থাকা ও দুই বেলার খাবার ফ্রি ১১৪ বছরের মুসাফিরখানায়
আজকের টাঙ্গাইল
প্রকাশিত: ৯ জানুয়ারি ২০২৩
মুসাফিরখানা নামটি শুনে আমাদের দেশের অনেকেই আশ্চর্য হতে পারে। এ যুগেও কি বাংলাদেশে মুসাফিরখানা সম্ভব! বাস্তবতা হলো ১১৪ বছর ধরে নওগাঁর পোরশা উপজেলার প্রত্যন্ত এলাকা পোরশা গ্রামে (মিনা বাজার) মুসাফিরখানাটি তার ঐতিহ্য বহন করে চলেছে। এখানে দূরদূরান্ত থেকে মানুষ নিরাপদে রাত্রিযাপন করতে পারে।
প্রবীণদের ভাষ্যমতে, ১৫০০ খ্রিষ্টাব্দের পর তৎকালীন বাদশা আলমগীরের আমলে ইরান থেকে হিজরত করতে বাংলাদেশের বরিশালে আসেন কয়েকজন শাহ্ বংশের মুরব্বী। এদের মধ্যে ফাজেল শাহ্, দ্বীন মোহাম্মদ শাহ্, ভাদু শাহ্, মুহিদ শাহ্, জান মোহাম্মদ শাহ্, খান মোহাম্মদ শাহ্ অন্যতম।
পরবর্তীতে বরিশাল থেকে তারা আসেন নওগাঁ জেলার পোরশা উপজেলার পোরশা গ্রামে। যদিও সে সময় এখানে কোনো বসতবাড়ি ছিল না। চারিদিকে ছিল শুধু বন-জঙ্গল। তারপরেও এলাকাটি ভাল লাগায় তারা এখানে ঘরবাড়ি নির্মাণ করে বসবাস করার পাশাপাশি বিভিন্ন গ্রামে ইসলাম প্রচার শুরু করেন। এখানকার মাটি ও মানুষের সঙ্গে সখ্য গড়ে ওঠায় তারা আর পোরশা ছেড়ে যাননি। এখানে বসবাস করার সুবাদে তাদের পরবর্তী প্রজন্ম জমিদারি করেন।
তাদেরই এক বংশধর খাদেম মোহাম্মদ শাহ। তিনি পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়েছেন, কিন্তু তার সৃষ্টি এখনো রয়ে গেছে। মানুষ বিভিন্নভাবে তার এই সৃষ্টি থেকে উপকৃত হচ্ছে।
বরেন্দ্র ভূমি খ্যাত প্রত্যন্ত এলাকার পোরশা গ্রাম (মিনা বাজার)। একসময় গ্রামটি গাছ ও ঝোপঝাড়, জঙ্গলে পরিপূর্ণ ছিল। শত বছর আগে মানুষ ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রয়োজনে পায়ে হেঁটেই চলাচল করত। হেঁটে চলাচল করতে গিয়ে নেমে যেত সন্ধ্যা। দিনের কাজ শেষ করে বাড়ি ফেরা সম্ভব হতো না। সে সময় চোর-ডাকাতের উপদ্রব ছিল। সন্ধ্যার পর চারিদিকে শুধু সুনসান নীরবতা, ঝিঁঝিঁপোকা ও শিয়ালের ডাক। স্বাভাবিকভাবেই মনের মধ্যে এক ধরনের ভয় কাজ করত। আশপাশে কোন আবাসিক ভবন ছিল না। সন্ধ্যার পর মানুষ আশ্রয় খোঁজার চেষ্টা করত। কেউ কোনো বাড়িতে আশ্রয় পেত, আবার কারও ভাগ্যে জুটত ভোগান্তি।
পথশ্রান্ত মানুষের দুর্ভোগের কথা ভেবে তাদের আশ্রয় দেবার জন্য ১৯০৮ সালে তৎকালীন জমিদার খাদেম মোহাম্মদ শাহ্ মাটির ঘর তৈরি করে মানুষের থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করেন। ঘরটির নাম দেন 'মুসাফিরখানা'।
মুসাফিরদের থাকা-খাওয়ার খরচ বহনের জন্য মুসাফিরখানার নামে ৮০ বিঘা জমিও লিখে দেন খাদেম মোহাম্মদ শাহ্। এই সময় মুসাফিরখানা খুঁজে পাওয়া যেন আকাশের চাঁদ হাতে পাওয়া।
