স্বয়ং রানী এলিজাবেথের মুখে ছিল মানিকগঞ্জের ‘হাজারি গুড়ের’ সুনাম!
আজকের টাঙ্গাইল
প্রকাশিত: ২৫ ডিসেম্বর ২০১৯
বাংলাদেশে যত গুড় তৈরী হয় তার মধ্যে মানিকগঞ্জের হাজারি গুড় অন্য সব গুড়ের চেয়ে বেশ আলাদা। এটি হাতে নিয়ে আলতোভাবে চাপ দিলেই গুঁড়া হয়ে যায়। মাতিয়ে তোলে এর সুঘ্রাণ। এখনো সেখানকার হাজারি পরিবার ধরে রেখেছে তাদের বংশপরম্পরার এই ঐতিহ্যবাহী গুড় তৈরির পদ্ধতি। প্রচণ্ড শীত চলাকালীন সময়ে তৈরি করা হয় বিখ্যাত এই হাজারি গুড়।
রানীর মুখে গুড়ের প্রশংসা
হাজারি পরিবারের দাবি, ব্রিটিশ আমলে রানী প্রথম এলিজাবেথের ভারতবর্ষ সফরের সময় এই গুড় তাকে খেতে দেয়া হয়। তিনি গুড় হাতে নিয়ে নাড়াচাড়া করে চাপ দেয়া মাত্রই তা ভেঙে হাজারটি গুড়া হয়ে যায়। সঙ্গে সঙ্গে রানী গুড়ের সুবাসে মুগ্ধ হয়ে মুখে নিয়ে খেয়ে দেখেন। এরপর থেকেই এই গুড়ের নাম হাজারি গুড়। বাংলার লোকমুখে আরো প্রচলিত রয়েছে, রানী এই গুঁড়ের ভূয়সী প্রশংসা করেন। সেইসঙ্গে বাংলায় হাজারি লিখিত একটি সিল উপহার দেন। যা দিয়ে গুড়ের গায়ে এখনো সিল দেয়া হয়।
ভারতবর্ষে তখন সম্রাট আকবরের স্বর্ণযুগ। ওদিকে ইউরোপ জুড়ে রানী প্রথম এলিজাবেথের বিকাশপর্ব। মনোহর আবহাওয়া ও নান্দনিক প্রকৃতির জন্য মুঘল সাম্রাজ্যের ‘জান্নাতাবাদ’ খ্যাত এই বঙ্গভূমির সুনাম তখন আটলান্টিকের ওপারেও বিস্তৃত। অন্তত চারশ’ বছর আগের কথা। শত বছরের জনশ্রুতি মতে, মানিকগঞ্জ অঞ্চলের গুড়ের ঘ্রাণ ও স্বাদে মুগ্ধ হয়েছিলেন রানী। গুণমুগ্ধতা প্রকাশ করতে গিয়ে তিনি নিজেই ছড়িয়ে দিয়েছিলেন এ গুড়ের নাম।
মানিকগঞ্জে গুড়ের বাজারে খেজুর গুড়ের বিশাল পসরা বসলেও হাজারি গুড় সেখানে অনন্য। তাই এর দাম প্রচলিত পাটালি গুড়ের তুলনায় পাঁচ থেকে দশগুণ। জানা গেছে, এক কেজি হাজারি গুড় এক হাজার থেকে বারোশ’ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়। কম করে হলেও দেড়শ’ বছরের বেশি সময় ধরে দেশজুড়ে সমানভাবে এর সুনাম রয়েছে। এমনকি সরকারিভাবে এই গুড়ের সুনামকে স্বীকৃতি দিতে ‘ঝিটকার হাজারি গুড়’ নাম দিয়েই এ জেলার ব্র্যান্ডিং করা হয়েছে। এ অঞ্চলের প্রায় শ’খানেক পরিবার হাজারি গুড়ের ওপর নির্ভর করে তাদের জীবিকা চালিয়ে আসছে।
