• শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৬ ১৪৩১

  • || ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

আজকের টাঙ্গাইল

গরমে রোজায় শরীরকে সুস্থ রাখবে যে ফল

আজকের টাঙ্গাইল

প্রকাশিত: ১৮ এপ্রিল ২০২৩  

শসার একাধিক উপকার রয়েছে। বিশেষত, তীব্র গরমে শসা খেলে শরীর সুস্থ থাকে। তাই গরমকালের এই রোজায় ইফতার বা শেহরির সময় পাতের সঙ্গী করে নিন ফলটিকে। এবার এর পরিচিতি ও গুণাগুণ সম্পর্কে সংক্ষেপে জেনে নেয়া যাক-
শসা (Cucumis sativus) গোর্ড পরিবার কিউকারবিটাসের অন্তর্গত একটি অতি পরিচিত উদ্ভিদ। শসা এক প্রকারের ফল। লতানো উদ্ভিদে জন্মানো ফলটি লম্বাটে আকৃতির এবং প্রায় ৫ থেকে ৭ ইঞ্চি লম্বা হয়ে থাকে। এর বাইরের রঙ সবুজ। তবে পাকলে হলুদ হয়। ভেতরে সাদাটে সবুজ রঙের হয়, এবং মধ্যভাগে বিচি থাকে। এটি কাঁচা খাওয়া হয় বা সালাদ তৈরিতে ব্যবহার করা হয়।

সূর্যের তীব্র তাপের কাছে হার মেনেছে দেশবাসী; বেলা বাড়লেই ধু ধু করছে রাস্তাঘাট। কাকপক্ষীর ডাকও শোনা যাচ্ছে না। সবাই আশ্রয় নিচ্ছে কোনো শিতল স্থানে। যেখানে সরাসরি রোদটা গায়ে পড়ে না। তবে এই সময়ে বাইরে বেরুলে অবশ্যই কিছু সতর্কতা গ্রহণ করতে হবে। নইলে বড়সড় সমস্যায় আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা কয়েকগুণ বৃদ্ধি পাবে।

বিশেষজ্ঞদের কথায়, তীব্র গরম থেকে শরীরকে রক্ষা করতে হলে ডায়েটে অবশ্যই পরিবর্তন আনা জরুরি। এমন খাবার খেতে হবে যা পানির ঘাটতি মেটাতে পারে এবং শরীরকে ঠান্ডা রাখে। আর এই কাজে সিদ্ধহস্ত হলো সস্তার শসা।

শসায় রয়েছে- পানি, ফাইবার, কার্ব, ম্যাগনেশিয়াম, আয়রন, ফসফরাস, পটাশিয়াম, সোডিয়াম, ভিটামিন সি, ফসফরাস, ক্যালশিয়াম, ফোলেট, লিউটিন, জিয়াজ্যানথিন, ভিটামিন কে, বিটা ক্যারোটিন এবং প্রচুর পরিমাণ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট।

তাই তীব্র তাপদাহে শসা পাতে রাখলে শরীর সুস্থ থাকে। এনার্জির ঘাটতি দূর হয়, মেলে কুলিং এফেক্ট। আসুন গ্রীষ্মের দিনে শসা খেলে কী কী উপকার মেলে, তা বিশদে জানা যাক।

​(১) পানির ঘাটতি দূর করে:​ এমন চাদিফাঁটা গরমে শরীরে পানির ঘাটতি তৈরি হওয়া খুবই স্বাভাবিক। এমনকী দেহে ইলেকট্রোলাইটসের ভারসাম্যও বিগড়ে যায়। ফলে একাধিক সমস্যা তৈরি হতে পারে। এই পরিস্থিতির সঙ্গে লড়াইয়ের জন্য বীর বাহাদুর হতে পারে শসা। এই ফলে বেশ কিছুটা পরিমাণে পানি রয়েছে। তাই শসা খেলে শরীরে পানিরর জোগান বাড়ে। এমনকী ডিহাইড্রেশন থেকে রক্ষা পাওয়া যায় বলেই জানাচ্ছে মেডিক্যাল নিউজ টুডে।

(২) হজমের সমস্যা কমায়: গরমে পেটের সমস্যা বৃদ্ধি পায়। খাবার ঠিকমতো হজম হতে চায় না। তাই গ্যাস, অ্যাসিডিটি, পেট ফাঁপার মতো সমস্যা নিয়মিত পিছু নেয়। তবে গরমের এই সমস্যাগুলোকে তুড়িতে উড়িয়ে দিতে পারে শসা। এতে রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে ফাইবার। এই ফাইবার কিন্তু অন্ত্রের খেয়াল রাখার কাজে অত্যন্ত কার্যকরী। ফলে পেটের সমস্যা দূর হয়। তাই বিশেষজ্ঞরা বারবার গরমে শসা খেতে বলেন। তবে শুধু গ্রীষ্মে নয়, সারাবছরই শসা খেতে পারেন।

(​৩) হাড়ের জোর বাড়াতে পারে:​ একটু বয়স বাড়লেই এখন হাড়ের সমস্যা ঘিরে ধরছে। নানা ধরনের বাতজনিত রোগে অনেকেই আক্রান্ত হচ্ছেন। বিশেষত, নারীদের মধ্যে এই অসুখে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি। তবে অতিরিক্ত চিন্তা করবেন না প্রিয় পাঠক। বরং হাড়ের জোর বাড়ানোর জন্য পাতে রাখতে পারেন শসা। এতে রয়েছে ভিটামিন কে-এর ভাণ্ডার। এই ভিটামিন ক্যালশিয়াম শোষণে সাহায্য করে। ফলে হাড়ে প্রবেশ করে প্রয়োজনীয় ক্যালশিয়াম। তাই হাড়ের জোর বজায় রাখতে চাইলে শসা হতে পারে আপনার নিত্যসঙ্গী।

(৪) ক্যানসার প্রতিরোধে সক্ষম​: ক্যানসার নামটা শুনলেই মনের ভেতর ভয় দানা বাঁধে। এই কঠিন অসুখে আক্রান্ত হলে রোগী ও তার পরিবারের উপর ঝড় বয়ে যায়। তাই এই রোগ থেকে দূরে থাকার চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। আর কর্কটরোগ প্রতিরোধের কাজে আপনাকে সাহায্য করতে পারে শসা। এতে আছে কিউকারবিটাসিন নামক উপাদান যা ক্যানসার দূর রাখতে পারে। আর তা বিভিন্ন গবেষণায় প্রমাণিত। বিশেষত, কোলোন ক্যানসারের মতো রোগকে দূরে রাখার কাজে এই ফল অত্যন্ত কার্যকরী।

(৫) ডায়াবিটিস থাকে নিয়ন্ত্রণে, হার্টের অসুখ কাছে ঘেঁষে না:​ ডায়াবিটিস আক্রান্তদের পাতে রোজ অন্তত একটা শসা থাকা চাই। এতে এমন কিছু উপাদান রয়েছে যা ব্লাড সুগার বাড়তে দেয় না। এমনকী ইনসুলিনের কার্যকারিতা বৃদ্ধি করে এই ফল। তাই ডায়াবিটিস রোগীরা সুস্থ থাকেন। এছাড়া হার্টের অসুখ দূরে রাখতেও পারে শসা। এই ফলে এমন কিছু উপাদান রয়েছে যা কোলেস্টেরল বাড়তে দেয় না। ফলে হার্ট সুরক্ষিত থাকে।

উল্লেখ্য, প্রতিবেদনটি সচেতনতার উদ্দেশ্যে লেখা হয়েছে। কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

আজকের টাঙ্গাইল
আজকের টাঙ্গাইল