কারাগারে শেখা কাজে বাহিরে নতুন জীবন
আজকের টাঙ্গাইল
প্রকাশিত: ৬ নভেম্বর ২০২০

২২ বছর ৬ মাস কারাগারে কাটিয়ে গত ১ অক্টোবর মুক্তি পান বগুড়ার কাহালু উপজেলার ভাদাহারের বাসিন্দা আকবর আলী। বয়স এখন ৬৪ বছর। এই বয়সে শুরু করেছেন নতুন জীবন। খুনের মামলার সাজা খাটার সময় কারাগারেই কাঠমিস্ত্রির কাজ শিখেছিলেন। মুক্তি পেয়ে সেই কাজটিকেই পেশা হিসেবে নিয়েছেন।
কারাগারে আকবর শুরুতে কাঠমিস্ত্রির সহকারী বা হেলপার ছিলেন। পরে নিজেই পুরোদস্তুর মিস্ত্রি হন। শুধু তা-ই নয়, শতাধিক কয়েদিকে তিনি প্রশিক্ষণও দিয়েছেন। তিনি যাতে মুক্ত জীবনেও কাঠমিস্ত্রির কাজ করে সংসার চালাতে পারেন, সে জন্য কারা কর্তৃপক্ষ ও সমাজসেবা অধিদপ্তর তাঁকে যন্ত্রপাতি কিনে দেয়। সঙ্গে দেয় কিছু টাকা।
আকবর এখন নিজের বাড়িতে আসবাব তৈরির কাজ শুরু করেছেন। গত মঙ্গলবার গিয়ে দেখা যায়, কাঠ কিনে এনে একটি ‘সেমি বক্স’ খাট তৈরি করছেন তিনি। আকবর জানান, ১০ হাজার টাকা খরচ করে কাঠ ও অন্যান্য উপকরণ কিনেছেন। খাটটি বিক্রি করতে পারবেন ১৫ হাজার টাকায়।
আকবর বলেন, ‘মন্দের অনেক ভালো দিকও আছে। ঢুকেছিলাম অপরাধী হিসেবে। বের হয়েছি একজন কর্মঠও মানুষ হিসেবে।’নিজের অতীত অপরাধ নিয়েও অনুতপ্ত আকবর। বলেন, ‘আমি আর কখনো মন্দ পথে পা বাড়াব না। নিজে আয় করব।’
আকবরের মতো ৫৭ জন কয়েদি গত এক বছরে মুক্তি পেয়ে কারাগারে পাওয়া প্রশিক্ষণ কাজে লাগিয়ে স্বাবলম্বী হয়েছেন। এ তথ্য কারা কর্তৃপক্ষের। কারা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, কারাগারে কয়েদিদের সেলাই, হস্তশিল্প তৈরি, খাদ্য পণ্য তৈরি, পোশাক তৈরি, ইলেকট্রনিক যন্ত্রপাতি সারাই, মাশরুম চাষের মতো মোট ৩৮ ধরনের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। বন্দীদের আধুনিক প্রশিক্ষণ দেওয়ার এ কার্যক্রম শুরু হয় ২০০৮ সালে।
কারা কর্তৃপক্ষ আরও জানিয়েছে, ২০১৪ সালের জুলাই থেকে গত সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ২৮টি কারাগারে ৪৮ হাজার ৪৬৩ জন বন্দীকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। প্রশিক্ষণ পাওয়া বন্দীরা পণ্য তৈরি করেন। এসব পণ্য বিক্রি করে যে আয় হয়, তার অর্ধেক দেওয়া হয় বন্দীদের। ছয় বছরে ২৪ হাজার ৮৬৭ জন বন্দী পেয়েছেন প্রায় ৭১ লাখ টাকা। কারা কর্মকর্তারা জানায়, কারাগারে মূলত অলস সময় কাটে বন্দীদের। তাঁরা নানা ধরনের অপরাধে সাজা পাওয়া ব্যক্তিদের সঙ্গে মেশেন। ফলে একজন অপরাধীর অন্য অপরাধের দিকে ঝুঁকে পড়ার ঝুঁকি থাকে। অনেকে হতাশায় ভোগেন। মূলত তাঁদের পুনর্বাসন করতেই প্রশিক্ষণের উদ্যোগ।
ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের জেল সুপার সুভাষ কুমার ঘোষ বলেন, ‘কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়ার পর বন্দীরা স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যাবেন, পরিশ্রম করে আয় করবেন—এই বিবেচনায় আমরা সব বন্দীকে কোনো না কোনো কাজের আওতায় আনতে চাইছি।’ এখন বন্দীরাই সারা দেশের কারাগারের কয়েদিদের জন্য পোশাক ও মাস্ক তৈরির কাজ করছেন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি নারায়ণগঞ্জের জেল সুপার ছিলাম। সেখানে কারাবন্দী তাঁতিরা জামদানি শাড়ি তৈরি করে প্রতিটির জন্য দুই হাজার টাকা পেতেন। পোশাকশ্রমিকেরা মাসে সাত থেকে আট হাজার টাকা আয় করতেন।’
নুরুন্নাহারদের গল্প
কারাগার থেকে গত এক বছরে মুক্তি পেয়ে যে ৫৭ জন বন্দী স্বাবলম্বী হয়েছেন, তাঁদের আরেকজন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুরের নুরুন্নাহার। তিনি ১৯৯৫ সালে হত্যা মামলায় কারাগারে ঢুকেছিলেন। যাবজ্জীবন সাজা খাটার পর মুক্তি পেয়েছেন গত মে মাসে। কারাগারে থাকাকালে নুরুন্নাহারসহ সাতজন সেলাই ও হস্তশিল্পের প্রশিক্ষণ নেন। চট্টগ্রামের কেন্দ্রীয় কারাগারের সহায়তায় তাঁদের প্রশিক্ষণ দেয় সমাজসেবা অধিদপ্তর।
নুরুন্নাহার বলেন, ‘আমি শুধু প্রশিক্ষণ নিইনি, প্রশিক্ষণ দিয়েছিও। আমাকে একটি সেলাই মেশিন দিয়ে সহযোগিতা করা হয়েছে। স্থানীয়রা আমার কাছে জামাকাপড় বানানোর জন্য নিয়ে আসে। তবে একটি দোকান থাকলে আয় আরও বাড়ত।’
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন এলাকার পূর্ব মাদারবাড়ির কোহিনুর আক্তার ব্যস্ত পুঁতির ব্যাগ ও নকশিকাঁথা বানানো নিয়ে। তিন বছর কারাগারে থাকার পর জামিনে মুক্তি পান তিনি। এখন তাঁর কাছে কাপড় বানানোর ফরমাশের কমতি নেই। তিনি বলেন, ‘কারা কর্তৃপক্ষ প্রশিক্ষণ দিয়ে ও সেলাই মেশিন দিয়ে আমার জীবন বদলে দিয়েছে।’ কোহিনুর কারাগারে যাওয়ার পর তাঁর তিন সন্তানের পড়াশোনার ব্যবস্থা করে সমাজসেবা অধিদপ্তর।
কুষ্টিয়া জেলা কারাগার থেকে গত এক বছরে মুক্তি পাওয়া ৩৭ জন বন্দী প্রশিক্ষণ নিয়েছেন ইলেকট্রিক কাজের। এই কারাগারের জেল সুপার তায়েফ উদ্দিন মিয়া বলেন, এই বন্দীদের অনেকেই কারাগার থেকে বেরিয়ে দোকান দিয়েছেন। ইলেকট্রিক মিস্ত্রির কাজ করছেন। সবাই ভালো আছেন।
