ৫৮০টি ভিসা ইস্যু করে। গত বছর ভিসা ইস্যু করেছে ২ হাজার ৮৬৯টি। আর এ বছরের ১৬ এপ্রিল পর্যন্ত ইস্যু করেছে ১ হাজার ১৮০টি। সব মিলিয়ে গত তিন বছরে রোমানিয়া মোট ভিসা ইস্যু করেছে ৪ হাজার ৬২৯টি।

প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, রোমানিয়ার শ্রমবাজারকে গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছে বাংলাদেশ। ইতোমধ্যে সংক্ষিপ্ত সময়ে রোমানিয়ার সঙ্গে উচ্চ পর্যায়ের সফর বিনিময়ও হয়েছে। গত অক্টোবরে বাংলাদেশ ও রোমানিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় আলোচনা হয়। সেই সময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী কনস্যুলার সেবার জন্য বাংলাদেশে একটি প্রতিনিধি দল পাঠানোর প্রস্তাব করা হয়। রোমানিয়া সেই প্রস্তাব গ্রহণ করে এবং প্রতিনিধি দল পাঠিয়ে ভিসা ইস্যু কার্যক্রম পরিচালনা করছে। গত মার্চে বাংলাদেশ সফর করেন রোমানিয়ার রাজধানী বুখারেস্টের (থার্ড ডিস্ট্রিক) মেয়র রবার্ট সোরিন নেগোইতা। সে সময় পররাষ্ট্র ও প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রীসহ সরকারের দায়িত্বশীল প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকগুলোতে তিনি বলেছেন, রোমানিয়ার শ্রমবাজারের বিভিন্ন সেক্টরে বাংলাদেশের কর্মীদের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে এবং রোমানিয়া বাংলাদেশ থেকে কর্মী নিতে আগ্রহী। জানা যায়, বাংলাদেশে রোমানিয়ার কোনো মিশন নেই। বলকান যুদ্ধের সময় দুই দেশের মিশন বন্ধ করে দেওয়া হয়। দিল্লিতে যে মিশন আছে তার আকারও বেশ ছোট। তাই কনস্যুলার সেবা ঢাকা পাঠায় রোমানিয়া। ইতোমধ্যে এই কনস্যুলারে সাড়ে ৩ হাজারের বেশি আবেদন পড়েছে। সরাসরি সাক্ষাৎকার নিয়ে ভিসা ইস্যু করছেন রোমানিয়ার প্রতিনিধিরা। তবে শুধু যাদের ওয়ার্ক পারমিট এসেছে তাদেরই সাক্ষাৎকারের জন্য ডেকে ভিসা ইস্যু করা হচ্ছে। গত এক মাসে এমন প্রায় ৮০০ থেকে ৯০০ ভিসা ইস্যু করেছে। অন্যদের কোনো সুযোগ নেই। তাই কোনো অসাধু এজেন্সি থেকে সাধারণ বাংলাদেশিদের প্রতারিত না হওয়ার বিষয়েও সতর্ক করেছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. আহমেদ মনিরুছ সালেহীন গতকাল বলেন, ভিসা প্রদানের জন্য বাংলাদেশে এসে এভাবে কনস্যুলার সার্ভিস দেওয়া এর আগে কোনো দেশের পক্ষ থেকেই হয়নি। কিন্তু রোমানিয়া ঢাকায় এসে ভিসা দিচ্ছে। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে রোমানিয়াকে সব ধরনের সাপোর্ট দেওয়া হচ্ছে। বিএমইটিতে তাদের অফিস দেওয়া হয়েছে। তিন মাস তারা এই কনস্যুলার সার্ভিস চালাবে। তাদের টার্গেট তিন মাসে প্রায় ৪ হাজার ভিসা ইস্যু করা। সচিব বলেন, রোমানিয়া বাংলাদেশের জন্য প্রতিশ্রুতিশীল শ্রমবাজার।  সেখানে কাজ মূলত বিভিন্ন ইন্ডাস্ট্রিতে ম্যানুফাকচারিংয়ের। তবে বাংলাদেশিদের জন্য এখনো সমস্যা হলো-দেশটিতে বাংলাদেশির পরিমাণ কম এবং ভাষাগত সমস্যা। এ কারণে আমাদের কর্মীরা সেখানে বেতন ও পরিবেশ ভালো পেলেও তাদের জন্য প্রথম দিকে চ্যালেঞ্জিং হয়। রোমানিয়ায় আগে ইউক্রেন থেকে বা আশপাশের অন্যান্য দেশের লোকজন কর্মী হিসেবে  যোগ দিত। এখন সেখানে বাংলাদেশিদের সুযোগ তৈরি হয়েছে। রোমানিয়া থেকে প্রবাসী বাংলাদেশিরা জানান, রোমানিয়ায় নতুন আসা ব্যক্তিদের সাধারণ মাসিক বেতন হয়ে থাকে ২২০০ থেকে ২৫০০  রোমানিয়ান লিউ বা সাড়ে ৪০০ থেকে ৫০০ মার্কিন ডলার। নতুনদের বেতন এর বেশি সাধারণত হয় না। তবে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ও অভিজ্ঞদের মাসিক বেতন হয়ে থাকে ৩ হাজার লিউ বা ৬০০ থেকে সাড়ে ৬০০ মার্কিন ডলার।

আজকের টাঙ্গাইল
আজকের টাঙ্গাইল