• শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৭ ১৪৩১

  • || ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

আজকের টাঙ্গাইল
সর্বশেষ:

আজ বঙ্গতাজ তাজউদ্দীন আহমদ-এর ৯৬ তম জন্মদিন

আজকের টাঙ্গাইল

প্রকাশিত: ২৩ জুলাই ২০২১  

আজ ২৩ শে জুলাই বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম স্থপতি বঙ্গবন্ধুর আস্থাভাজন সহকর্মী তাজউদ্দীন আহমদের আজ ৯৬ তম জন্মবার্ষিকী। তাজউদ্দীন আহমদ বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী ও স্বাধীনতা সংগ্রামের জাতীয় চার নেতার অন্যতম নেতা। তিনি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় অস্থায়ী বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব সাফল্যের সাথে পালন করেন। একজন সৎ ও মেধাবী রাজনীতিবিদ হিসেবে তাঁর পরিচিতি ছিল। তাজউদ্দীন আহমদ বাংলাদেশের রাজনীতিতে মেধা, দক্ষতা, যোগ্যতা, সততা ও আদর্শবাদের অনন্য প্রতীক। ছাত্র জীবনেই তিনি রাজনীতির সঙ্গে জড়িত হন। তিনি ছিলেন অত্যন্ত সৎ আদর্শবান সংগঠক এবং তীক্ষ্ণ মেধাসম্পন্ন রাজনৈতিক নেতা। মুক্তিযুদ্ধে তাঁর অসামান্য অবদান জাতি কখনো ভুলবে না।

 

বাংলাদেশের অন্যতম স্রষ্টা তাজউদ্দীন আহমদ ১৯২৫ সালের ২৩ জুলাই শীতলক্ষ্যার তীরঘেষা গাজীপুর জেলার অন্তর্গত কাপাসিয়ার দরদরিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবার নাম মৌলভী মুহাম্মদ ইয়াসিন খান এবং মায়ের নাম মেহেরুন্নেসা খানম। তাঁর স্ত্রী সৈয়দা জোহরা তাজউদ্দীন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর বর্তমান সদস্য। তাঁদের ৪ সন্তান রয়েছে। বড় মেয়ে শারমিন আহমদ রিতি; মেজো মেয়ে বিশিষ্ট লেখিকা ও কলামিস্ট সিমিন হোসেন রিমি এবং কনিষ্ঠা মেয়ে মাহজাবিন আহমদ মিমি। পরিবারের সর্বকনিষ্ঠ সন্তান তানজিম আহমেদ সোহেল তাজ গাজীপুর-৪ আসনের সংসদ সদস্য হিসেবে আসীন অবস্থায় পদত্যাগ করেন। ছোট ভাই তানজিম আহমদ সোহেল তাজের পদত্যাগের কারণে শূন্য হওয়া আসনে গত ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০১২ – গাজীপুর-৪ (কাপাসিয়া) অনুষ্ঠিত উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী হয়ে স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী বঙ্গতাজ তাজউদ্দিন আহমেদের মেজো মেয়ে বিশিষ্ট লেখিকা ও কলামিস্ট সিমিন হোসেন রিমি বিজয়ী হয়ে গত ৭ অক্টোবর ২০১২ সংসদ সদস্য হিসাবে শপথ নিয়েছেন।

 

৪ ভাই, ৬ বোনের মাঝে ৪র্থ তাজউদ্দীন আহমদের পড়াশোনা শুরু বাবার কাছে আরবি শিক্ষার মাধ্যমে। এই সময়ে ১ম শ্রেণীতে ভর্তি হন বাড়ির দুই কিলোমিটার দূরের ভূলেশ্বর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে৷ ১ম ও ২য় শ্রেণীতে ১ম স্থান অর্জন করেন৷ ৪র্থ শ্রেণীতে ভর্তি হন বাড়ি থেকে প্রায় ৫ কিলোমিটার দূরের কাপাসিয়া মাইনর ইংলিশ স্কুলে। এরপর বিদ্যালয় পরিবর্তনের ধারাবাহিকতায় পড়েছেন কালিগঞ্জ কালিগঞ্জ সেন্ট নিকোলাস ইনস্টিটিউশন, ঢাকার মুসলিম বয়েজ হাই স্কুল ও সেন্ট গ্রেগরিজ হাই স্কুলে৷ স্কুলে সকল পরীক্ষায় তাজউদ্দীন আহমদ বরাবর প্রথম স্থান অধিকার করেছেন। ষষ্ঠ শ্রেণির বৃত্তি পরীক্ষায় তিনি ঢাকা জেলায় প্রথম স্থান অধিকার করেছেন। এ সময় একজন স্কাউট হিসেবে স্কাউট আন্দোলনের সাথে যুক্ত হন। পরবর্তী কর্মজীবনে যা তাঁর প্রেরণা ও কাজ করার ক্ষমতা জুগিয়েছে। এ সম্পর্কে তিনি বলেছেন – ‘স্কাউট হিসেবে শিক্ষা, স্বাধীনতা সংগ্রামে আমাকে অমানুষিক পরিশ্রম করতে প্রেরণা ও ক্ষমতা জুগিয়েছে’। তিনি ম্যাট্রিক (১৯৪৪) ও ইন্টারমিডিয়েট পরীক্ষায় অবিভক্ত বাংলার সম্মিলিত মেধাতালিকায় যথাক্রমে দ্বাদশ ও চতুর্থ স্থান (ঢাকা বোর্ড ) লাভ করেন। ১৯৫০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে বি.এ (সম্মান) ডিগ্রী লাভ করেন। ১৯৬৪ সালে রাজনৈতিক বন্দী হিসেবে কারাগারে থাকা অবস্থায় এল.এল.বি. ডিগ্রীর জন্য পরীক্ষা দেন এবং পাস করেন। এছাড়া দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় সিভিল ডিফেন্স-এর ট্রেনিং নিয়েছিলেন তিনি। তাজউদ্দীন আহমদ পবিত্র কোরানে হাফেজ ছিলেন। তাজউদ্দীন আহমদ ছাত্রজীবন থেকেই রাজনীতি ও সমাজসেবার সাথে অত্যন্ত সক্রিয়ভাবে জড়িত ছিলেন। রাজনীতি ও শিক্ষা তাঁর হাতে হাত ধরে চলেছে ১৯৪৩ সালে তাজউদ্দীন আহমদের ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে যোগদান করার মাধ্যমেই মূলত রাজনীতিতে হাতেখড়ি। ১৯৪৭ সালে ভারত ভাগের পর থেকে ভাষার অধিকার, অর্থনৈতিক মুক্তি এবং সামপ্রদায়িকতাবিরোধীসহ সব আন্দোলনে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। আওয়ামী লীগের গঠন প্রক্রিয়ার মূল উদ্যোক্তাদের তিনি একজন। ১৯৪৮ সালে জিন্নাহর বক্তব্যে সারাদেশে তুমুল ঝড় ওঠে। এরপর যে পাঁচজন ছাত্রনেতা ভাষার প্রশ্নে জিন্নাহর সঙ্গে দেখা করেন, তাদের মধ্যে তাজউদ্দীন আহমদ অন্যতম। পরে ১৯৪৯ সালে আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠিত হলে এই দলে যোগ দেন তিনি। আওয়ামী লীগ আর বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে বাকি জীবন পার করেন। 

আজকের টাঙ্গাইল
আজকের টাঙ্গাইল