১৫ বছর সাজা খেটে ছয় মাস আগে মুক্তি পান সিলেটের জকিগঞ্জের মো. জয়নাল। কারাগারে থাকাকালে তিনি বাঁশ ও বেতের পণ্য তৈরির প্রশিক্ষণও নিয়েছিলেন। তিনি জানান, কারাগারে থাকাকালে পণ্য তৈরি করে লভ্যাংশ পেতেন। এখন বেতের মোড়া বানান। স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে পেরে তিনি অনেক খুশি।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (কারা অনুবিভাগ) সৈয়দ বেলাল হোসেন বলেন, সরকার কারাগারকে বন্দীশালা নয়, সংশোধনাগার হিসেবে গড়ে তুলতে কর্মসূচি নিয়েছে। এর মধ্যে একটি বন্দীদের প্রশিক্ষণ দেওয়া। তিনি বলেন, ‘আমরা এসব প্রকল্প আরও বড় পরিসরে নেওয়ার চিন্তা করছি। এ ছাড়া যাঁরা সাজা খেটে মুক্তি পেয়ে বিভিন্ন কাজ করছেন, তাঁদের খোঁজখবর রাখা, আরও কীভাবে সহযোগিতা করা যায়, তা নিয়ে পরিকল্পনা করা হচ্ছে।’
কারাগার ৬৮টি, উৎপাদন ২৮টিতে
দেশে এখন কারাগারের সংখ্যা ৬৮। কারা অধিদপ্তরের গত ১ সেপ্টেম্বরের তথ্য অনুযায়ী, ওই দিন বন্দীর সংখ্যা ছিল ৭৯ হাজার ৫৮৭, যার ৯৬ শতাংশই পুরুষ। কারাগারগুলোর মধ্যে ২৮টিতে বন্দীদের প্রশিক্ষণের পাশাপাশি পণ্য উৎপাদনের ব্যবস্থা রয়েছে। বাকিগুলোতে নেই। প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় সব কারাগারেই। তবে প্রশিক্ষণ আরও বাড়ানো এবং মান উন্নত করার ওপর জোর দেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
সরকার কিছু কিছু উদ্যোগও নিচ্ছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র বলছে, নারায়ণগঞ্জ জেলা কারাগারের আদলে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারেও পোশাক কারখানা গড়ে তোলার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে এ কারখানার নকশা করা হয়েছে। ৪০টি সেলাই যন্ত্র নিয়ে কয়েক মাসের মধ্যে কারখানাটি চালু করা হবে।
এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাধবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারপারসন খন্দকার ফারজানা রহমান বলেন, কারাগারগুলোকে সংশোধন কেন্দ্র হিসেবেই গড়ে তুলতে হবে, যাতে বন্দীরা সাজার মেয়াদ শেষে নতুন জীবন পান। সাধারণ একজন মানুষের মতো সমাজে মিশে যেতে পারেন, কাজ করতে পারেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশে কারাগারগুলোতে সংস্কার দরকার। প্রশিক্ষণ বাড়াতে হবে এবং প্রশিক্ষণের ধরনও আধুনিক করতে হবে।

- করোনা শঙ্কা কেটে পুনরুদ্ধারের পথে দেশের অর্থনীতি
- বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৪ হাজার ৪০০ কোটি ছাড়াল
- আগামী ৪ বছরে ২৫ লাখের বেশি মানুষের কর্মসংস্থান করবে সরকার
- গৃহায়ন প্রকল্প-হাউজিং প্রজেক্ট বন্ধের নির্দেশ দিলেন তাপস
- ক্ষমতার অপব্যবহারকারীরা নজরদারিতে: সেতুমন্ত্রী
- প্রতি কিলোমিটার ২ টাকা ২০ পয়সা বাস ভাড়া নির্ধারন
- বাংলাদেশ থেকে ইন্টারনেট ব্যান্ডউইথ নিতে চায় ভুটান
- দেশে এলো ‘আকাশ তরী’
- বিএনপির মিথ্যাচারের প্রতিবাদে জামালপুর জেলা আ’লীগের সংবাদ সম্মেলন
- জামালপুরে গ্রাম আদালতে সাড়ে ৫ কোটি টাকার ক্ষতিপূরণ আদায়