হাজারি গুড়ের রহস্য
ভোরের আজানের ধ্বনি কানে ভেসে আসার আগেই ঘুম ভেঙে যায় সেখানকার গাছি এবং তাদের গৃহিণীদের। গাছিরা চলে যায় খেজুর গাছ থেকে হাড়ি ভর্তি রস আনতে। আর গৃহিণীরা রস জাল করার জন্য প্রস্তুতি নিতে চুলার পাড়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। জনশ্রুতি রয়েছে, গাছি ও গৃহিণীদের এই গুড় তৈরি ও বিক্রির ব্যস্ততা অন্তত দেড়শ’ বছরের।
স্থানীয়দের মতে, এ গুড়ের উৎস খেজুরের রস। গাছির রস নামানো থেকে শুরু করে গুড় তৈরির মধ্যে রয়েছে আদি এক প্রক্রিয়া। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে অনেক কিছুর পরিবর্তন হলেও হাজারি গুড় তৈরির এই প্রক্রিয়ার কোনো পরিবর্তন নেই। ভালো গুড়ের জন্য দরকার খুব ঠাণ্ডা রোদ, ঝলমলে আবহাওয়া। হাঁড়িগুলো গরম পানিতে ধুয়ে রোদে শুকাতে হয়। কাক ডাকা ভোরেই গাছে উঠে রস নামাতে হয়। সকাল আটটার মধ্যে গুড় বানানো শেষ।
বেশি শীত অর্থাৎ ১৫ থেকে ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা এই গুড় উৎপাদনের উপযুক্ত সময়। আগের দিন বিকালে গাছ কেটে হাঁড়ি বেঁধে দেয়া হয়। পরদিন ভোরে গাছ থেকে রস নামিয়ে ছেঁকে ময়লা পরিষ্কার করে মাটির তৈরি জালা অথবা টিনের তৈরি পাত্র চুলায় জ্বালিয়ে গুড় তৈরি করতে হয়। জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা হয় কাশের খড়ি। এ গুড় দেখতে যেমন সুন্দর, খেতেও তেমনি সুস্বাদু। মিষ্টি ও টলটলে রস ছাড়া এ গুড় হয় না।
হাজারি গুড় নিয়ে প্রচলিত উপকথা
মিষ্টি গন্ধ ও মনোহর স্বাদের এ হাজারি গুড় নিয়ে এলাকায় প্রচলিত আছে অনেক রকমের উপকথা। প্রায় দুইশ বছর আগে ঝিটকা অঞ্চলে হাজারি প্রামাণিক নামে একজন গাছি ছিলেন যিনি খেজুরের রস দিয়ে গুড় তৈরি করতেন। একদিন বিকালে খেজুরগাছ কেটে হাঁড়ি বসিয়ে গাছ থেকে নামামাত্রই একজন দরবেশ এসে তার কাছে রস খেতে চান। তখন ওই গাছি দরবেশকে বলেন, সবে গাছে হাঁড়ি বসানো হয়েছে। এ অল্প সময়ে বড়জোর ১০ থেকে ১৫ ফোঁটা রস হাঁড়িতে পড়েছে। তবুও দরবেশ রস খাওয়ার আকুতি জানান এবং তাকে গাছে উঠে হাড়ি নামাতে বলেন।
