• মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ৫ ১৪৩০

  • || ০৮ রমজান ১৪৪৫

আজকের টাঙ্গাইল

দোহারে গরমে বেড়েছে তালের শাস বিক্রি

আজকের টাঙ্গাইল

প্রকাশিত: ৪ জুন ২০২৩  

তীব্র তাপদাহে অতিষ্ঠ মানুষ। কোথায় স্বস্তি পাবে তা নিয়েই যত চিন্তা। গরমে অস্থির পথচারীদের এক মুহূর্তের জন্য হলেও স্বস্তি এনে দিচ্ছে কচি তালের শাঁস।

গরম বাড়ায় বেড়ে গেছে তালের শাঁসের চাহিদা। চাহিদা বাড়ায় বিক্রিটাও হয়ে উঠেছে জমজমাট। দোহার উপজেলার ব্যস্ত থানার মোড় থেকে শুরু করে লটাখোলা বাজারসহ বিভিন্ন অলি-গলিতেও এখন বিক্রি হচ্ছে তালের শাস। সাইজ ভেদে প্রতিটির আটির দাম ৭ থেকে ১০ টাকা। তীব্র গরমে পানিশূন্যতায় ভোগা মানুষ মুহূর্তের স্বস্তি পেতে পথের ধারে দাঁড়িয়েই খাচ্ছে এই তালের শাঁস।

বৃহস্পতিবার সরেজমিনে দোহার উপজেলার বিভিন্ন এলাকার রাস্তা ও ফুটপাতে ঘুরে দেখা গিয়েছে কচি তালের আশ বিক্রি করতে। পাইকারির পাশাপাশি বিক্রি চলছে খুচরাও। এছাড়া জয়পাড়া থানার মোড়, জয়পাড়া বাজার,লটাখোলা, মেঘুলা বাজার, ফুলতলাসহ বিভিন্ন স্থানে ভ্যানগাড়ি ও ট্রাকে করে আসছে কচি তাল। তাল নামাইবার কিছু সময় পরই এসব স্থানে থেকে পাইকারিসহ খুচরা বিক্রি করা হচ্ছে তাল। তবে এগুলো বেশীরভাগই গাছ থেকে পাইকারি দরে কিনে আনা হয়।

দোহারের কয়েকজন পাইকারি তাল বিক্রেতা জানান, দোহারের বিভিন্ন স্থানের গাছ থেকে কচি তাল সংগ্রহ করেন বাজারে বিক্রি করতে নিয়ে আসেন। তেলের দাম বেশী হওয়ায় পরিবহণ ভাড়া বেশি থাকায় এবার দামটা একটু বেশি। আকারভেদে প্রতি হাজার তালের দাম ১০ হাজার থেকে ১২ হাজার টাকা পরে বলে জানান তারা।

মেঘুলা বাজারের খুচরা তাল বিক্রেতা ইয়াকুব বলেন, গরম বেড়ে যাওয়ায় বাজারে এখন তালের শাঁসের ভালো চাহিদা রয়েছে। প্রতি পিচ তালে আঁটির দাম ৭ থেকে ১০ টাকায় বিক্রি করছি। বিক্রিও বেশ ভালো। তবে বেশি দামে কিনার কারণে লাভ কম হচ্ছে।

বিক্রেতারা মো: জুয়েল জানান, তালগাছ থেকে ফল কেটে আনা একটি কষ্টকর বিষয়। কাটার জন্য অতিরিক্ত পারিশ্রমিক দিয়ে কেটে আনতে হয়। একটি গাছে ২৫০ থেকে ৩০০ ফল পাওয়া যায়। গাছ মালিককে শত হিসেবে ৩০০ থেকে ৬০০ টাকা দিয়ে কিনেন পাইকারিরা। আমরা তাদের কাছে থেকে কিনে নেই সে জন্য একটু দাম বেশী পরে গাছ থেকে কিনলে কম পরতো আর লাভও বপশী হত।

তিনি আরো বলেন, তাল কাটার শ্রমিক ও গ্রাম থেকে বাজারে আনা পর্যন্ত পরিবহন খরচ নিয়ে পিচ প্রতি ৫ থেকে ৮ টাকা খরচ হয়। গ্রামাঞ্চলে দিন দিন তাল গাছের সংখ্যা কমে যাচ্ছে। অনেক তালগাছ মালিক পানি (কাঁচা) তাল হিসেবে বিক্রি না করে পাকার জন্য রাখেন। পরিবারের চাহিদা পূরণ করে পাকা তাল আশ-পাশের পরিবারে মধ্যে বিতরণ করে। দোহারে প্রায়ই বাড়িতে ভাদ্র মাসে পাকা তালের পিঠার এখনও কদর রয়েছে।

জানা গেছে, জ্যৈষ্ঠ মাসের প্রথম দিকে বিক্রি শুরু হয় চলে পুরো এক মাস। শুরুতে দাম একটু চড়া থাকলেও ধীরে ধীরে বাজারে তাল এসে পরলে কমতে শুরু করে। শুরুর দিকে স্বল্পআয়ের মানুষজন শাঁস না কিনলেও দাম কমার পর সব শ্রেণীর মানুষ তালের শাঁসের স্বাদ নিয়ে থাকেন। এক মাসের জন্য এ পেশার সাথে সম্পৃক্ত হয়ে শাঁস বিক্রি করেন বিক্রেতারা।

দক্ষিণ জয়পাড়া থেকে তালের আশ কিনতে আসা ক্রেতা জাহিদ হাসান বলেন, অন্যান্য জিনিসের যে দাম তার থেকে এগুলো অনেক কম । এছাড়া বাচ্চারও পছন্দ করে। এটাতে নেই কোনো ভেজাল, ফরমালিন, রাসায়নিক সার ও কীটনাশক। একদম প্রাকৃতিক একটি খাবার পানীয়। তাই অনেকগুলো কিনে বাড়িতে নিয়ে যাচ্ছি।

এ বিষয়ে দোহার উপজেলার সরকারি পদ্মা কলেজের প্রভাষক তারেক রাজিব জানান, বাণিজ্যিকভাবে দোহারে তাল গাছের তেমন বাগান নেই। তবে গ্রামের আশেপাশে ও সড়কের পাশে বেশ কিছু তালগাছ আছে। সাধারণত বাসাবাড়িতেই মানুষ তালগাছ রোপন করে থাকে বেশি। এছাড়াও তালগাছ বজ্রপাত রোধে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে।

আজকের টাঙ্গাইল
আজকের টাঙ্গাইল