- মির্জাপুর আইন শৃঙ্খলা কমিটির মাসিক সভা অনুষ্ঠিত
- সরিষাবাড়ীতে ১০ লিটার চোলাই মদসহ আটক ১
- টাঙ্গাইলে গৃহবধূর রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনায় স্বামী আটক
- আর্থিক প্রতিষ্ঠানে লুটপাট ঠেকাতে হাইকোর্টের নির্দেশ
- বন্ডের বাজারে রেকর্ড পরিমাণ লেনদেন
- জনগণকে সাশ্রয়ী মূল্যে সুপেয় পানি সরবরাহের সুপারিশ
- স্বপ্ন জাগিয়েছে দেশের মেগাপ্রকল্প
- ২ হাজার ৫০৪ যুদ্ধাপরাধীর তালিকা রয়েছে সরকারের কাছে
- আরও সহজ হলো করোনার প্রণোদনা প্যাকেজ
- বকশীগঞ্জে নকল কীটনাশক ও সারের দোকানের মালামালা জব্দ
- ভ্যাকসিন নিয়েছেন শেখ রেহানা
- করোনার টিকায় অ্যান্টিবডির ভালো ফল মিলছে
- ইসলামপুরে নৌকার প্রচারণায় কেন্দ্রীয় কৃষকলীগ
- টিকা গ্রহণ সম্পন্ন হলেও বিদেশ যেতে লাগবে নেগেটিভ সনদ
- টিকা কিনতে বাংলাদেশকে ৯৪০ মিলিয়ন ডলার সহায়তা দেবে এডিবি
- বঙ্গবন্ধুর সততা থেকে শিক্ষা নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে: সেতুমন্ত্রী
- আজ দেশে আসছে বিমানের নতুন ড্যাশ ৮-৪০০
- সারাদেশে টিকা নিলেন প্রায় ২৫ লাখ মানুষ
- বঙ্গবন্ধু করে দিয়ে গেছেন, তা ধরে রাখতে হবে: প্রধানমন্ত্রী
- বাংলাদেশেই যুদ্ধ বিমান তৈরি করা হবে: প্রধানমন্ত্রী
- বাংলাদেশ নিয়ে ষড়যন্ত্রকারী ডেভিড বার্গম্যান, যা জানা জরুরি
- টাঙ্গাইলে এসেছে ১ লাখ ২০ হাজার ডোজ করোনার টিকা
- এসএসসি-এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের অটোপাস বাতিল: শিক্ষামন্ত্রী
- টাঙ্গাইলে দিন দিন এগিয়ে যাচ্ছে নারী ফুটবল
- বঙ্গবন্ধুসেতুর পাশেই হচ্ছে অর্থনৈতিক অঞ্চল
- বাংলাদেশের কাছে টিকা চাচ্ছে হাঙ্গেরি-বলিভিয়া
- রৌমারীতে বিকাশ একাউন্ট খুলতে হয়রানির শিকার
- টাঙ্গাইলে প্রথম করোনা টিকা নিলেন জেলা প্রশাসক ড. মো. আতাউল গণি
- ২৭ জানুয়ারি ১৯৭১, ভুট্টো ও বঙ্গবন্ধুর কয়েক দফা ব্যর্থ আলোচনা
- মধুপুরে হেরোইনসহ ২ জন গ্রেফতার
- গ্রাফিক নভেল ‘মুজিব’ শিশু-কিশোরদের শেখাবে দেশের প্রতি ভালোবাসা
- টাঙ্গাইলে জনপ্রিয় তারকা জুটি নাঈম-শাবনাজ টিকা নিলেন
- আল জাজিরার রিপোর্টে শক্তিশালী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
- ঘরে বসেই জমির খাজনা পরিশোধ: ভূমিমন্ত্রী
- মাছের ভ্যাকসিন উদ্ভাবন করলো সিকৃবি!
- ৪ ফেব্রুয়ারির মধ্যে সারাদেশের মাদ্রাসা খোলার প্রস্তুতির নির্দেশ
- টাঙ্গাইলে এনআরবিসি ব্যাংকের উদ্যোগে শীতবস্ত্র বিতরণ
- মির্জাপুরে পৌর নির্বাচনে মেয়র প্রার্থী সালমার পক্ষে বিশাল শো-ডাউন
- ভূঞাপুরে বিপুল ভোটের ব্যবধানে নৌকার বিশাল জয়
- টাঙ্গাইলে শিশু অপহরণ ও হত্যা মামলায় দুই জনের যাবতজীবন
