• শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৬ ১৪৩১

  • || ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

আজকের টাঙ্গাইল

শতভাগ বিদ্যুতের আওতায় টাঙ্গাইল

আজকের টাঙ্গাইল

প্রকাশিত: ২১ ডিসেম্বর ২০২০  

চলতি বছর টাঙ্গাইল পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির আওতাধীন আটটি উপজেলা শতভাগ বিদ্যুতায়ন করা হয়েছে। প্রায় দশ হাজার কিলোমিটার সঞ্চালন লাইনের মাধ্যমে অন্তত ২২ লাখ মানুষ বিদ্যুৎ সুবিধা ভোগ করছে। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে সরকারের ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ সেবা পৌঁছে দেয়ার লক্ষ্যে এই সফলতা অর্জিত হয়েছে বলে জানিয়েছে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি কর্তৃপক্ষ।

জেলা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি সূত্রে জানা যায়, ১৯৮০ সালে প্রতিষ্ঠিত টাঙ্গাইল পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির অধীনে জেলার সাতটি উপজেলাসহ সিরাজগঞ্জের একটি উপজেলা রয়েছে। উপজেলাগুলো হচ্ছে টাঙ্গাইল সদর, বাসাইল, নাগরপুর, দেলদুয়ার, মির্জাপুর, কালিহাতী, সখীপুর এবং সিরাজগঞ্জের চৌহালী উপজেলার অংশবিশেষ।

এসব উপজেলায় প্রায় দশ হাজার কিলোমিটার সঞ্চালন লাইন নির্মাণ করা হয়েছে। এর মধ্যে পিডিবি থেকে অধিগ্রহণ করা নয়শ’ কিলোমিটার সঞ্চালন লাইনও রয়েছে।  আটটি উপজেলার ৮৩টি ইউনিয়নের এক হাজার ৫৮৪টি গ্রামের সবকটিতেই বিদ্যুৎ সুবিধা পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। এতে পাঁচ লাখ ১০ হাজার গ্রাহক বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় এসেছে।

এদের মধ্যে আবাসিক, বাণিজ্যিক ও সোলার সব মিলিয়ে সুবিধা ভোগ করছে ২২ লাখ ২৫ হাজার মানুষ। চারটি এরিয়া অফিস, পাঁচটি জোনাল অফিস, ১৮টি উপকেন্দ্রের ও ২৭টি অভিযোগ কেন্দ্রের মাধ্যমে গ্রাহকদের বিদ্যুৎ সুবিধা নিশ্চিত করা হচ্ছে।তবে জেলার ভূঞাপুর, গোপালপুর, ঘাটাইল, মধুপুর ও ধনবাড়ী উপজেলা ময়মনসিংহ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির অধীনে পরিচালিত হয়ে থাকে।
 
চলতি ২০২০-২১ অর্থ বছরে প্রায় ১২শ’ কিলোমিটার লাইন নির্মাণের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে।সদর উপজেলার বেলতা গ্রামের প্রতিবন্ধী নুরুল ইসলাম বলেন, আবেদনের পর একদিনের মধ্যে আমার বাড়িতে বীনামূল্যে বিদ্যুতের লাইন দেওয়া হয়েছে। অথচ এতদিন অনেকের কাছে শুনেছি বিদ্যুৎ পেতে নাকি মাসের পর মাস ঘুরতে হয়। অনেক টাকা খরচ করতে হয়।

বাসাইল উপজেলার কাউলজানী গ্রামের দরিদ্র কৃষক আব্দুল হাই বলেন, আমার বাড়ি থেকে বিদ্যুৎ লাইন কিছুটা দূরে ছিলো। বিদ্যুৎ পাবো কিনা এই আশঙ্কা নিয়ে আবেদন করেছিলাম। হঠাৎ একদিন দেখি বিদ্যুতের পোল এনে আমার বাড়ির পাশে স্থাপনা করা হচ্ছে। পরে খুব সহজেই আমি সংযোগ পেয়ে যাই।

ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স আলভি এন্টারপ্রাইজের সত্ত্বাধিকারী আব্দুল্লাহ আসিফ খান শেলী বলেন, বঙ্গবন্ধুর জন্মশত বার্ষিকী উপলক্ষে টাঙ্গাইলকে শতভাগ বিদ্যুতায়নের আওতায় আনতে আমরা দিন-রাত নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছি। নতুন লাইন নির্মাণ, পুরনো লাইন মেরামতসহ গ্রাহকের সর্বোচ্চ সুবিধা নিশ্চিত করতে আমরা বদ্ধপরিকর।
 
টাঙ্গাইল পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির এজিএম (গ্রাহক সেবা) আমিনুল ইসলাম আনু বলেন, টাঙ্গাইল এমন একটি জেলা যেখানে একদিকে পাহাড় ও জঙ্গলবেষ্টিত। অপরদিকে যমুনা, ধলেশ্বরীসহ কয়েকটি নদীর বিস্তীর্ণ চরাঞ্চল। গ্রাহক সেবার দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকেই আমি চেষ্টা করেছি প্রতিটি গ্রামের সকল গ্রাহক যেন দ্রুত ও হয়রানিমুক্ত বিদ্যুৎ সেবা পেতে পারে। সেই লক্ষ্যে প্রত্যন্ত পাহাড় ও চরাঞ্চলেও বিদ্যুৎ সেবা পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।

আবেদনের একদিনের মধ্যে সংযোগ দেওয়া হয়েছে অসংখ্য গ্রাহককে। বীনামূল্যে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয়েছে অনেক হতদরিদ্র, প্রতিবন্ধী পরিবারকে।

টাঙ্গাইল পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার রাম শংকর রায় বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ‘শেখ হাসিনার উদ্যোগ ‘ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ’ এই স্লোগানে বর্তমান সরকারের ভিশন বাস্তবায়ন ও ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে বিদ্যুৎ বিভাগকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান জনাব মেজর জেনারেল মঈন উদ্দিন (অব.) নির্দেশনা অনুযায়ী বঙ্গবন্ধুর জন্মশত বার্ষিকী উপলক্ষে টাঙ্গাইল পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির অধীনে সকল উপজেলার প্রতিটি গ্রামকে বিদ্যুতের আলোয় আলোকিত করা হয়েছে।

আজকের টাঙ্গাইল
আজকের টাঙ্গাইল