পথিক শুধু রাতযাপন করে তা নয়, সম্পূর্ণ বিনামূল্যে খাবার দেওয়ার ব্যবস্থাও রয়েছে এখানে। ৮০ বিঘা জমিতে যে ফসল হয় সেই টাকা দিয়ে চলে এই মুসাফিরখানা।
বর্তমানে রাস্তাঘাট পাকাকরণ ও যোগাযোগব্যবস্থার অনেক উন্নতি হয়েছে। তারপরও মুসাফিরখানায় অতিথিদের আনাগোনা থাকে।
উপজেলাটি পোরশা হলেও সব প্রশাসনিক কার্যক্রম নীতপুর বাজারে। মুসাফিরখানাটি পোরশা গ্রামের প্রাণকেন্দ্র মিনা বাজারে। নীতপুর থেকে পশ্চিমে ৬ কিলোমিটার দূরে এবং জেলা শহর নওগাঁ থেকে পূর্ব দিকে ৬৫ কিলোমিটার দূরে মিনা বাজার অবস্থিত। এছাড়া বিভাগীয় শহর রাজশাহী থেকে উত্তর-পশ্চিমে ১০০ কিলোমিটার দূরে অবিস্থত।
বাজারের প্রধান সড়কের লাগোয়া পূর্ব-পশ্চিম লম্বা দ্বিতল ভবন। মুসাফিরখানায় প্রবেশের আগেই রয়েছে গাড়ি পার্কিংয়ের জায়গা। আর মাথার ওপর ঝুলানো সাইনবোর্ডে লেখা 'পোরশা মোসাফিরখানা'।
পরবর্তীতে ১৯৮৮ সালে মুসাফিরখানার জমির ফসল বিক্রির অর্থ থেকে দ্বিতল পাকা ভবন নির্মাণ করা হয়। ভবনে রয়েছে বিভিন্ন নকশায় শিল্পের সমারোহ। মোজাইক করা মেঝেতে গালিচা বিছানো। এখানে একটি কমিউনিটি সেন্টারও আছে। বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে এই কমিউনিটি সেন্টারটি ভাড়া দেওয়া হয়। সবমিলিয়ে প্রায় ১৬টি ঘর রয়েছে এখানে। একসঙ্গে ৫০-৬০ জন এখানে থাকতে পারে। ঘরে আছে খাট, তোষক, বালিশ ও ফ্যান। মুসাফিরখানার উত্তরপাশে রয়েছে শানবাঁধানো ঘাটওয়ালা পুকুর। ক্লান্ত পথিক স্বচ্ছ পানিতে ওজু ও গোসল করে ক্লান্তি দূর করেন।
একজন মুসাফির সর্বোচ্চ তিন দিন থাকতে পারেন মুসাফিরখানায়। থাকার পাশাপাশি দুপুর ও রাতে বিনামূল্যে খাবার সুবিধা পান। তবে খাবারের জন্য কর্তৃপক্ষকে জানাতে হয়। কেউ যদি মুসাফিরখানার খাবার খেতে না, চান তাহলে তাকে যেতে হবে ৬ কিলোমিটার দূরে নীতপুর বাজারে অথবা ২ কিলোমিটার দূরে সরাইগাছী বাজারে। স্থানীয় মিনা বাজারে দুটি ছোট খাবারের হোটেল থাকলেও তা অধিকাংশ সময় বন্ধ থাকে। মুসাফিরখানায় যিনি একবার থেকেছেন, অন্তত দুই মাস পর তিনি ফের থাকতে পারবেন।
মুসাফিরখানার সেবক মিজানুর রহমান বলেন, 'কেউ দুদিনের জন্য আবার কেউ তিন দিনের জন্য মুসাফিরখানায় থাকেন। তাদের জন্য থাকা ও খাওয়ার সুব্যবস্থা আছে। প্রতিদিনই গড়ে ৪-৫ জন থাকেন। মুসাফিররা আশপাশের প্রত্যন্ত এলাকাগুলো ঘুরে দেখেন। দূরদূরান্ত থেকে মুসাফিররা আসেন।'
মুসাফিরখানার ম্যানেজার ও স্থানীয় বাসিন্দা সিরাজুল ইসলাম। তিনি ১৯৯৬ সাল থেকে এখানে চাকরি করছেন। মুসাফিরদের থাকা-খাওয়া ও সার্বিক সহযোগিতা করে থাকেন তিনি।
