বিদেশে উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের সার্টিফিকেট সত্যায়ন

বিদেশে উচ্চশিক্ষা গ্রহণে আগ্রহী বাংলাদেশী শিক্ষার্থীদের সার্টিফিকেট সত্যায়নে দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে ‘এপোস্টিলমাইগভ’ প্ল্যাটফর্মে যুক্ত করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি)।
আজ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. এস. এম. এ. ফায়েজ ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মে অনুষ্ঠিত এক সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ তথ্য জানান। 
প্রফেসর ফায়েজ বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের কারণে আমরা নতুন বাংলাদেশ পেয়েছি। তাই সবার আগে শিক্ষার্থীদের কল্যাণের জন্য কাজ করতে হবে। তিনি বিদেশগামী শিক্ষার্থীদের সার্টিফিকেট সত্যায়নে সব বিশ্ববিদ্যালয়কে ‘এপোস্টিলমাইগভ’ (Apostill myGov) প্ল্যাটফর্মে যুক্ত হুয়ার আহ্বান জানান। এটি বাস্তবায়নে ইউজিসি সব ধরনের সহযোগিতা প্রদান করবে। 
ইউজিসি সচিব ড. ফখরুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব সৈয়দ মাসুদ মাহমুদ খন্দকার। 
তিনি বলেন, গত এক মাসে বিদেশ গমনেচ্ছুকদের ১ লাখ ৯০ হাজার সার্টিফিকেট সত্যায়ন করা হয়েছে। এর মধ্যে একাডেমিক সার্টিফিকেট প্রায় ১ লাখ। এ কাজে বিদেশ গমনেচ্ছুকদের বিভিন্ন দপ্তরে যেতে হয়েছে। এতে, তাদের অনেক অর্থ খরচ, সময় ব্যয় ও ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে। 
তিনি আরো বলেন, এপোস্টিল কনভেনশনের  অধীনে সার্টিফিকেট ডিজিটালি সত্যায়ন করা গেলে ৫০০ থেকে ৭০০ কোটি টাকা সাশ্রয় হবে। নতুন প্রজন্মের স্বপ্ন অনুযায়ী জাতি বির্নিমাণে অনলাইনে সত্যায়ন বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখবে এবং সাটিফিকেটের নকল প্রবণতা রোধ করবে।  
অনুষ্ঠানে কমিশনের জনসংযোগ ও তথ্য অধিকার বিভাগের পরিচালক ড. শামসুল আরেফিন, পরিকল্পনা ও উন্নয়ন বিভাগের পরিচালক মোহাম্মদ মাকছুদুর রহমান ভূঁইয়া, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ম্যানেজমেন্ট বিভাগের পরিচালক মোহাম্মদ জামিনুর রহমান, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় বিভাগের পরিচালক মো. ওমর ফারুখ, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব নুমেরী জামান, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক (কনস্যুলার ও কল্যাণ) ড. শাহ্ মোহাম্মদ তানভির মনসুর, ইউজিসি’র অতিরিক্ত পরিচালক তাহমিনা রহমান, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ও আইটি কর্মকর্তাসহ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, শিক্ষা মন্ত্রণালয়, এটুআই এবং ইউজিসি’র সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা অংশগ্রহণ করেন। 
ইউজিসি সূত্র জানায়, গত ৭ জুলাই বাংলাদেশ এপোস্টিল কনভেনশনে স্বাক্ষর করেছে। এই কনভেনশন অনুযায়ী, আগামী জানুয়ারি মাসের মধ্যে বিদেশ গমনেচ্ছু শিক্ষার্থী ও পেশাজীবীদের সার্টিফিকেট এপোস্টিল পদ্ধতিতে সত্যায়নের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। অন্যথায়, বাংলাদেশের পাবলিক ডকুমেন্ট বিদেশে কার্যকর হবে না। আর এপোস্টিলে নানা ধরনের সনদ, দলিল, হলফনামা সত্যায়ন করা হলে বিদেশে তা নতুন করে সত্যায়নের প্রয়োজন হবে না। এপোস্টিল কনভেনশনের আওতায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, শিক্ষা মন্ত্রণালয়, আইসিটি মন্ত্রণালয়ের এটুআই এবং ইউজিসি দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডিগ্রি নেওয়া বিদেশ গমনেচ্ছু শিক্ষার্থীদের সার্টিফিকেট এপোস্টিলমাইগভ প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে ডিজিটাল সত্যায়নে কাজ করবে। চলতি বছরের ডিসেম্বর মাসের মধ্যে এই প্ল্যাটফর্ম তৈরির কাজ চূড়ান্ত করা হবে। 
এই প্ল্যাটফর্মে শিক্ষার্থীরা আবেদন ফি জমা দিয়ে সহজে সার্টিফিকেট ও ট্রান্সক্রিপ্টের জন্য আবেদন করতে পারবে। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীর সনদের তথ্য যাচাই বাছাই করে ইউজিসি ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সত্যায়নের জন্য পাঠানো হবে। সার্টিফিকেট ডিজিটাল সত্যায়নে কিউআর কোড যুক্ত থাকবে। সার্টিফিকেট সত্যায়নে শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি কমে আসবে, ব্যয় সাশ্রয়ী হবে এবং বিদেশের দূতাবাসসহ নানা দপ্তরে সত্যায়নের প্রয়োজন হবে না।