গাছি তখন খেজুর গাছে উঠে হতবাক হয়ে যান। দেখতে পান, মাত্র কয়েক মিনিটে পুরো হাঁড়ি রসে ভরে গেছে। গাছি হাঁড়িভরা রস নিয়ে নিচে নেমে দরবেশকে রস খাওয়ান এবং তার পা জড়িয়ে ধরেন। তখন দরবেশ গাছিকে তুলে বুকে জড়িয়ে ধরে বলেন, ‘কাল থেকে তুই যে গুড় তৈরি করবি তা সবাই খাবে এবং তোর গুড়ের সুনাম দেশ-বিদেশে ছড়িয়ে পড়বে।’ বলেই দরবেশ দ্রুত চলে যান। ওই দিন থেকেই হাজারি প্রামাণিকের নামেই এ গুড়ের ‘হাজারি’ নামকরণ হয়।
আবার প্রবীণ অনেকের মতে, গাছের রস থেকে বিশেষ কৌশলে সুগন্ধময় সফেদ এ গুড়ের উদ্ভাবন করেছিলেন হরিরামপুর উপজেলার ঝিটকা গ্রামের মিনহাজ উদ্দিন হাজারী। প্রকৃত হাজারি গুড় তৈরির গোপন কৌশল একমাত্র তার পরিবারের সদস্যদের মাঝেই রয়ে গেছে। তার নামেই এই গুড়ের নামকরণ হয়েছে ‘হাজারী গুড়’।
মানিকগঞ্জের বিভিন্ন বাড়ি আঙিনা এবং বিভিন্ন কাঁচা-পাকা রাস্তার পথ-প্রান্তে শোভা ছড়ায় সারি সারি খেজুর গাছ। হাজারি গুড় তৈরি হয় সেসব গাছের রস থেকেই। একই এলাকার শতাধিক পরিবার এই হাজারি গুড় তৈরি করেন। এই গুড়ের চাহিদা এতোই বেশি যে, গুড় তৈরি করার কয়েক মাস আগেই অর্ডার নেয়া হয়। দূর-দূরান্ত থেকে অনেক মানুষ গাড়ি নিয়ে আসেন গুড় নিতে। তবে আগের মতো এখন আর গুড় তৈরি হয় না। তার কারণ খেজুর গাছের সংখ্যা আগের তুলনায় কমে গেছে। পাশাপাশি রস জ্বাল করার বিশেষ জ্বালানির অভাবও একটা কারণ।
তবে এক যুগ আগেও এই গুড় তৈরিতে এলাকাবাসীর উৎসাহ আরো বেশি ছিল। ক্রমেই সে আগ্রহ হারিয়ে যাচ্ছে। এর কারণ গুড় তৈরিতে জ্বালানি খরচ বেশি ও সঠিক দাম না পাওয়া। এছাড়া বর্তমান নকল গুড়ে সায়লাব হয়ে পড়েছে। নকল গুড়ে আসল হাজারি গুড়ের সিল লাগিয়ে বাজারে বিক্রি করছে অসাধু ব্যবসায়ীরা। এরকম অভিযোগের কারণে হাজারি গুড়ের ঐতিহ্য দিন দিন ম্লান হয়ে যাচ্ছে।
- ন্যাশনাল রোমিং এর সুবিধায় রবি নেটওয়ার্কেও চলবে টেলিটক সিম
- অনুষ্ঠিত হলো শিল্পী সমিতির নির্বাচন; কত জন ভোট দিলেন?
- তীব্র তাপদাহেও যেভাবে ঘর থাকবে কনকনে ঠান্ডা
- মানবদেহে সরিষা যেভাবে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট তৈরি করে!
- টেরিটরি অফিসার খুঁজছে এসিআই মটরস
- অপবিত্র জায়গায় আল্লাহর নাম উচ্চারণ করা, শরিয়ত কী বলে?
