• শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৫ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

আজকের টাঙ্গাইল

কেন্দ্রীয় খাদ্য গবেষণাগার হচ্ছে পূর্বাচলে

আজকের টাঙ্গাইল

প্রকাশিত: ২২ ডিসেম্বর ২০২১  

খাদ্যে ভেজাল ও দূষণ রোধে শক্তিশালী করা হচ্ছে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষকে। দেশের মানুষের নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতে দেখভালকারী সরকারি এই প্রতিষ্ঠানটি প্রধান কার্যালয়সহ পেতে যাচ্ছে দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তম কেন্দ্রীয় ফুড রেফারেন্স গবেষণাগার। এই গবেষণাগারে থাকবে আন্তর্জাতিক মানের একটি প্রশিক্ষণ একাডেমিও। এ জন্য নারায়ণগঞ্জের পূর্বাচলে পাঁচ একর জমির প্রাতিষ্ঠানিক একটি প্লট বরাদ্দের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে খাদ্য মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ জানিয়ে চিঠি দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। শিগগিরই এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেবে খাদ্য মন্ত্রণালয়।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান (অতিরিক্ত সচিব) আবদুল কাইউম সরকার গতকাল বলেন, ‘দেশে দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তম কেন্দ্রীয় ফুড রেফারেন্স গবেষণাগার গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। সেখানে প্রশিক্ষণ একাডেমিসহ সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা থাকবে। এই গবেষণাগারের জন্য পূর্বাচলে পাঁচ একর জমি বরাদ্দ চেয়ে পূর্ত মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেওয়ার জন্য অনুরোধ জানিয়েছি খাদ্য মন্ত্রণালয়কে। এ ব্যাপারে কিছু আইনি জটিলতা রয়েছে। অ্যাটর্নি জেনারেলের সঙ্গে আলাপ-আলোচনার ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় প্রক্রিয়া অনুসরণ করে জমি বরাদ্দের জন্য চিঠি দেওয়া হবে। এটি বাস্তবায়ন হলে খাদ্যে ভেজাল ও দূষণ রোধে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া যাবে।’ খাদ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়, সরকারের রূপকল্প-২০৪১, এসডিজি-২০৩০ ও ডেল্টাপ্ল্যান-২১০০ লক্ষ্যসমূহ বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজন নিরাপদ খাদ্য ও পুষ্টিমান নিশ্চিত করা। এ জন্য দেশে আন্তর্জাতিক মানের খাদ্য পরীক্ষাগার ও ল্যাবরেটরিগুলোতে আন্তর্জাতিক মানের অ্যাক্রেডিটেশনসহ প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধা থাকা দরকার। এ কারণে উন্নত সুযোগ-সুবিধা, যন্ত্রপাতি ও জনবলসহ বিশ্বমানের একটি কেন্দ্রীয় ফুড টেস্টিং রেফারেন্স ল্যাবরেটরি স্থাপন করা জরুরি,  যেখানে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের সদর দফতর হবে। পাশাপাশি সব ধরনের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থাও থাকবে। এ জন্য রাজধানীর নিকটবর্তী উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা সংবলিত স্থান প্রয়োজন। নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষকে শক্তিশালী করার মাধ্যমে খাদ্যপণ্য পরীক্ষার সমস্যা দূর করতে ২০১৯ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি জাতীয় নিরাপদ খাদ্য দিবস উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রী একটি কেন্দ্রীয় রেফারেন্স ল্যাবরেটরিসহ আট বিভাগে গবেষণাগার স্থাপনের নির্দেশ দেন। ওই বছরের ৩১ জুলাই এ-সংক্রান্ত সারসংক্ষেপের অনুমোদন দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পাশাপাশি তিনি গত বছর ১৮ ফেব্রুয়ারি ঘোষণা দেন নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষকে পূর্বাচলে পাঁচ একর জমি প্রদান করা হয়েছে। চলতি বছর ১৬ অক্টোবর বিশ্ব খাদ্য দিবসের অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী একই অভিব্যক্তি প্রকাশ করেন। নিরাপদ খাদ্য কর্র্তৃপক্ষের এই অবকাঠামো উন্নয়নে জাইকা অর্থায়ন করার আগ্রহ প্রকাশ করেছে। তবে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের এক চিঠিতে আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকায় নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের ৫ একর আয়তনের প্লট বরাদ্দের বিষয়ে আপাতত কোনো কার্যক্রম গ্রহণ করা যাচ্ছে না। এমতাবস্থায় প্রধানমন্ত্রীর অঙ্গীকার বাস্তবায়নে চলমান মামলা দ্রুত নিষ্পত্তিকরণের উদ্যোগ নিয়ে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের কেন্দ্রীয় ফুড রেফারেন্স ল্যাবরেটরি স্থাপনের জন্য পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পের জমি থেকে ৫ একর আয়তনের প্রাতিষ্ঠানিক প্লট বরাদ্দের জন্য গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করা হলো। এর আগে ৯ নভেম্বর রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের এক অনুষ্ঠানে খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেছিলেন, ‘দেশে নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতে সেন্ট্রালি একটি ল্যাব নারায়ণগঞ্জে করা হচ্ছে, যা হবে দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সর্ববৃহৎ। এ ছাড়া প্রতিটি বিভাগে আটটি ল্যাব এবং একটি করে ভ্রাম্যমাণ ল্যাব করা হচ্ছে, যেগুলো বিভাগের যে কোনো এলাকায় খাদ্য গ্রহণ করে তা পরীক্ষা করতে পারবে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন ছিল একটি সুখী, সমৃদ্ধ, ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত সোনার বাংলা গড়া। ১৯৫৯ সালে পিয়র ফুড অর্ডিন্যান্স ১৯৫৯ প্রবর্তনের পর দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হলেও দেশে নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি। জনগণের জীবন ও স্বাস্থ্য সুরক্ষায় ভেজাল ও দূষণমুক্ত নিরাপদ খাদ্যপ্রাপ্তির সাংবিধানিক অধিকার নিশ্চিত করতে নিরাপদ খাদ্য আইন, ২০১৩ জাতীয় সংসদে পাস হয়। ২০১৫ সালের ১ ফেব্রুয়ারি থেকে কার্যকর এ আইনের অধীনে সরকার ওই বছরের ২ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠা করে। গঠিত হওয়ার পর প্রেষণে নিয়োজিত স্বল্পসংখ্যক জনবল নিয়ে এর যাত্রা শুরু হয় এবং বিধি প্রবিধানমালা প্রণয়ন, প্রশিক্ষণ ও জনসচেতনতামূলক কর্মকা-ের মধ্যে মূলত এর কার্যক্রম সীমিত থাকে। বর্তমানে তিন শতাধিক কর্মকর্তা ও কর্মচারী নিয়ে কর্তৃপক্ষের কার্যাবলি ৬৪ জেলার মাঠপর্যায়ে সম্প্রসারণ করা হয়েছে।

আজকের টাঙ্গাইল
আজকের টাঙ্গাইল