সিরাজুল ইসলাম বলেন, 'মুসাফিরখানার নামে ৮০ বিঘা জমি আছে। এর আয় থেকে খরচ বহন করা হয়। এছাড়া স্থানীয়রাও অর্থ দিয় সহযোগিতা করে থাকেন। এখানে দুবেলা (দুপুর ও রাত) খাবারের ব্যবস্থা করা হয়। যদি কেউ দুপুরে খেতে চান, তাহলে সকাল ৯টা এবং রাতে খেতে চাইলে বিকেল ৪টার মধ্যে বলতে হবে। থাকতে চাইলে অবশ্যই রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। অনেকে মুসাফিরখানায় থাকতে চাইলেও খেতে চান না।'
সিরাজুল জানান, প্রতি বুধবার দুপুরে স্থানীয় ও অসহায়দের একবেলা খাবার দেওয়া হয়। সেখানে প্রায় ৪০-৫০ জন খাবার খেয়ে থাকে। সবচেয়ে বেশি মানুষ হয় রমজান মাসে। রমজানের ২০ থেকে ২৯ তারিখে প্রতিদিন ২০০-৩০০ জনের খাবারের আয়োজন করা হয়। এছাড়া প্রতিদিন ইফতার করে প্রায় ৪০০ জন।
রমজান মাসে প্রায় ৫ লাখ টাকার মতো খরচ হয় বলে জানালেন সিরাজুল। বছরের অন্য সময় প্রতি মাসে প্রায় ৩৫-৪০ হাজার টাকা খরচ হয়।
পোরশা মুসাফিরখানার সাধারণ সম্পাদক মঞ্জুরুল ইসলাম শাহ। গত ১০ বছর থেকে তিনি এ পদে আছেন। তিনি বলেন, 'আমাদের এলাকাটি প্রত্যন্ত। মুসাফিরখানাটি যখন প্রতিষ্ঠান করা হয়েছিল সে সময় যোগাযোগব্যবস্থা খুবই খারাপ ছিল। এলাকার বাইরের কেউ এলে কাজ শেষ করে ফিরে যাওয়াটা তার জন্য অত্যন্ত কষ্টের ছিল। এছাড়া কোথায় থাকবেন বা কী খাবেন তার কোনো ব্যবস্থাই ছিল না।
'১৯০৮ সালে মাটি দিয়ে মুসাফিরখানার ঘর তৈরি করা হয়েছিল। এ ঘরে প্রায় ৮০ বছর কার্যক্রম পরিচালিত হয়। পরবর্তীতে ১৯৮৮ সালে মুসাফিরখানার জমির আয় থেকে দ্বিতল পাকা ভবন তৈরি করা হয়। আমাদের এলাকায় কোনো আবাসিক হোটেল নাই। প্রতিদিনই দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মুসাফিররা এখানে আসেন, থাকেন এবং ঘুরে দেখেন।'
মঞ্জুরুল ইসলাম শাহ বলেন, 'মুসাফিরখানার নিজেস্ব সম্পদ রয়েছে যা দিয়ে পরিচালনা করা হয়। এছাড়া এলাকাবাসীরাও নানভাবে সাহায্য-সহযোগিতা করেন।'
- `ড. ইউনূস ইসরায়েলির পুরস্কার নিয়ে গণহত্যার পক্ষ নিয়েছেন`
- বাংলাদেশি আমেরিকানদের ভূয়সী প্রশংসা করলেন ডোনাল্ড লু
- কুড়িগ্রামে দ্রুত বিনিয়োগ শুরু হবে: ভুটানের রাজা
- ডলার সংকট কাটছে
- প্রবাসীদের আটকাপড়া লাগেজ বাড়ি পৌঁছে দিবে বিমান
- স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে চীনের সহায়তা অব্যাহত থাকবে
- একসঙ্গে কাজ করবে জাইকা ও বিএফডিসি
- জুনে নৌপথে মিলবে অন অ্যারাইভাল ভিসা
- আইপিইউ’র গভর্নিং কাউন্সিলের সমাপনী সেশনে স্পিকার
- একনেকে ১১ প্রকল্প অনুমোদন
- এলডিসি থেকে উত্তরণের পর সর্বোচ্চ সুবিধা পেতে কার্যকর পদক্ষেপ নিন
- সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির চেতনা তৃণমূলে ছড়িয়ে দেয়ার আহ্বান
- বজ্রপাতে হাফেজসহ দুইজনের মৃত্যু
- কিশোরী মাদ্রাসাছাত্রীকে ধর্ষণ, বৃদ্ধ গ্রেফতার