- শিব নারায়ণের কর্নিয়ায় আলো ফুটবে দুই অন্ধের চোখে
- গণভবনের শাক-সবজি কৃষক লীগ নেতাদের উপহার দিলেন শেখ হাসিনা
- সম্মানী বাড়ছে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহিদ পরিবারের
- সড়কে দুর্ঘটনা রোধে প্রতিদিন মোবাইল কোর্ট পরিচালনার নির্দেশ
- শিশুদের শারীরিক-মানসিক বিকাশে খেলাধুলা গুরুত্বপূর্ণ
- মুস্তাফিজের ১ উইকেট বয়ে নিয়ে এলো চেন্নাইয়ের হার
- ‘ভাঙ্গা থেকে পায়রা বন্দর ৬ লেন সড়ক হবে’
- শিব নারায়ণ: জাতীয় পতাকার নকশাকার হয়ে উঠেছিলেন যেভাবে
- মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি শ্রমিকদের শোষণের অভিযোগ জাতিসংঘের
- আজ দুবাইয়ের বন্দরে নোঙর করবে এমভি আবদুল্লাহ
- এসডিজি অর্জনে সরকারের সঙ্গে কাজ করবে রোটারি
- সারাদেশে ৭২ ঘন্টার হিট অ্যালার্ট আবহাওয়া অধিদপ্তরের
- উপজেলা নির্বাচনে কেন্দ্রের নির্দেশ মানছেন না অনেকে
- রাজনৈতিক কারণে নয় অপরাধের মামলায় তারা জেলখানায়
- অর্থনৈতিকভাবে উন্নতি হয়েছে বলেই মানুষ মাছ-মাংস নিয়ে চিন্তা করে
- নতুন প্রজন্মের কাছে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ তুলে ধরতে হবে : রাষ্ট্রপতি
- ডেঙ্গু প্রতিরোধে সোমবার থেকে মাঠে নামছে ডিএনসিসি
- পুড়ে ছাই আইসিইউ, অসংখ্য যন্ত্রপাতির ক্ষতি
- তুরাগ নদে মিলল যুবকের ভাসমান মরদেহ
- শিশু হাসপাতালে আগুনের ঘটনায় ৫ সদস্যের কমিটি
- রাজধানীতে যুবকের হাত বাঁধা মরদেহ উদ্ধার
- শাহজালালের তৃতীয় টার্মিনালের বাউন্ডারি ভেঙে ঢুকে গেল বাস, নিহত ১
- হালদা থেকে বালু উত্তোলন, ৪ জনের কারাদন্ড
- বিএনপি সাম্প্রদায়িক শক্তি, এদের রুখতে হবে : ওবায়দুল কাদের
- ড্রোন হামলায় এবার ইসরাইলি ১৪ সেনা আহত
- আজ জুমা বার, আজকের দিনে যেসব কাজ ভুলেও করবেন না
- মেয়ের ক্যারিয়ার গড়তে কত টাকা খরচ করলেন বাবা?
- চিনির উৎপাদন বৃদ্ধি সময়ের দাবি- ধর্মমন্ত্রী
- শেখ হাসিনা ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ গড়ার কাজ শুরু করেছেন: অর্থমন্ত্রী
- ইরানে ড্রোন হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল
- মুজিবনগর দিবসে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা
- বকশীগঞ্জে প্রাণি সম্পদ সেবা সপ্তাহ উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী
- সমৃদ্ধি সূচকে ভারত-পাকিস্তান থেকে এগিয়ে বাংলাদেশ
- ইরানের ঢাল হিসাবে আড়ালে রয়েছে যে দুই পরাশক্তি দেশ!
- মোটরসাইকেল কিনে না দেয়ায় স্কুল ছাত্রের আত্মাহত্যা
- মুজিবনগরকে আন্তর্জাতিক মানের পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা হবে
- মন্ত্রী-এমপিদের প্রভাব না খাটানোর নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর
- কোরআনের যে দোয়ায় ভালো হয় মাথা ব্যথা!
- ইসলামপুরে প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ ও প্রদর্শনী উদ্বোধন
- বকশীগঞ্জে শত বছরের সারমারা অষ্টমী মেলায় মানুষের ঢল
- কুড়িগ্রামে বেড়াতে এসে পানিতে ডুবে খালাতো ভাই বোনের মৃত্যু
- আগামী সপ্তাহে থাইল্যান্ড সফরে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী
- পারমানবিক বোমা তৈরির দ্বারপ্রান্তে ইরান!
- মেলান্দহে মুজিবনগর দিবস উদযাপন