• শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১২ ১৪৩১

  • || ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

আজকের টাঙ্গাইল

কাজিপুরে স্কুল বঞ্চিত দুইশতাধিক শিশু-দায় কার!

আজকের টাঙ্গাইল

প্রকাশিত: ২ এপ্রিল ২০২৩  

ছোট যমুনার ভাঙনে চরছিন্না সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি প্রায় তিন কিলোমিটার দূরে পাশের মৌজার কুনিয়াপাড়ায় ২০০৬ সালে স্থানান্তর করা হয়। এরপর ২০০৮ সালে ওই বিদ্যালয়টির জায়গাসহ পুরো চরছিন্না গ্রাম জেগে ওঠে। তখন থেকে সেখানে আবারো ওই গ্রামবাসী বসতি গড়ে তোলে। 

সবকিছু আগের মতো চললেও ওই গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়টি আর পূর্বের স্থানে স্থানান্তর করা হয়নি। তখন থেকে ওই গ্রামের প্রায় দুই শতাধিক শিশু স্কুল বঞ্চিত হওয়ায় তাদের স্বাভাবিক পড়ালেখার পথ বন্ধ হয়ে গেছে।আর এই সংকট সমাধানের লক্ষ্যে এলাকার শিক্ষার্থী অভিভাবকগণ উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার নিকট লিখিত অভিযোগ করেছেন।
 চরছিন্না সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টির অবস্থান সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলার যমুনার চরাঞ্চলে অবস্থিত মনসুর নগর ইউনিয়নে।নামে স্কুল হলেও নেই তার কোন সাইনবোর্ড চোখে পড়েনি।  

  সম্প্রতি সরেজমিনে প্রত্যন্ত ঐ চরে গিয়ে দেখা গেছে, চরছিন্না সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি ভাঙনের কবলে পড়ে বর্তমান স্থানে স্থানান্তর করা হয়।কিন্তু প্রয়োজনীয় জায়গা বিদ্যালয়টির নেই।এই বিদ্যালয়ের দুই কিলোমিটারের মধ্যে দক্ষিণে মাজনাবাড়ি সপ্রাবি, পূর্বে পূর্ব মাজনাবাড়ি সপ্রাবি এবং উত্তরে দিঘলকান্দি রেজিঃ বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ বেশ কয়েকটি কিন্ডারগার্টেন আছে। ফলে চরছিন্না সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টিতে শিক্ষার্থী সংখ্যা অনেক কম। কাগজে কলমে বেশি শিক্ষার্থী দেখালেও বাস্তবতা একেবারেই ভিন্ন। পুরো স্কুলে ক্লাসডেতে ৩০ জন শিক্ষার্থীরও দেখা মেলেনি। 

এদিকে ২০০৮ সাল থেকে গ্রামবাসী নিজেদের জায়গায় বসতি গড়ে তুলেছে।প্রায় ৫০০ পরিবারের বাস সেখানে। কিন্তু প্রাথমিক বিদ্যালয়টি আর স্থানান্তর না হওয়ায় ১৫ বছর যাবৎওই গ্রামের আড়াইশ শিশুর অনেকেই বিদ্যালয়ে যায়না। স্কুল বঞ্চিত হওয়ায় অনেক বাচ্চা শিশুশ্রমিক হিসেবে নানা কাজ করছে।
 চরছিন্না গ্রামের শিক্ষার্থী অভিভাবক রেজাউল করিম বলেন,১৫ বছর আগে আমাগো স্কুলঘর ভাঙচে। এহন আমাগোর পাড়ায় ইস্কুলের জায়গা আছে। কিন্তুক কেন জানি আমাগোরে প্রাইমারি ইস্কুল এহনো গেরামে চালু হইলো না। আমাদের ছেলেদের দারুণ সমস্যা। 

ওই ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য রেজাউল করিম জানান, কিছুদিন আগেও আমরা গ্রামবাসী মিলে ওই বিদ্যালয়টি মূলস্থানে স্থানান্তরের জন্য মানববন্ধন করেছি। বিভিন্ন জনকে বলাবলি করছি। কিন্তু এখনো বিদ্যায়লটি পূর্বর্বের স্থানে রয়ে গেছে। ফলে অনেক শিশু শিক্ষা বঞ্চিত হচ্ছে।
 জানা গেছে, চারবছর পূর্বে চরছিন্না সপ্রাবির প্রধান শিক্ষিক আব্দুস সোবহান মারা যান। তখণ থেকে সহকারী শিক্ষিকা শাহনাজ পারভীন ভারপ্রাপ্ত হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। 
বিদ্যালয়টির পরিচালনা কমিটির সভাপতি মুনজুরুল ইসলাম বিদ্যালয় স্থানান্তরের প্রয়োজন নেই জানিয়ে বলেন, চরছিন্নায় একটি কেজি স্কুল খুললে সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। 
প্রধান শিক্ষিকা(ভারপ্রাপ্ত) শাহনাজ পারভীন জানান, বিদ্যালয়টির স্থানান্তরের বিষয়ে উর্ধতন কর্তৃপক্ষ ভাববেন। আমি কি করবো? 

 মনসুর নগর  ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক রাজমহর  জানান,  বিদ্যালয়টির অবস্থান  কুনিয়াপাড়া  মৌজায়। চরছিন্নাবাসির  শিক্ষার্থীরা দীর্ঘদিন যাবৎ প্রাথমিক শিক্ষা থেকে বঞ্চিত রয়েছে। বিদ্যালয়টি স্থানান্তর হওয়া দরকার।  
কাজিপুর প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান জানান, বিদ্যালয়টি স্থানান্তর বিষয়ে গ্রামবাসিদের পক্ষে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। উপজেলা শিক্ষা কমিটির অনুমোদন সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
 

আজকের টাঙ্গাইল
আজকের টাঙ্গাইল