- টাঙ্গাইলে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের দুই দফা দাবিতে মানববন্ধন
- জিম্মি এমভি আবদুল্লাহে উদ্ধার তৎপরতা
- পাবনায় জাস্টিন ট্রুডোর নামে জন্ম নিবন্ধন, দোষী চিহ্নিত
- নাশকতা মামলায় বিএনপি-জামায়াতের ৪৭ নেতাকর্মী কারাগারে
- কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে ভেসে আসছে ঝাঁকে ঝাঁকে জেলিফিশ
- টেকনাফে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীদের হাতে ৭ জন অপহরণের শিকার
- বিএসএফের গুলিতে নিহত বাংলাদেশির মরদেহ হস্তান্তর
- ডিজিটাল হুন্ডিতে ৪০০ কোটি টাকা পাচার, আটক ৫
- পারিবারিক কলহ, যা করলেন রিকশাচালক
- ভেজাল ওষুধ বিক্রি করতে গিয়ে ধরা চক্রের তিন সদস্য
- কারওয়ান বাজার সরানোর প্রক্রিয়া শুরু
- শরীয়তপুরের সেই চিকিৎসককে চান না রৌমারীবাসী
- রাজকুমার সিনেমার প্রথম গান প্রকাশ্যে
- যখন দলকে আর সহযোগিতা করতে পারবো না তখন অবসরে যাব : মেসি
- ইহসানুল করিমের প্রতি বাসস পরিবারের গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন
- ভুটানের রাজাকে কুড়িগ্রামে বিজিবির রাষ্ট্রীয় গার্ড অব অনার প্রদান
- নির্বাচনি ইশতেহার বাস্তবায়নের নির্দেশনা আসছে ডিসি সম্মেলনে
- বিদেশীদের কাছে নালিশ করে কোনো লাভ হবে না : সংসদে প্রধানমন্ত্রী
- বিএনপি নেতারা তাদের বিদেশী প্রভুদের দ্বারে দ্বারে ঘুরে বেড়াচ্ছে
- অপরাধ মোকাবিলায় পুলিশকে প্রস্তুতি নিতে হবে: প্রধানমন্ত্রী
- নাবিকদের ফিরিয়ে আনার সর্বাত্মক চেষ্টা চলছে
- মতবিরোধ না রেখে মিলেমিশে কাজ করার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর
- এপ্রিলে শেষ হচ্ছে থার্ড টার্মিনাল নির্মাণ, চালু অক্টোবরে
- ‘দগ্ধদের চিকিৎসায় টাকা পাঠিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী’
- বেশি দামে খেজুর বিক্রি করায় ৩ দোকানিকে জরিমানা
- ৪১তম বিসিএসে ২৪৫৩ নিয়োগের সুপারিশ
- বঙ্গবন্ধুর কারণেই নারীরা আজ উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হচ্ছে
- ভারত থেকে আসছে ৫০ হাজার টন পেঁয়াজ
- ৭ মার্চ উপলক্ষে স্মারক ডাকটিকিট অবমুক্ত করলেন প্রধানমন্ত্রী
- তারহীন ইন্টারনেট সংযোগ দিতে পারবে ৩ মোবাইল অপারেটর
- চালু হলো নতুন স্কিম ‘প্রত্যয়’
- ঢাকার সঙ্গে উত্তরাঞ্চলের রেল যোগাযোগ স্বাভাবিক
- ভুটান থেকে বিদ্যুৎ আমদানিতে ভারতের সহযোগিতা চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী
- রোজার তাৎপর্য মানুষের জীবনে এর সঠিক প্রতিফলন ঘটানোর আহবান
- দেশ ধ্বংসের যেকোনো পদক্ষেপের বিরুদ্ধে সতর্ক থাকুন: প্রধানমন্ত্রী
- আমিরাতের সব ট্রেডে শ্রমিক নেওয়ার আহ্বান পররাষ্ট্রমন্ত্রীর